যুগভেরী ডেস্ক ::: দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৩৭তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণের হার কমেছে। পাশাপাশি বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ২৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৯০৫ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত ২৬ অক্টোবর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪২২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২২ হাজার ৭০৩ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ১৪১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৬০৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭৭ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৪ হাজার ২৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৬৮১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৬ হাজার ৩৬৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৭ দশমিক ৫২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৩১ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৪৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২৮৩টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১২টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ১৪১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ২৬৮ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১২৭টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৩৮৬ দশমিক শূন্য ৭ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৮৯৪ দশমিক ৮৪ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৬৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ১৯ জনের মধ্যে পুরুষ ১২ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৫৪১ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩৬৪ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৯১ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ০৯ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৮ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১১ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯ জন; যা দশমিক ৪৯ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪৬ জন; যা দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৩৪ জন; যা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩২৬ জন; যা ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৩২ জন; যা ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৫৬৩ জন; যা ২৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৭৫ জন; যা ৫২ দশমিক ০৭ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগ ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১৩ জন, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে ২ জন করে এবং রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৬৬ জন; যা ৫১ দশমিক ৯২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ১৭১ জন; যা ১৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৭১ জন; যা ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৬৮ জন; যা ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২০০ জন; যা ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৪৫ জন; যা ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৬২ জন; যা ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২২ জন; যা ২ দশমিক ০৭ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৬৯৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৮২১টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১৪টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৭২ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪২টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৮২৫টি, ভর্তিকৃত রোগী ১১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৭০৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি।
সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ২৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৩০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৭৩৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩২টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৬০৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৩৪৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ৯ হাজার ২৬৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৬৪টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬৭ জন এবং খালি আছে ৩৯৭টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯০টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫৭৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৬৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড়া পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd Gi CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৪২২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৮৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪২ জন, রংপুর বিভাগে ২৫ জন, খুলনা বিভাগে ৩৮ জন, বরিশাল বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৬ জন, সিলেট বিভাগে ৩৮ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৭৩ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১২৯ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮৫ হাজার ৯৫৭ জন, আর ছাড়া পেয়েছেন ৭৩ হাজার ৮৬২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৯৫ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬৬৬ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮৪৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯১৯ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৮৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৪৩৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ১১৭ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১১ লাখ ৯ হাজার ৫৬ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৮৩০টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ৩৫ হাজার ৫৭৩টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৮টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪১ হাজার ৫৭১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২২ লাখ ২৯ হাজার ২৭৪টি।
এ পর্যন্ত কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৮ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ লাখ ৮০ হাজার ১২৬ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ১৭৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫১ হাজার ৫০৬ জন এবং ১১ লাখ ৭১ হাজার ২৫৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা