
ছাতক প্রতিনিধি: ছাতকে জলমহালের অংশীদারিত্ব নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে সরকারী তদস্ত কাজে স্বাক্ষী দেয়ার অপরাধে হাফিজ খান(৪৫) নামক এক যুবককে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে প্রতিপক্ষরা। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ভর্ত্তি করা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাফিজ খানের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ডাক্তরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। হাফিজ খান উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের সাদারাই গ্রামের মৃত বাজারি খানের পুত্র। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে জাউয়াবাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে এলোপাতারী কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাফিজ খানের পা, মাথা, পিঠ ও হাত মারাত্মক ক্ষত-বিক্ষত হয়। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সাল মেয়াদে ‘পাগনা বড় বিল’ জলমহাল ইজারা নেন সোনারতরী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির পক্ষে সভাপতি মিরাশ আলী ও সহযোগী জালিয়া গ্রামের বাসিন্দা লুৎফুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। জলমহাল ইজারা গ্রহনের শুরু থেকেই আর্থিক সংকটে পড়েন ইজারা গ্রহীতারা। সংকট কাটিয়ে উঠতে জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০০৯ লংঘন এবং শর্তভঙ্গ করে মিরাশ আলী ও তার সহযোগি লুৎফুর রহমান স্থানীয় ব্যবসায়ী মোজাক্কির আহমদের নিকট জলমহালটি সাব-লিজ প্রদান করেন। সোনারতরী জলমহাল সাব-লিজ গ্রহন করে মোজাক্কির আহমদ অধিক লাভের প্রত্যাশায় বিভিন্ন ধাপে প্রায় সাড়ে ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন জলমহালের উন্নয়নে। চলতি বছর জলমহালের উৎপাদিত মৎস্য বিক্রির সময় হলে বেঁকে বসেন মিরাশ আলী-লুৎফুর রহমান। তারা মোজাক্কির আহমদের অগোচরে অসৎ উদ্দেশ্যে জলমহালটি অন্যত্র বিক্রি করে দেয়ার পায়তারা করতে থাকেন। বিষয়টি জানতে পেরে মোজাক্কির আহমদ দুর্নীতি, শর্তভঙ্গ এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মিরাশ আলী ও লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। হাফিজ খানের পরিবারের লোকজন জানান, গত ২০ ও ২৭ সেপ্টেম্বর দু’দফা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উভয়পক্ষ এবং স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে বৈঠক করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এসময় হাফিজ খান সাব লিজ গ্রহীতা মোজাক্কিরের পক্ষে স্বাক্ষী দিলে মিরাশ আলী ও লুৎফুর রহমানের রোষানলে পড়েন তিনি। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাউয়াবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পাগনা বড় বিল এলাকায় পৌছুলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মিরাশ আলী ও তার লোকজন অতর্কিত হামলা চালিয়ে হাফিজ খানকে গুরুতর আহত করে। বর্তমানে তিনি ওসামনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তার অবস্থা শংকটাপন্ন বলে তারা জানিয়েছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান জানান, এ রকম একটি ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।