যুগভেরী ডেস্ক ::: রায়হান(১০) ও ফরহাদ(৫)। তাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়ার কেউ নেই। বাবা-মায়ের লাশ নিয়ে কবরস্থানে যেতে হবে তাদেরকে। চিরতরে একা হয়ে গেল দুই ভাই। তাদের ভবিষৎ নিয়েও দুশ্চিন্তায় দাদা-দাদি।
গত শুক্রবার দুপুরে চুনারুঘাটের দক্ষিণ নরপতি প্রকাশ কোনাপাড়া নিজগৃহ থেকে আব্দুর রউফ ও আলেয়ার খাতুনের ঘরের তীরের সাথে ওড়নায় পেছানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার ময়না তদন্ত শেষে বিকেল লাশ দাফন করতে বাবা-মার লাশ নিয়ে দক্ষিণ নরপতি পারিবারিক কবরস্থানে যাচ্ছিল দুই শিশু। যদিও কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে এখনও তা জানতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরিবারের পক্ষ থেকে আব্দুর রউফের পিতার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ শনিবার রাতে অপমৃত্যু মামলা রুজু করে।
পুলিশের ধারণা, তারা দুজনে আত্মহত্যা করেছেন। পরিবারের দাবি, তাদেরকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
এদিকে বড় ছেলে আব্দুর রউফ ও পুত্রবধূ আলেয়াকে হারিয়ে দিশেহারা মা মনোয়ারা বেগম। মা বাবার মৃত্যুতে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না তাদের কান্না। বর্তমানে শিশু দুটি তাদের দাদা দাদির কাছে রয়েছে। অর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে তাদের ভরণপোষণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা।
শিশুদের দাদা আবুল হোসেনের বয়স প্রায় ৫৬ এবং দাদি মনোয়ারা বেগমের বয়স ৫০ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে দুজনেই বাড়ির বাহিরে কোন কাজ করতে পারেন না। শিশুদের বাবা আব্দুর রউফ রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন। তবে শিশুদের মা সৌদিআরব থাকলেও তিনি বাড়িতে কোন টাকা পয়সা দিতেন না।
তাদের দাদি মনোয়ারা বেগম বলেন, রায়হান তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এখন তার লেখাপড়া করানো দূরের কথা তিনবেলা খেতে দেওয়া আমাদের পক্ষে কঠিন। বয়সের কারণে আমি এবং তাদের দাদাও কোন কাজ করতে পারেন না। এখন তাদেরকে কিভাবে বুঝিয়ে রাখব, কে দেখাশোনা করবে তাও জানি না।
শিশুদের দাদা আবুল হোসেন বলেন, চারপাশে এখন শুধু অন্ধকার। একদিকে ছেলে ও ছেলের বউয়ের চলে যাওয়া, অন্যদিকে নাতি-নাতনির ভবিষ্যৎ। কি করব কিছু বুঝতে পারছি না।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলী আশরাফ বলেন, এখনও এ ঘটনার কোন রহস্য উদঘাটন হয়নি তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা