• ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

পুরষ্কারের লোভে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে রহিম

Daily Jugabheri
প্রকাশিত নভেম্বর ১১, ২০২০
পুরষ্কারের লোভে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে রহিম

পুলিশের লোভনীয় ফাঁদে পড়ে আশ্রয়দাতা গোপালের
মাধ্যমে যেভাবে আটক করা হয় আকবরকে
নিজাম উদ্দিন, কানাইঘাট থেকেঃ পুলিশের লোভনীয় ফাঁদে পড়ে আশ্রয়দাতা গোপাল বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াকে কার চালক অভিজিৎ এর মাধ্যমে গৌহাটিতে পৌঁছে দেয়ার জন্য পুলিশের কথামতো খাসিয়াদের হাতে আকবরকে তুলে দেয়া হয়। তারপর উয়েস খাসিয়া সহ তার সঙ্গীরা কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দনা খাসিয়াদের মাধ্যমে আকবরকে কানাইঘাটের একেবারে সীমান্তবর্তী ভারতের ত্রিগাঙ্গা নামক পাহাড়ি ঝরনার কাছে নিয়ে এসে পুলিশ কর্তৃক পাঠানো সোর্স আব্দুর রহিমের মাধ্যমে প্রায় দু’শগজ এলাকা অতিক্রম করে আকবরকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসার পর সীমান্তের ১৩৩৫নং মেইন পিলারের পাশে আগে থাকা অবস্থানরত পুলিশের সোর্স শাহাব উদ্দিন ও সালেহ আহমদের কাছে আকবরকে রহিম পৌঁছে দেয়। তারপর সীমান্ত এলাকায় অবস্থানরত কানাইঘাট থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ও জকিগঞ্জ থানার ওসি আকবরকে গ্রেফতার করেন সরেজমিনে অনুসন্ধান ও বিভিন্ন সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশের চৌকশ নেতৃত্বে ভারতে তাদের সোর্স লাগিয়ে আকবরকে খাসিয়াদের মাধ্যমে আটক করে গ্রেফতার করা হলেও সেখান থেকে শুধুমাত্র আকবরকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসা কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকার দনা গ্রামের আব্দুর রহিম সে সহ তার আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে আকবরকে আটক করা হয়েছে, এতে পুলিশের কোন ভূমিকা ছিল না বলে দাবী করে কিছু গণমাধ্যমে বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য প্রদান করায় জনমনে নানা ধরনের গুঞ্জন দেখা দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রহিম আকবরকে আটকের আগের দিন রবিবার রাত থেকে সে কানাইঘাট থানা পুলিশের সাথে ছিল এবং বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সাথে রহিম সহ শাহাব উদ্দিন ও সালেহও ছিল। আকবরকে উয়েস খাসিয়ার মাধ্যমে ভারতের দনা বস্তিতে নিয়ে আসার পর পুলিশ নিশ্চিত হয়ে তাদের গাড়ীতে করে আব্দুর রহিম, শাহাব উদ্দিন ও সালেহ আহমদকে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ১৩৩৫নং মেইন পিলারের অদূরে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে আব্দুর রহিম ৪/৫জনকে সাথে নিয়ে ভারতের চোরাই পথে অনুপ্রবেশ করে শুধুমাত্র আগে থেকে খাসিয়াদের হাতে বাঁধা অবস্থায় আটক আকবরকে নিয়ে আসার পর বিভিন্ন জনের প্ররোচনায় পুরষ্কার পাওয়ার লোভে এখন আব্দুর রহিম নানা ভাবে আকবরকে গ্রেফতার নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে সীমান্তবর্তী এলাকার অনেকে জানিয়েছেন।
কিন্তু আকবরকে কিভাবে আটক করা হয়েছে এ নিয়ে সরেমজিন অনুসন্ধান ও বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া সঠিক তথ্যের মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে আসল ঘটনা। বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায়, রায়হান হত্যার পর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে আকবর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরে চলে যায়। সেখান থেকে চলে যায় আসাম প্রদেশের শীলচর শহরের অদূরে অবস্থিত গুমড়া এলাকায় এবং আশ্রয় নেয় গোপাল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে। সেখান থেকে গোপালের মাধ্যমে আসামের রাজধানী গোয়াহাটিতে নিরাপদে বসবাসের জন্য এসআই আকবর সিন্ধান্ত নেয়।
অপরদিকে রায়হান হত্যার পর আকবর ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে গেছে এমন সংবাদ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তার অবস্থান নির্ণয় করার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে সিলেটের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা তৎপর হয়ে উঠেন। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আকবরের হোয়াটসঅ্যাপ এ কথোপকোথনের রেকর্ড যাচাই করে পুলিশ জানতে পারে এসআই আকবর শীলচর শহরের গুমড়া এলাকায় গোপাল নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে অবস্থান করছে। আশ্রয়দাতা গোপালের মাধ্যমে এসআই আকবরকে আটক করার জন্য পুলিশ ভারতে কয়েকজন বিশ^স্থ সোর্স পিছনে লাগিয়ে দেয়। এতে আকবরকে ধরতে মোটা অংকের টাকা সোর্সদের পিছনে খরছ করে পুলিশ। এদিকে আকবর তাকে গোয়াহাটিতে পৌঁছে দেয়ার জন্য গোপালের সাথে এক লক্ষ টাকার চুক্তি করে এবং সেই অনুযায়ী আশ্রয়দাতা গোপাল দিনক্ষণ ঠিক করে গত রবিবার রাতে আকবরকে গোয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অভিজিৎ নামের এক চালকের এলট্রো কার ভাড়া করে। কিন্তু তারা পুলিশের পরিকল্পনা অনুযায়ী আকবরকে গোয়াহাটিতে না নিয়ে কৌশলে মেঘালয়ের সীমান্তবর্তী সেনা রোড দিয়ে উখিয়াং পেট্রোলপাম্পের কাছে রবিবার রাত ৩টায় পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছানোর পর ভারতের সোর্সরা পুলিশকে জানায় আকবরকে পেট্রোলপাম্পের পাশে নিয়ে আসা হয়েছে, আপনাদের লোকজন পাঠান তাদের হাতে আমরা আকবরকে তুলে দিব।
তখন কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম আসামী আকবরকে লোভা সীমান্ত দিয়ে উদ্ধারের জন্য লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির এক জনপ্রতিনিধি সহ কানাইঘাটের বাসিন্দা ভারতে মাঝে মধ্যে যাতায়াতকারী খাসিয়াদের সাথে পরিচিত সালেহ আহমদ ও শাহাব উদ্দিনের সহযোগিতা চায়। এতে শাহাব উদ্দিন ও সালেহ আহমদ দনা সীমান্তবর্তী এলাকার রহিম উদ্দিনকেও সঙ্গীয় করে নেয়। তারা রবিবার থেকে কানাইঘাট থানা পুলিশের সাথে সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন। একপর্যায়ে রবিবার রাত ২টার দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মাধ্যমে পুলিশের কথামতো বিশ^স্থ কয়েকজন গারো লোকদের উখিয়াং পেট্রোলপাম্পের উদ্দেশ্যে পাঠান। কিন্তু মধ্যে পথে কুলিয়াং পৌঁছার পর সেখানে যোগাযোগ বিচ্ছিহ্ন থাকার কারনে পাঠানো গারো দলটি আকবরের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। পরে আকবরকে সেখান থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ সালেহ আহমদ ও শাহাব উদ্দিনকে বলে। এতে সালেহ আহমদ ও শাহাব উদ্দিন কুলিয়াং বস্তির উয়েস নামের এক খাসিয়া যুবকের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। তাদের কথামতে উয়েস সহ কয়েকজন খাসিয়ারা উখিয়াং পেট্রোলপাম্প নামক স্থানে পৌঁছায় এবং তারা রবিবার ভোররাতে আকবরকে গোপালের কাছ থেকে বুঝে নেয়। এরপর উয়েস বাংলাদেশে অবস্থানরত সালেহ আহমদ ও শাহাব উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে। সেই যোগাযোগ অনুযায়ী সোমবার সকাল ৮টায় বহিস্কৃত এসআই আকবরকে ভারতের দনা খাসিয়া বস্তিতে নিয়ে আসে উয়েস সহ বেশ কয়েকজন খাসিয়া। তখন কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ থানার ওসি সহ পুলিশের একটি দল দনা সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নেয় এবং আকবরকে বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে আসার জন্য তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। এতে সালেহ আহমদ, শাহাব উদ্দিন ও দনা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা রহিম উদ্দিন বাংলাদেশ সীমান্তের ১৩৩৫নং পীলারের কাছে যায়। পরে দনা খাসিয়া বস্তি থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে আকবরকে নিয়ে আসার জন্য রহিম উদ্দিন সহ ৪/৫জনকে দনা খাসিয়া বস্তিতে পাঠানো হয়। সেখানে উয়েস সহ ভারতের দনা বস্তির খাসিয়াদের কাছ থেকে আকবরকে বুঝে নেয় রহিম উদ্দিন সহ কয়েকজন যুবক। ঐ সময় খাসিয়ারা আকবরের বেশ কয়েকটি ভিডিও ধারন করে, যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে শুনা যায়, রহিম উদ্দিন এক খাসিয়া ব্যক্তির মোবাইল থেকে সীমান্তে অবস্থানরত সালেহ আহমদকে ফোনে জানান, ওসি স্যারকে বলেন আকবর আমার কাছে আছে। ভিডিওতে রহিম খাসিয়াদের বলে, কানাইঘাট থানার ওসি ও নানকা চেয়ারম্যান আমাকে এখানে পাঠিয়েছে। এরপর সেখান থেকে আকবরকে বাংলাদেশের দনা সীমান্তের ১৩৩৫নং পীলারের পাশে অবস্থানরত শাহাব উদ্দিন ও সালেহ আহমদের কাছে নিয়ে আসে রহিম উদ্দিন। সেখানে তারা আকবরকে সাথে নিয়ে একটি ছবি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দেন। পরে সোমবার দুপুর ১টার দিকে দনা সীমান্তের ভিতরে আকবরকে নিয়ে আসলে সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থানরাত কানাইঘাট থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ও জকিগঞ্জ থানার ওসি নাসির আহমদ, চেয়ারম্যান জেমস্ লিও ফারগুসন নানকার উপস্থিতিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
কিন্তু বরখাস্তকৃত এসআই আকবরকে ভারতে আটক করে কৌশলে বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ সোর্সের মাধ্যমে প্রায় ১৫/১৬ লক্ষ টাকার মতো টাকা ব্যয় করেছে বলে জানা গেছে। এতে সফল হয় পুলিশের সমস্ত পরিকল্পনা। শুধুমাত্র খাসিয়াদের কাছ থেকে আকবরকে বাংলাদেশের দনা সীমান্তে নিয়ে আসে রহিম উদ্দিন। কিন্তু এখন রহিম উদ্দিন কিছু গণমাধ্যমে বলছে সে নাকি খাসিয়াদের কাছ থেকে তার আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে আকবরকে আটক করেছে। এতে পুলিশের কোন হাত নেই। তার এমন হাস্যকর কথায় জনসাধারণের মধ্যে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সচেতন মহল জানিয়েছেন যেখানে রহিম নিজে একটি ভিডিওতে সালেহকে বলছে ওসি স্যারকে বলো আমি আকবরকে হাতে পেয়েছি। এখন সে নানা ধরনের কথাবার্তা বলে যাচ্ছে।
রহিম উদ্দিনের এমন বক্তব্যের রহস্য জানতে চাইলে বেরিয়ে আসে নানা পুরষ্কারের লোভনীয় কাহিনী। সরেজমিনে মঙ্গলবার দিনভর দনা সীমান্ত এলাকা সহ তার বাড়িতে গেলে তাকে খোঁজে পাওয়া যায়নি, এমনকি তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার সাথে থাকা অপর দুইজন শাহাব উদ্দিন ও সালেহ আহমদ জানিয়েছেন, গত রবিবার রাত থেকে তারা সহ রহিম উদ্দিন একসাথে কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ থানার ওসির সাথে ছিলেন। কিন্তু সিলেটের রায়হান হত্যার আসামী আকবর গ্রেফতারের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি, শুধু তাদের বলা হয়েছে ভারত থেকে একজন লোককে নিয়ে আসতে হবে। সেই অনুযায়ী থানা পুলিশের দিকনির্দেশনা মতে কানাইঘাটের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় গিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দনা সীমান্তে আকবরকে নিয়ে আসা হয়। এতে আমরা সহ রহিম উদ্দিন পুলিশকে শুধু সহযোগিতা করেছি, কিন্তু রহিম উদ্দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কথা বলেছেন তা নিঃসন্দেহে বিভ্রান্তকর। এটা লোভনীয় ছাড়া আর কিছু নয়। এ প্রতিবেদনটির প্রমাণ স্বরূপ সম্পূর্ণ ভিডিও তথ্য প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
এদিকে রহিম উদ্দিনের মিথ্যাচারের বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা অনুসন্ধান করলে রবিবার থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রহিম উদ্দিনের অবস্থানের কয়েকটি সিসি টিভির ফুটেজ ও ছবি সংগ্রহ করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায় রহিম উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন ও সালেহ আহমদ রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তারা কানাইঘাট থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ও জকিগঞ্জ থানার ওসি নাসির আহমদের সাথে কানাইঘাটের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরছেন।
রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামী বহিস্কৃত এস.আই আকবরকে গ্রেফতারের বিষয়ে থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম এর সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম স্যারের চৌকশ নেতৃত্বে নানা ধরনের পন্থা ও কৌশল অবলম্বন করে আকবরকে আটক করেছে পুলিশ। এ ক্ষেত্রে আমরা অনেকের সহযোগিতা নিয়েছি। আকবরকে আটকের বিষয়ে আইনি জটিলতা থাকার কারনে এর বাইরে কিছু বলা যাচ্ছে না। আকবরকে গ্রেফতার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রহিমের মিথ্যাচার নিয়ে যারা পুলিশের অবদানকে খাটো করে নানা ধরনের বাজে পোস্ট দিচ্ছেন তাদের আমি বলবো রহিম যে আমাদের সাথে ছিল সেধরনের কয়েকটি ভিডিও নিশ্চয় আপনারা দেখেছেন, সে সংক্রান্ত অনেক ফোন রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। আশা করি যারা আকবরকে গ্রেফতার নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন