রাজনগর প্রতিনিধি:- মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় দুর্গাপূজা চলাকালে একটি মন্দিরে মূর্তি ভাঙচুর ও হামলায় এক নারী নিহত এবং ১৬ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বেলা ২টার দিকে রাজনগর উপজেলার জামুরা গ্রামের রঞ্জিত চন্দ্র দাসের বাড়িতে (মহাজন বাড়ি) দুর্গা মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বিতি রানী দাস (২৫) রাজনগর উপজেলার জামুরা গ্রামের (মহাজন বাড়ি) রঞ্জিত চন্দ্র দাসের মেয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে রাজনগর উপজেলার জামুরা গ্রামের রঞ্জিত চন্দ্র দাসের বাড়িতে (মহাজন বাড়ি) সনাতন ধর্মালম্বীদের দুর্গা মন্দিরে মহানবমী পূজা চলাকালে ওই গ্রামের তাজিল মিয়া ও আকবর মিয়ার নেতৃত্বে একদল মুসলিম ব্যক্তিরা বিভিন্ন অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা মন্দিরের মূর্তিগুলো ভাঙচুর করতে থাকে। এতে পূজায় আগত হিন্দু ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ ও শিশুদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা দিগি¦দিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। এসময় জামুরা গ্রামের রঞ্জিত চন্দ্র দাসের ছেলে রাজকুমার দাসসহ হিন্দু ধর্মালম্বী আরও কয়েকজন বাঁধা প্রদান করলে হামলাকারীরা তাদের মারধর করে। এদিকে তাজিল মিয়ার ছেলে মোতালিব মিয়া দেশিয় অস্ত্র রামদা দিয়ে রাজকুমার দাসকে মারতে আসলে এসময় ভাইকে রক্ষা করতে রাজকুমারের বোন বিতি রানী দাস এগিয়ে আসেন। এসময় মোতালিব মিয়ার দা’য়ের কোপ রাজকুমার দাসের বোনের উপর পড়ে যায়। বিতি রানী দাস দা’য়ের কোপে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুঠিয়ে পড়েন। এ হামলায় গ্রামের আরো ১৬ জন আহত হন। পরে স্থানীয়রা বিতি রানীকে মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। এসময় বিতি রানীর অবস্থা আশংকাজনক হলে কর্মরত চিকিৎসকরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেল কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এঘটনায় রাজনগর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। রাজকুমার দাস বলেন, “আমার বোনকে তারা রামদা দিয়ে কুপিয়ে মেরে পেলেছে। যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে তারা বলেছে, এ দেশ মুসলমানদের। এ দেশে হিন্দুরা বাস করতে পারবে না। এ দেশে হিন্দুদের থাকার কোনো অধিকার নেই। থাকলে তাদের গণহত্যা করা হবে।” ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভুষণ রায় বলেন, ‘খবর পাওয়ামাত্র আমাদের পুলিশ টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আসামিদের ধরতে অভিযান চালাবো। আশা করি শীঘ্রই অভিযুক্তরা ধরা পড়বে।’
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা