বিন্দু তালুকদার, সুনামগঞ্জ
তিন মাস পর ফের চালু হলো সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তিনটি শুল্কস্টেশন বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পাথর ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে শুধু চুনাপাথর আমদানি শুরু করেছেন। বড়ছড়া ও বাগলী দুটি শুল্কস্টেশন দিয়ে ৩২ টি ট্রাকে ১২ মে. টন করে ৩৮৪ মে. টন চুনাপাথর আসার মাধ্যমে আমদানী কার্যক্রমের শুরু হয়। তবে কয়লা আমদানী এখনও শুরু হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বড়ছড়া শুল্কস্টেশনে ফিতা কেটে চুনাপাথর আমদানীর উদ্বোধন করা হয়। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটন, বড়ছড়া শুল্কস্টেশনের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা আলাউদ্দিন, উপ পরিদর্শক তাজুল ইসলাম, তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের অথ্য সম্পাদক জাহের আলী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের, কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সচিব রাজেশ কুমার তালুকদার, গ্রুপের কার্যকরি সদস্য স্বপন কুমার দাস, ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান প্রমুখ।
জানা যায়, ভারতে করোনা পরিস্থিতি জটিল রুপ ধারনা করা ও লকডাউনোর কারণে গত ১ মে থেকে তাহিরপুরের বড়ছড়া-চারাগাঁও ও বাগলী শুল্কস্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরম বেকায়দায় পড়েন প্রায় ৫শত’ আমদানিকারক। এছাড়াও কর্মহীন হয়ে পড়েন আমদানিকারদের প্রায় ৫/৬ হাজার কর্মচারি ও অন্তত ৪০ হাজার শ্রমিক। এছাড়াও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩টি বন্দরের অর্ধলক্ষ মানুষ। পুনরায় চুনাপাথর আমদানি শুরু হওয়ার খবরে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় শ্রমিকদের মধ্যে খুশির হাওয়া বইছে।
তাহিরপুর চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক বলেন,‘ আমদানী-রপ্তানী বন্ধ থাকায় আমাদের শ্রমিক পরিবারের লোকজন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে। এখনও আমরা খুব কষ্টে আছি। থেকে চুনাপাথর আমদানী শুরু হয়েছে। যদি চুনাপাথর আমদানী নিয়মিত হয় তাহলে আমাদের শ্রমিকরা কাজ করার সুযোগ পাবে।’
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সচিব রাজেশ তালুকদার বলেন,‘ তাহিরপুর সীমান্তের শুল্কস্টেশন দিয়ে আসা চুনাপাথরের মান ভাল, চাহিদাও বেশী। করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে ভারত সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সেদেশের ব্যবসায়ীরা গত ১ মে থেকে তিন মাস চুনাপাথর রপ্তানী বন্ধ রেখেছিল। পুনরায় চুনাপাথর আমদানি শুরু হওয়ায় সবার মুখে হাসি ফিরেছে।’
তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন,‘ তিন মাস চুনাাথর রপ্তানী বন্ধ থাকায় তাহিরপুরের তিনটি বন্দর এবং ভারতের এই দিকের রপ্তানীকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমাদের অনেকের চুনাপাথর ক্রয় করা ছিল। কিন্তু হটাৎ করে ভারতের ব্যবসায়ীরা রপ্তানী বন্ধ রাখায় বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে লোকসানে পড়েছেন। এখন ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর রপ্তানী করলে ব্যবসা-বাণিজ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরবে। ’
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট চুনাপাথর রপ্তানীর বিষয়ে ভারতের মেঘালয় মাইন ওনার্স এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জুলিও সিজার ও সাধারণ সম্পাদক মাইটার মারউইন তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠি দেওয়ার ৪ দিনের মাথায় চুনাপাথর আমদানী শুরু হলো।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা