যুগভেরী ডেস্ক
একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী ‘স্কুল ড্রেস’ পরে রামপুরায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘উসকানি দিচ্ছেন’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে অভিযোগ তুলেছেন, তাকে ‘অপপ্রচার’ বলে উড়িয়ে দিলেন সেই আন্দোলনের নেতৃত্বে দেওয়া সোহাগী সামিয়া।
রোববার ঢাকার রামপুরা সেতুর উপর সড়কের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনী কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান।
হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ২৯ নভেম্বর রামপুরায় বাসের চাপায় এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. নাঈমউদ্দীন নিহত হওয়ার পর রামপুরায় প্রতিদিনই বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি চলছে। এসব কর্মসূচিতে নেতৃত্বে রয়েছেন সোহাগী সামিয়া।
শনিবার মানিক মিয়া এভিনিউতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রামপুরায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে কথা বলেছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “এই আন্দোলনটা একটা বিশেষ এলাকায় সীমাবদ্ধ রয়েছে। এটা রামপুরা এলাকাতেই শুধু হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীরা যখন আন্দোলন শেষে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করছে, তখনই একটি মহল রাজনৈতিক উসকানি দিচ্ছে।”
সামিয়াকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, “রাজনৈতিক দল থেকে শিক্ষার্থীদের উসকানি দেওয়া হয়। সেটার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। এর ভিডিও ফুটেজ আছে। এটা একটা রাজনৈতিক দলের মহানগরের মহিলা নেত্রী রামপুরায় রাস্তায় নেমে ছাত্র-ছাত্রীদের উসকানি দিচ্ছেন, স্কুলের ড্রেস পরে।”
সামিয়া রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমি সোহাগী সামিয়া, খিলগাঁও মডেল কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছি।”
তাকে নিয়ে ‘অপপ্রচার হচ্ছে’ দাবি করে এই কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, “একটা লেখালেখি ছড়াচ্ছে যে, আমি নাকি স্টুডেন্ট না। আমি নাকি স্কুল-কলেজের ড্রেস পরে ছাত্রদেরকে উসকানি দিচ্ছি।
“আমার কাছে আমার আইডি কার্ড আছে, সঙ্গে আছে আমি যে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী তার প্রবেশপত্র এবং রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ সকল ডকুমেন্টস হাজির করছি।”
নিজের ছাত্র সংগঠনে সম্পৃক্ততা নিয়ে সামিয়া বলেন, “আমি বুক ফুলিয়ে বলছি, ২০১৭ সাল থেকে আমি (সমাজতান্ত্রিক) ছাত্রফ্রন্ট করি। আমি আমি ঢাকা নগরের দপ্তর সম্পাদক।
“প্রশ্ন এখানেই নয়, আমি এদেশের নাগরিক, আমার সংগঠন করবার অবশ্যই অধিকার রয়েছে। আমি এদেশের সাধারণ ছাত্র। প্রশ্ন হচ্ছে- আমি কোনো রাজনৈতিক ইস্যুকে এই আন্দোলনের মাঝে টেনে এনেছি কি না? আমি শুরু থেকেই এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত। আমার কোনো বক্তব্য, কোনো ¯ে¬াগান, আমার কোনো কথায় রাজনৈতিক বক্তব্য টেনে এনেছি কিনা তা সবাই জানেন।”
তাকে নিয়ে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের কোনো অভিযোগ নেই বলেও দাবি করেন সামিয়া।
“শিক্ষার্থীরা কোনো রোবট না, এবং তাদের নিজস্ব চিন্তা-ধারা আছে।”
এই আন্দোলনে রাজনৈতিক উসকানি রয়েছে বলে যে অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতারা করছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় সামিয়া বলেন, “অনেকে বলছেন- আমাদের আন্দোলনে রাজনীতি ঢুকে যাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, যারা বলছেন- তারা হচ্ছেন বহিরাগত। তারা আন্দোলনের মানুষ নন। আন্দোলনের বাইরে যারা কথা বলবেন তারা আন্দোলনের বাইরের বিষয় নিয়ে কথা বলবেন।
“তারা আন্দোলনের অন্তর্গত বিষয় নিয়ে কথা বলবেন না। তারা আমাদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য, অন্যদিকে ডাইভার্ট করার জন্য নানা রকম অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু আমরা ছাত্ররা বলতে চাই- আমরা কী আমরা কী করছি, তা আমাদের কাছে পরিষ্কার।”
কারও ‘অপপ্রচারে’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘কান দিচ্ছি না’ জানিয়ে তিনি বলেন, “যার যেটা করার তিনি সেটা করুক। কেউ কিছু বললেও আমরা আমাদের অবস্থানে থাকব, না বললেও আমরা আমাদের অবস্থানেই থাকব।”
শিক্ষার্থীদের ‘যৌক্তিক’ আন্দোলনের দাবি-দাওয়া গণমাধ্যমে তুলে ধরতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা