জামালগঞ্জ প্রতিনিধি :::
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় মাঠে বাম্পার ফসলের হাতছানি। কাঁচাপাকা সোনা রঙের মনজুড়ানো ধানের শিষ হাওয়ায় দোল খাচ্ছে। এ সপ্তাহের মাঝেই পুরোদমে শুরু হবে ধান কাটার কাজ। কিন্তু হাসি নেই বোরো চাষীদের মুখে। কারণ গত বছরের মতো করোনা সঙ্কটে এবারও মৌসুমী কৃষি শ্রমিকরা পরিবহন সঙ্কটের কারণে আসতে পারছে না। তাই বিশাল হাওরের ধান কেটে কিভাবে ঘরে তুলবেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে চাষীরা।
জেলার অন্যতম হাওর উপজেলা পাগনা হাওরের বোরো চাষী মো. নূরুল ইসলাম বলেন, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে ইতিমধ্যে পাকা ধান কাটার জন্য এ অঞ্চলের বোরো ধান কাটতে দেশের দূরদূরান্ত থেকে কয়েক হাজার মৌসুমী কৃষি শ্রমিকের আসার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া এখানকার হাওরাঞ্চলের সরবরাহকৃত হারবেস্টার ও রিবারের সংখ্যা খুবই নগণ্য। এগুলো ধান কাটানো দামও বেশি নিচ্ছেন হারবেস্টারের মালিকেরা। এমন পরিস্থিতিতে বোরো ধান কাটতে বহিরাগত মৌসুমী কৃষি শ্রমিক আসার বিষয়টি অবিলম্বে নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকারের প্রতি আহবান জানান।
জানা গেছে, আগাম পাহাড়ী ঢল ও বন্যা রোধে এবারও উপজেলার ৯টি ছোট-বড় হাওরের ৯৩ কিলোমিটার বাঁধের কাজ ৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যেই শেষ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার মো. রেজাউল কবির জানান, হাওরাঞ্চলের বোরো ফসল আগামী পাহাড়ী ঢল ও বন্যার হাত থেকে রক্ষায় ইতিমধ্যে ৯৩ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। তাই বড় ধরনের কোন সমস্যা না হলে ফসল হানির সম্ভাবনা নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাশরেফুল আলম জানান, এবার খাদ্য উদ্বৃত্ত জামালগঞ্জের হাওরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৯৭ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন চাল এবং ২৪ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, কৃষি শ্রমিক নির্ভরতা কমাতে ও কৃষিতে আধুনিকায়নের জন্য কৃষি বাস্তবায়নের লক্ষে ৭০ ভাগ ভর্তুকি দিয়ে গত বছরের ন্যায় এবারও কৃষিবান্ধব সরকার ৭০ ভাগ ভর্তুকি মূল্যে কম্ভাইন্ড হারবেস্টর, রিপার, রাইস ট্রান্সপ্লান্টারসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে। এর আওতায় জামালগঞ্জে ১০টি কম্পাইন্ড হারবেস্টর ও ৫টি রিপার এ বৎসর কৃষকদের মাঝে দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, গত বছরের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবারও যাতে বোরো ধান কাটতে বহিরাগত মৌসুমী শ্রমিক হাওরাঞ্চলে প্রবেশ করে ধান কাটতে পারে এবং পরিবহন সুবিধা পায় সে জন্য জরুরীভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা