৯৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা
ছাতক প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহা সচিব মাওলানা মামুনুল হককে স্ব-স্ত্রীক আটকের ঘটনায় ছাতকে তান্ডব চালিয়েছে মামুনুল হকের অনুসারীরা। উত্তেজিত সমর্থকরা লাঠি-সোটা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে থানায় হামলা চালায়। এসময় তাদের তান্ডবে গোঠা শহর জুড়ে এক বিভিশিকাময় পরিস্থিতর সৃষ্টি হয়। মুহুর্তের মধ্যে শহরের সকল দোকানপাঠ ও বিপনীবিতান বন্ধ হয়ে যায়। শহরে আসা লোকজন দিক-বেদিক ছুটাছটি করতে থাকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। শনিবার রাত প্রায় ৯ টায় ছাতক শহরে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় ৫পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ ব্যক্তি আহত হয়। থানার গোলঘরসহ আরো ৪টি দোকানকোটা ভাংচুর করে হামলাকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ দেড় শতাধিক রাবার বুলেট ও টিআর সেল নিক্ষপ করে। হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৯ জনকে আটক করেছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী, ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান, সিনিয়র এএসপি ছাতক সার্কেল বিল্লাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শহরে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। এ ঘটনায় এসআই আনোয়ার মিয়া বাদী হয়ে ৯৪জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ৯০০ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি পুলিশ এসল্ট মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হেফাজতের কেন্দ্রিয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক রিসোর্টে আটকের খবরে তার অনসারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যায় বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ড-খন্ড বিক্ষোভ মিছিল শহরের আসতে থাকে। লাঠি-সোঠা নিয়ে শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে বিক্ষোভ প্রদর্শন করার সময় মিছিলকারীরা ট্রাফিক পয়েন্টে দায়িত্বরত পুলিশকে ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে কর্মরত পুলিশ পয়েন্ট সংলগ্ন একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। এ সময় মিছিলকারীরা ওই দোকানে আশ্রয় নেয়া পুলিশের হামলার উদ্দেশ্যে জমির উদ্দিনের আল আমিন ষ্টোর, বিশ্বজিত ঘোষের রাধারানী এন্টারপ্রাইজ, রতনমনি ঘোষের সুশিলা ষ্টোর ও রাজন ঘোষের এনআর ফার্মায় হামলা ও ভাংচুর চালায়। পরে বিক্ষোব্ধ হামলাকারীরা মিছিল সহকারে থানায় হামলা চালায়। হামলাকারীরা থানা পুলিশকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেলে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিআরসেল ছুঁরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে। পুলিশ সূত্র মতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে তারা ১০৮ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ২৬ রাউন্ড টিআরসেল নিক্ষেপ করেছে । মিছিলকারীদের প্রায় আধঘন্টার তান্ডবে থানার গোলঘর ভাংচুরসহ পুলিশ সদস্য রাকিব, দিলসাদ, রবিউল আলম, সাইদুল ও সুবল দাস, পথচারী জুয়েল, সুজন মিয়া, দোকান কর্মচারী আলী আহমদসহ অন্তত ১৫ ব্যক্তি আহত হয়। আহতদের ছাতক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জয়নাল আবেদীন(২৮), রাজন আহমদ(২৬), একরাম হোসেন(২২), সামছুদ্দিন(২৩), সুমন আহমদ(২০), আলী হোসেন(২৮), মোস্তাফিজুর রহমান ফাহিম(১৯), জনি আহমদ(১৯) ও আবুল হোসেন(৩০)কে আটক করে পুলিশ। এ ব্যাপারে হেফাজত ইসলামের উপজেলা আমির মাওলানা আব্দুল হান্নান জানান, এ হামলার ঘটনার সাথে হেফাজতের কোন সম্পৃক্ততা নেই। ছাতক থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন ৯ জন আটকের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, বিনা উসকানীতে আকস্মিক পুলিশের উপর হামলা করেছে মামুনুল হকের সমর্থকরা। ঘটনার সময় থানার অধিকাংশ পুলিশ কর্মকর্তা গোবিন্দগঞ্জে খেলাফত কেন্দ্রিয় আমির মাওলানা শফিক উদ্দিনের যানাজায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক, ছাতক পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা