
স্টাফ রিপোর্টার
২০ আগস্ট ২০২২ (শনিবার) ছোটবোনকে বিদায় দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আমাদের স্টাফ রিপোর্টার সুহেল আহমদ। কারণ তাঁর অত্যন্ত আদরের ছোট বোন রিমা শারমিনের বিয়ে হয় দত্তরাইল মিশ্রপাড়ার আব্দুল মালিক মাস্টার সাহেবের বড় ছেলে আবু তাহের মো. সামস্উদ্দিনের সাথে। গত ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর দিন থেকেই আবু তাহেরের ফুফাতো ভাই (রেজাউর রহমান) রিমা শারমিন ও তাঁর পরিবারের উপর দুষ্ট আচরণ ও নানা রকম অকথ্য কথাবার্তা, মানসিক নির্যাতন, হুমকি, মারধর ইত্যাদি (যা তিনি আমাকে বলতে লজ্জাবোধ করছেন) করতে থাকে। এর মধ্যে করোনা ভাইরাসের মহামারী চলে আসে ও রিমার প্রথম সন্তান হয়। সন্তান ভুমিষ্ট হলে রেজাউর রহমান আরও হিংস্র হয়ে ওঠে। এদিকে আবু তাহের স্ত্রী রিমা ও তার মেয়েকে বাঁচাতে তাঁদের দুবাই এ যাবার ব্যবস্থা করেন ২০২০ সালে। রেজাউর রহমানের সম্পর্কে আবু তাহের বলেন বলেন, রেজাউর রহমান একজন শীর্ষ কুখ্যাত সন্ত্রাসী। তার অধিনে একাধিক সন্ত্রাসী আছে। তার (আবু তাহের) বাবা ২০১৩ সালে মারা যান। এরপর তাদের পুরো সম্পত্তির অর্ধেক রেজাউর রহমান নিজের নামে জোরপূর্বক নিতে চান। আবু তাহেরের পৈতৃক বাড়ির অর্ধেক রেজাউর রহমান বর্তমানে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছেন। বাকি অন্যান্য জমিজমাও তিনি তার নামে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য তার বোনকে তাহেরের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি জানতেন তাহেরের নামে তার পৈতৃক সকল সম্পত্তি।
২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর রিমা শারমিন ও তার সন্তানকে নিয়ে দুবাই চলে যান। সেখানে তিনি দেড় বছর থেকে আরও এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পরবর্তীতে দুবাইয়ে ভিসাজনিত জটিলতার করাণে ২০২২ সালের এপ্রিলে দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু সে ফিরে আসা রেজাউর রহমানের জন্য মোটেও সহ্য করার ছিল না। তাহের-রিমার সন্তানদেরকে গুম বা মেরে ফেলতে নানা কৌশল করতে থাকেন রেজাউর রহমান। আবু তাহের বিভিন্ন জনের মধ্যেমে রেজাউরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি কোনভাবে রাজি হননি। এজন্য রেজাউরের মাধ্যমে নানাবিধ অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে রিমাকে। রেজাউর সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব দেওয়ায় প্রসাশন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের নিজের কথায় চালাচ্ছেন। এতে নিরুপায় হয়ে আবু তাহের স্ত্রী ও সন্তানদের গত ২০ আগস্ট দেশ ত্যাগ করান। রিমা শারমিন দুটি অবুঝ শিশুকে কোলে নিয়ে ভাই সোহেল আহমেদকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন যান তাঁর দুঃখের ঘটনা। রিমা শারমিন যাওয়ার বেলায় ভাইকে বলেন, তাঁর জন্য দোয়া করতে। তিনি যাতে ভালো কোনো দেশে শান্তিতে বাচ্চাদেরকে নিয়ে থাকতে পারেন ও লেখাপড়া করাতে পারেন। তিনি আর দেশে ফিরে আসবো না। লোভ দেশের মানুষকে অমানুষ করে ফেলেছে। লোভ আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে লোকগুলো মানুষের সাথে প্রতারণা,অত্যাচার,পাশবিক নির্যাতন করেই চলছে। তিনি বলেন, আজ আমি রেজাউর রহমান ও তার বাহিনীর জন্য দেশ ছাড়ছি, এভাবে শত শত পরিবার এই রকম রেজা বাহিনীর অত্যাচারে দেশ ছাড়তেছে।
সোহেল আহমেদ বর্তমানে ইতালি প্রবাসী। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পর কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, দেশে ছুটিতে এসে আমার বোনের এসব দেখে নিজেও মর্মাহত হয়েছেন। তিনি অনেক কিছু বলতে চেয়েও বলেননি। তিনি শুধু বলেন, যেখানে প্রশাসন হয় ক্ষমতাধর লোকের, সেখানে আমরা জনগণ তাদের কাছে কিছুই না। তিনি বলেন, আমি আজ কিছু বললে কাল আমি গুম হবো-কি হবো না ? কে তার নিশ্চিয়তা দেবে?
এ ব্যপারে সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আহাদ বলেন, রেজাউর রহমান এলাকায় গণ্যমান্য ব্যক্তি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু লোক মিথ্য অভিযোগ তুলছেন।