যুগভেরী রিপোর্ট
আহ্বায়ক কমিটিতে সিলেট মহানগর যুবলীগের কেটে গেছে ছয় বছর। এরপর হয়েছে সম্মেলন। প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
সেই সম্মেলন শেষে পার হয়েছে আরো আড়াই বছর। গত সাড়ে ৮ বছরে মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আলোর মুখ দেখেনি।
মহানগরের চেয়েও শোচনীয় অবস্থা ছিল জেলা যুবলীগের। ২০০৩ সালে জেলা কমিটি ঘোষণার পর অতিবাহিত হয়েছে দীর্ঘ ১৬ বছর। ২০১৯ সালে ১৬ বছর পর হয় ওই ইউনিটের সম্মেলন। সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেও গত আড়াই বছরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি।
যুবলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা জানান, আড়াই বছর আগে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মহানগর কমিটির ৬ বছর কেটেছে মুক্তি, সেলিম ও মুশফিকের আহ্বায়ক কমিটির হাত ধরে। ছয় বছর পর আড়াই বছর আগের সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে শুধু জেলা ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। জেলার সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসলেও নগর কমিটি ‘বন্দী’ রয়ে যায় মুক্তি-মুশফিকে। এরপর থেকেই শীর্ষ চার নেতাকে কেন্দ্র করে চলছে সিলেট যুবলীগের কার্যক্রম। এ চার নেতা দায়িত্ব পাওয়ার পর আড়াই বছর অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। পদপ্রত্যাশী যুবলীগ নেতারা কমিটি গঠনে তাদের ব্যর্থতাকে দায়ী করে কেন্দ্রে নালিশ দিয়েছেন।
সূত্রমতে, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার একটি কমিটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে প্রেরণ করেছেন। ওই কমিটিতে সিংহভাগই তাদের অনুসারী। অভিযোগ আছে- প্রস্তাবিত কমিটিতে রয়েছেন, শিবির ও ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারীরাও। একাধিক মামলার আসামি টাকার বিনিময়ে পদ পাচ্ছেন বলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে নালিশ দিয়েছেন পদপ্রত্যাশীরা।
যুবলীগের শীর্ষ দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিলেটে এসে কমিটি যাচাই-বাছাই করে ঘোষণা দিবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই সিলেট মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি পদে আলম খান মুক্তি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মুশফিক জায়গীরদার নির্বাচিত হন। এরপর ২৯ জুলাই প্রত্যক্ষ ভোটে জেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন শামীম আহমদ ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য শামীম আহমদ।
যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানান, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে আলম খান মুক্তিকে আহ্বায়ক করে সিলেট মহানগর যুবলীগের ৬১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির মেয়াদ ছিল ৩ মাস। তবে সেই কমিটি প্রায় ৬ বছর দায়িত্ব পালন করে। একইভাবে সিলেট জেলা যুবলীগের সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছিল ২০০৩ সালে। ২০১৯ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত কার্যক্রম চালায় যুবলীগের সেই কমিটি।
যুবলীগের একাধিক নেতা বলেন, অতীতে ৩ মাসের কমিটি ৬ বছর দায়িত্ব পালন করেছে। এমনকি ৩ বছরের কমিটি ১৬ বছরও দায়িত্ব পালন করেছে। নানা অজুহাতে অতীতে বিভিন্ন সময় যুবলীগের কমিটি সঠিক সময়ে হয়নি। এখনও তাই হচ্ছে। আমরা আর কতদিন অপেক্ষা করবো- এমন প্রশ্ন রাখেন তারা।
এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি রবিবার (৬ ডিসেম্বর) জানান, আমরা ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছি। যাদেরকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে তারা সকলেই যুবলীগের জন্য নিবেদিত নেতা।
তিনি বলেন, এরপরও কেন্দ্রীয় যুবলীগ তাদের নিজস্ব টিম দ্বারা যাচাই-বাছাই করে কমিটি ঘোষণা করবে।
সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামিম আহমদ ভিপি বলেন, আমরা শতভাগ যাচাই-বাছাই করে জেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটি পূর্ণাঙ্গ করেছি। শীঘ্রই আমরা কেন্দ্রের কাছে কমিটি জমা দেবো।
তিনি বলেন, স্বচ্ছতার দিক দিয়ে শতভাগ দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি- জেলা যুবলীগে যারা আসীন হবে তাদের নিয়ে বিতর্ক ওঠার সুযোগ নেই।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা