সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ::::
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যুর পাশাপাশি একসাথে দরিদ্র এক বর্গাচাষীর তিনটি গাভিসহ চারটি অবলা প্রাণির (গাভি) মৃত্যু হয়েছে। এতে চরম আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন দুইজন কৃষক। চারটি গরুর বাজার দাম প্রায় দুই লাখ টাকা হবে বলে জানা গেছে। আজ বুধবার বিকাল ৫ টার দিকে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সাকিতপুর গ্রামের পাশের হাওরে এই ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে চারটি গরু মারা গেছে সাকিতপুর গ্রামের দরিদ্র বর্গাচাষী আ. ছুরত মিয়া ও একই গ্রামের মুক্তার মিয়া সর্দারের। ছুরত মিয়ার তিনটি গাভি ও মুক্তার মিয়া সর্দারের একটি গাভি মারা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাকিতপুর গ্রামের বাসিন্দা করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এওয়ার হোসেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হাওরের বোরো ধান কাটা শেষ হওয়ায় সাকিতপুর গ্রামের কৃষকরা গ্রামের পাশের হাওরে গরু চড়ান। প্রতিদিনের ন্যায় আজ বিকালে গ্রামের পাশের হাওরে সবাই গরু চড়ান। আজ বুধবার বিকালে হঠাৎ করে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। বৃষ্টিপাত বন্ধ পর গ্রামের লোকজন গ্রামের পূর্বপাশের হালুয়া বিলের পশ্চিম পাড়ে ছুরত মিয়ার তিনটি গাভি ও মুক্তার মিয়া সর্দারের একটি গাভি মরা দেখতে পান। এসময় দরিদ্র বর্গাচাষী ছুরত মিয়া কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কারণ তিনি আত্মীয় বাড়িতে থেকে বসবাস করে এই গরুগুলো লালনপালন করছিলেন। তার তিনটি গরুর মধ্যে একটি দুভের গাভি, একটি গর্ভবতী ও একটি ছোট গাভি ছিল। মুক্তার মিয়া সর্দারের গাভিটিও গর্ভবতী ছিল। গর্ভবর্তী দুইটি গাভি কয়েকদিন পরই বাছুর প্রসব করার সময় ছিল। কিন্তু বজ্রপাতে গাভিগুলোর মৃত্যুতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন।
সাকিতপুর গ্রামের বাসিন্দা করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এওয়ার হোসেন বলেন,‘প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার বিকালে গ্রামের সবার গরু-ছাগল হাওরে চড়ানো ছিল। হঠাৎ করে ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে লোকজন ভয়ে দৌঁড়ে বাড়িতে চলে আসে। বৃষ্টি থামার পর গ্রামের লোকজন হাওরে গিয়ে চারটি গাভি মরা দেখতে পায়। ছুরত মিয়ার তিনটি ও মুক্তার মিয়ার একটি গাভি মারা গেছে। ছুরত মিয়া চরম ক্ষতি হয়ে গেল। কারণ তিনি গরিব মানুষ। আত্মীয় বাড়িতে বসবাস করেন এবং অন্যের জমি বর্গা চাষ করেন। ’
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন,‘বজ্রপাতে সাকিতপুর গ্রামের হাওরে চারটি গাভি হাওরে মারা গেছে বলে জানা গেছে। কৃষকদের খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। ’
দিরাই উপজেলা নির্বাহী মাহমুদুর রহমান মামুন, ‘বজ্র্রপাতে গরু মারা যাওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। বিষয়টির খোঁজ নেওয়া হবে এবং কৃষকদের সহায়তার বিষয়ে প্রাণি সম্পদ বিভাগের সাথে কথা বলব।’
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,‘বজ্রপাতে মানুষ মারা গেলে সরকারের পক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হয়। তবে কৃষকদের গরু-ছাগল মারা গেলে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। তবে দিরাইয়ের দরিদ্র কৃষকদের চারটি গাভি মারা যাওয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করব।’
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা