• ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

নগরীর খুলিয়াটুলায় কলেজ ছাত্রী সোনিয়া বেগম হত্যা : ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
নগরীর খুলিয়াটুলায় কলেজ ছাত্রী সোনিয়া বেগম হত্যা : ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট নগরীর খুলিয়াটুলায় কলেজ ছাত্রী সোনিয়া বেগম হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত সোনিয়ার ভাই পারভেজ আহমদ বাদী হয়ে আজ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪ জনকে অভিযুক্ত করে কোতোয়ালী থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলেন-সজিব আহমদ, আব্দুর রহমান, আব্দুল আজিজ, সালাউদ্দিন আহমদ, সালমান আহমদ, রাজু আহমদ, ফরহাদ আহমদ, মোঃ আফসার হোসেন সারওয়ার ও আব্দুল মালেক।


গত ১২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কোতোয়ালী থানা পুলিশ নগরীর শেখঘাট এলাকার খুলিয়াটুলায় নীলিমা-১৪ নং বাসা থেকে সোনিয়া আক্তার (২১) নামে এক তরুণীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। নিহত সোনিয়া দক্ষিণ সুরমা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ও জকিগঞ্জ উপজেলার কলাছড়া গ্রামের বিল্লাল আহমদের মেয়ে। নগরীর খুলিয়াটুলায় নীলিমা-১৪ নং বাসার ভাড়াটিয়া হিসেবে মা-বাবার সাথে থাকতেন। সোনিয়া সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার একাধিক নাটক ও টিকটক ভিডিওতে অভিনয় করেছেন। ঘটনার দিন সোনিয়ার পিতা সেলিম মিয়া অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সকাল ৭টার দিকে সোনিয়ার পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে বসে নাশতা করেন। পরে ঘরে সোনিয়া বেগমকে রেখে পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে চলে যান। দুপুর ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা বাসায় ফিরে সোনিয়ার কক্ষে গিয়ে বিছানার উপরে গলাকাটা অবস্থায় তার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তখন পুলিশকে খবর দিলে দুপুর পৌনে ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। লাশের পাশ থেকে কাপড় কাটার একটি রক্তমাখা কাঁচি জব্দ করে পুলিশ।
জানা যায়, নিহত সোনিয়া স্থানীয় ১৩,১৪,১৫ নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানুর নিকট আতী¥য়। অভিযুক্ত সজিব ও আব্দুর রহমানের পরিবারের সাথে কাউন্সিলর শাহানার দীর্ঘদিনের শত্রুতামি রয়েছে। রাজনৈতিক মতবিরোধ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, খুন ও পাল্টাপাল্টি মামলা লেগে রয়েছে। একে একে খুন হন, অভিযুক্ত আব্দুর রহমানের চাচা কামাল আহমদ অন্যদিকে কাউন্সিলর শাহানার পুত্র সোহান ইসলাম ও স্বামী তাজুল ইসলাম। এরই ধারাবাহিকতায় এবার খুন হলেন সোনিয়া বেগম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে বেডমিন্টন খেলা নিয়ে সজিব ও আব্দুর রহমানের সাথে কাউন্সিলর শাহানা বেগমের পুত্র রেদোয়ান আহমদ ও রায়হান ইসলামের সাথে ঝগড়া ও মারামারি হয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরেও এ ঘটনা নিয়ে উভয় পক্ষে হুমকি ধামকি দেয়া হয়। পুলিশ ধারনা করছে এ ঘটনার জের ধরেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কারণ নিহত সোনিয়া বেগম কাউন্সিলর শাহানার ঘনিষ্ট আত্মীয়। শাহানার ছেলে রায়হান আহমদের সাথে নিহত সোনিয়া বেগমের ভাই পারভেজ আহমদের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। পূর্ব শত্রুতামির জের ধরে আধিপত্য বিস্তার করতে অভিযুক্তরা সোনিয়া বেগমকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, এটি একটি লোমহর্ষক হত্যাকা-। নিহতের গলায় গভীরভাবে কাটা। হত্যাকান্ডের পরপরই অভিযুক্তরা গাঢাকা দিয়েছে।
এদিকে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ ঘটনায় মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা অভিযুক্তদের সন্দেহ করছি। তাদেরকে আটকের জন্য পুলিশ অভিযানে রয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি এবং পিবিআইও রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পর্যন্ত কাউকে আটক করার খবর পাওয়া যায়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন