কানাইঘাট প্রতিনিধি :::
সিলেটের কানাইঘাট-সুরইঘাট সীমান্ত এলাকার কয়েকটি পয়েন্ট ও চতুল লালাখাল সড়ক দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতের প্রতিদিন পাচার করা হচ্ছে শত শত বস্তা মটরশুটি ও মটর ডাল। আর ভারত থেকে আসছে চিনি, পাতার বিড়ি, মাদক দ্রব্য, সিগারেট, চা পাতা, মোবাইল সেট সহ ইলেকট্রনিক্স ও প্রসাধনী পণ্য সামগ্রী। জানা যায় বিগত মাসের উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা ও চোরা চালান প্রতিরোধ কমিটির সভায় অনেকে প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে ভারতে মটর শুটি ও মটর ডাল পাচারের বিষয়টি তুলে ধরে আলোচনা করেন এবং বিজিবি কেন এ ব্যাপারে কঠোর হচ্ছেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভায় উপস্থিত বিজিবির কর্মকর্তাদের সীমান্ত এলাকায় চোরা চালান প্রতিরোধ সহ মটর শুটি ও মটর ডাল পাচার বন্ধে জিরো টলারেন্সের নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জী। এ নিয়ে তিনি কথা বলেন বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে। সীমান্ত এলাকার অনেকে সহ স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছেন প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে ও রাতের বেলায় প্রতিদিন শত শত বস্তা মটর শুটি সুরইঘাট সীমান্ত এলাকার বাদশা বাজার দিয়ে সোনাতনপুঞ্জি ও বড়বন্দ বাজারের আহমদিয়া মাদ্রাসা সড়ক দিয়ে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রকাশ্যে চোরা কারবারীরা ভারতে পাচার করছে মটর শুটি ও মটর ডাল। কিন্তু নেওয়া হচ্ছে না কোন ধরনের বাস্তব পদক্ষেপ। সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা সীমান্ত এলাকায় টহল দেওয়ার পরও চোরা চালানি তৎপরতা কমছেনা বরং বেড়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। তবে সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা ক্যাম্প কমান্ডার দাবি করে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন তারা প্রতিদিন মটর শুটি ও মটর ডাল ভারতে পাচার কালে আটক করছেন। বিগত ও চলতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার মটরশুটি আটক করা হয়েছে। অনেক অটোরিক্সা (সিএনজি) ও মটর শুটি বহনের পিক আপ আটক করার পাশাপাশি ভারত থকে চোরাই পথে আসা নাছির বিড়ি মাদকদ্রব্য তারা ধরছেন। সুরইঘাট সীমান্ত এলাকা দুর্গম ও বড় হওয়ার কারনে বিজিবির সদস্যরা কঠোর পরিশ্রম করলেও অনেক সময় চোরা চালান নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমছিম খাচ্ছেন তারা। ভারতে মটর শুটি ও মটর ডাল পাচার বন্ধে বিজিবির টহল আরো বাড়ানো হয়েছে বলে এ বিজিবি কর্মকর্তা জানান। একাধিক সূত্রে জানা গেছে মটর শুটি ও মটর ডাল ভারতে পাচারের ব্যবসার সাথে অনেক প্রভাবশালী ব্যাক্তি ও চোরাকারবারি চক্র জড়িত রয়েছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে কানাইঘাট বাজার ও চতুল বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও আরো অনেকে অবৈধ ভাবে গডাউনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে মটর শুটি ও মটর ডাল মজুদ করে ব্যবসা করছেন। প্রসাশনের পক্ষ থেকে মটর শুটি ও মটর ডাল মজুদ কারীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের সংবাদ পাওয়া যায়নি। চোরা কারবারিরা কানাইঘাট বাজার ও চতুল বাজার থেকে মটর শুটি ও মটর ডাল কিনে টাটা পিকআপ গাড়ি ও অটোরিক্সা (সিএনজি) এবং সীমান্ত এলাকায় ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চতুল বড়বন্দ সড়ক ও সুরইঘাট সড়ক দিয়ে মটর শুটি ও মটর ডাল বহন করে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে নিয়ে যায়। পরে পাঁচশত টাকা মজুরী নিয়ে প্রতি বস্তা মটর শুটি ও মটর ডাল এলাকার অনেক শ্রমিক চোরা কারবারিদের কথামতো সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের নির্দিষ্ট স্থানে পৌছে দেয়। প্রকাশ্যে চোরা চালান হলেও এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিজিবি বা স্থানীয় প্রসাশন কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে সুরইঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে বেপরোয়া ভাবে চোরা কারবারিরা ভারতে প্রতিদিন শত শত বস্তা মটর শুটি ও মটর ডাল যেমন পাচার করছে অপর দিকে ভারত থেক নিয়ে আসছে উল্লেখিত জিনিসপত্র। এছাড়াও চতুল বাজার থেকে চোরা কারবারীরা মটর শুটি কিনে পাশর্^বর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার করে থাকে। জানা গেছে ভাতের মেঘালয়, আসাম সহ কয়েকটি রাজ্যে মটরশুটি ও মটর ডালের বেপক চাহিদা থাকায় সেখানকার অনেক বড় বড় ব্যবসায়ীরা ভারতীয় খাসিয়াদের মাধ্যমে চোরা কারবারিদের কাছ থেকে সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ ভাবে মটরশুটি ও মটর ডাল কিনে নিচ্ছে। ভারতে পাচারকৃত মটর শুটি ও মটর ডাল দিয়ে সেখানে গরু ও ঘোড়ার খাবারের পাশাপাশি মদ তৈরিতে মটর শুটি ব্যবহার করা হয় বলে জানা গেছে। সচেতন মহল জানিয়েছেন বৈধ ভাবে তামাবিল সহ সিলেটের অন্যান্য স্থল বন্দর দিয়ে ভারতের মেঘালয় সহ বিভিন্ন রাজ্যে মটর শুটি ও মটর ডাল রপ্তানি করলে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব আদায় করতে পারবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জী জানান কানাইঘাটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরা চালানি তৎপরতা বন্ধে বিজিবিকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মটর শুটি ও মটর ডাল ভারতে পাচার যেনো না হয় এজন্য বিজিবির সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বার বার কথা হচ্ছে। অবৈধ ভাবে মটর শুটি ও মটর ডাল হাটবাজার বা বাসা-বাড়িতে মজুদ করার সংবাদ পেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা