যুগভেরী ডেস্ক ::: পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত না মানায় সমাজচ্যুত করে গ্রামছাড়া হয়েছে ৯ পরিবারকে। ১০ মাস ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটছে এই নয় পরিবারের অর্ধ শতাধিক সদস্য। বাড়ির ফেরার আকুতি জানিয়ে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন করেছেন সমাজচ্যুত এই ৯ পরিবারের লোকজন।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে জীবনের নিরাপত্তা ও আইনী সহযোগিতা প্রার্থনা করে বক্তারা বলেন, নিজের ক্রয়কৃত জমির ভাগ না দেয়ায় গ্রাম্য মাতব্বরদের নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে ভয় আর আত্মকে ১০ মাস ধরে বাড়ি ফিরতে পারছেন না সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের সমাজচ্যুত ৯ পরিবারের সদস্যরা। গ্রাম্য মাতব্বরদের হুমিধামকিতে বিভিন্ন গ্রামে যাযাবরের মতো মানবেতর জীবনযাপন করছেন পরিবারের নারী পুরুষ ও শিশু সন্তানরা। নির্যাতিত পরিবারের লোকেরা অভিযোগ করে জানান লোকশূন্য বাড়ি ঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনী সহযোগিতা চেয়েও কোনো প্রতিকার মিলছে না তাদের। পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ি ফিরতে চান নির্যাতিত পরিবারগুলো।
নির্যাতিত পরিবারের পক্ষে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রামচন্দ্র তালুকদার, জয়চান, আসু চন্দ্র তালুকদার, সমিত্রা রাণী, মিতালী তালুকাদর ও চম্পা রাণী।
সমাজচ্যুত রামচন্দ্র তালুকাদার মানববন্ধনে বলে, নিজের ক্রয়কৃত জমিতে ভাগ না দেয়ায় পঞ্চায়েত কর্তৃক সমাজচ্যুত করে গ্রামছাড়া করেছে আমাদের। ইউপি সদস্য সুজন হাওলাদার, গুরুদাস তালুকদার, গোপী তালুকদার, চিতু বিশ্বাস, কৃষ্ণ বিশ্বাস, নিরঞ্জন সরকারম, পাণ্ডব সরকার গংরা এই পঞ্চায়েতের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের লোকজন্য লোকশূন্য বাড়িতে লটুপাট ও ভাঙচুর করেছে। বাড়ি ফিরতে চাইলে তাঁরা মোবাইলফোনে হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করেছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আমরা এখন আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই। ছেলে মেয়ে নিয়ে বাড়িতে ফিরতে চাই। লুট হওয়া সম্পদ ফেরৎ চাই। সরকার আমাদের সাহায্য না করলে আমরা কই যাবো।
প্রসঙ্গত গত এক বছর আগে চানপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়া নিবাসী ভরত চন্দ্র তালুকদারের নামে পশ্চিম চানপুর মৌজার ৪৯ নং জেএল সংক্রান্ত ১৮৪ খতিয়ানের ৮২ নং দাগের ১ একর ২ শতক জমি, একই খতিয়ানের ৩৫৯ নং দাগের ২ একর জমি, ৩৮১ নং দাগের ৭ একর ৫৩ শতক সহ মোট ১০ একর জমি রয়েছে। এই জমি তিনি অন্যের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। জমি কিনতে গ্রামের মাতব্বরদের আপত্তি ছিল। জমি কেনার পর মাতব্বরদের দাবির প্রেক্ষিতে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রামবাসীকে কিছু জমি দান করেন ভরত চন্দ্র তালুকদার। জমি দানের পরও মাতব্বরদের দাবি পূরণ হয়নি। শুরু হয় ভরত চন্দ্র তালুকদার ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র। একে একে ৯ পরিববারকে করা হয় সমাজচ্যুত। এদের মধ্যে ভরত চন্দ্র তালুকদার, রাম চন্দ্র তালুকদার, লক্ষণ চন্দ্র তালুকদার, জয় চরণ তালুকদার, জয় চান তালুকদার, আশু তালুকদার, হরে কৃষ্ণ তালুকদার, পলিন্দ্র তালুকদার, বিরেন্দ্র তালুকদার। এরা পেশায় কৃষক, কেউ দিনমজুর, আবার কেউ চাষাবাদ করে জীবীকা নির্বাহ করে আসছেন। বর্তমানে সদর উপজেলা ও বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার বিভিন্ন আত্মীয়দের বাড়িতে অবস্থান করছেন এসব পরিবার।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা