• ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৮ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

মুজিববর্ষে রোপিত বৃক্ষ দেশের পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে : পরিবশ মন্ত্রী

Daily Jugabheri
প্রকাশিত নভেম্বর ১২, ২০২০
মুজিববর্ষে রোপিত বৃক্ষ দেশের পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে : পরিবশ মন্ত্রী
মুজিববর্ষে রোপিত বৃক্ষ দেশের পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে : পরিবশ মন্ত্রী
লিটন শরীফ, বড়লেখা{ মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন বলেছেন, মুজিববর্ষের কর্মসূচি-সহ গত এক বছরে বন বিভাগের মাধ্যমে দেশে মোট ৮ কোটি ৬১ লক্ষ ৬২ হাজার বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। এসকল বৃক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন রোধ, কার্বন নিঃসরণ প্রশমণ, অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি, খাদ্য-পুষ্টিসহ দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন বৃদ্ধি সহ দেশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, তথ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক কোটি বৃক্ষের চারা বিতরণ ও রোপণ কর্মসূচি সফলভাবে সম্পাদন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরিবেশ, বন ও জলবাযু পরিবর্তন মন্ত্রণালযের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, পরিবেশ, বন ও জলবাযু পরিবর্তন মন্ত্রণালযের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ড.  মো: বিল্লাল হোসেন এবং প্রধান বন সংরক্ষক(চলতি দায়িত্ব) মো: আমীর হোসাইন চৌধুরী এসময় উপস্থিত ছিলেন ।
মন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষের এক কোটি চারা রোপণের পাশাপাশি চলতি বছরে বন অধিদপ্তর কর্তৃক বিভিন্ন প্রকল্প ও রাজস্ব বাজেটের আওতায় ১৪,৬৬৯ হেক্টর ব্লক বাগান, ১৬১০ কিলোমিটার স্ট্রিপ বাগান এবং উপকূলীয় এলাকায় ১০,০৭৭ হেক্টর ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজনের মাধ্যমে ৭ কোটি ৪৬ লাখ  ৮২ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। এছাড়াও জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে সংসদ সদস্যগণের মাধ্যমে মোট ১৪ লক্ষ ৮০ হাজারটি বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষের চারা সারাদেশে রোপণের জন্য বিতরণ করা হয়েছে। এসকল গাছের সঠিক পরিচর্যা করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সত্বেও যথাসময়ে আমরা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ জুলাই গণভবণ প্রাঙ্গণে ১ কোটি গাছের চারা রোপণের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।এর পর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে পরিকল্পনামতো সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণের সহযোগিতায় এক কোটি চারা বিতরণ ও রোপণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। এ এক কোটি চারা ৩৭,৫৯৮টি প্রতিষ্ঠান/সংস্থা/ব্যক্তির মাধ্যমে বিতরণ ও রোপণ করা হয়। প্রতিটি জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে কোথায়, কী পরিমাণ বৃক্ষের চারা কখন, কিভাবে, কাদের মাধ্যমে বিতরণ এবং রোপণ করা হয়েছে, তার বিস্তারিত ডাটাবেজ বন বিভাগে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
বন মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় ২০,৩২৫টি করে ৪৯২ টি উপজেলায় মোট ১ কোটি বিভিন্ন প্রজাতির বনজ, ফলদ, ঔষধি ও শোভাবর্ধনকারী বৃক্ষের চারা বন বিভাগের নার্সারীসমূহে উত্তোলন করে রোপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়। যে সমস্ত উপজেলায় বন বিভাগের নার্সারি নেই, সেক্ষেত্রে পাশ্ববর্তী উপজেলায় এ চারা উত্তোলন করা হয়। এলাকাভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী চারার প্রজাতি নির্বাচন করা হয় এবং ৫০% এর অধিক ফলের চারা উত্তোলন করা হয়। উক্ত এক কোটি চারার মধ্যে ৪০টির অধিক বৃক্ষপ্রজাতি রয়েছে। তন্মধ্যে চিকরাশি, চাপালিশ, কড়ই, মেহগনি, কদম, গামারি, জারুল, বকুল, সোনালু, হিজল, মহুয়া, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া ইত্যাদি বনজ প্রজাতি রয়েছে। এছাড়া জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, আমড়া, জলপাই, কাঠ বাদাম, বেল, তেঁতুল, চালতা, লটকন ইত্যাদি ফলদ প্রজাতি ও আমলকী, হরিতকী, বহেরা, অর্জুন ইত্যাদি ঔষধি প্রজাতির চারা উল্লেখযোগ্য।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় বৃক্ষরোপণ অভিযান এক নতুন মাত্রায় গতি লাভ করেছে। বনবিভাগ রোপিত চারাসমূহ বৃক্ষে পরিণত হলে আগামী ৫ বছর জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপজেলাভিত্তিক বৃক্ষ আচ্ছাদন পরিমাপের উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। গাছের বেড়, উচ্চতা ও এতদঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য হিসাব প্রয়োগ করে বৃক্ষে জমাকৃত কার্বন পরিমাপ করারও পরিকল্পনা রয়েছে। এতদ্বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা মন্ত্রণালয় থেকে বন অধিদপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করেছি।
বন মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগ একটি স্মারক নিদর্শন হয়ে থাকবে। বৃক্ষ, পরিবেশ এবং প্রতিবেশ নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহ এবং করোনা মহামারীর মধ্যেও নিজ হাতে বৃক্ষের চারা রোপণ করে উৎসাহ দেয়ায় তাঁর প্রতি আমাদের সীমাহীন কৃতজ্ঞতা এবং আন্তরিক ধন্যবাদ রইলো। এ কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে সহযোগিতাকারীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মন্ত্রী দেশের বন ও বন্যপ্রাণী তথা পরিবেশ, প্রতিবেশ রক্ষায় তাঁদের এমন আন্তরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরাধিকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এখন আমাদের সকলের সাংবিধানিক
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরাধিকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এখন আমাদের সকলের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সকলে সম্মিলিতভাবে প্রকৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে কাজ করলেই আমরা দেশের পরিবেশ উন্নত করতে পারবো।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বন মন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের বৃক্ষাচ্ছাদিত ভূমির পরিমান ২৫ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বনের গাছ রক্ষায় সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।  ইটভাটা সম্পর্কিত অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সকল অবৈধ ইটাভাটার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।  ইট পোড়ানো নিরুৎসাহিত করতে সকল সরকারি কাজে ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে।
সংবাদটি শেয়ার করুন