২০২০ সালে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুরু হওয়া উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালে। কিন্তু সাড়ে ৪ বছরে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২২ ভাগ। অথচ কাজ না করেই ২১২ কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়েছে।
এমন অভিযোগে বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক ও বিমান মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মুহিবুল হকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার মামলাটি দায়ের করা হয়।
সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পের ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হয়েছে।
জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে ২ হাজার ১১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওসমানী বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো ও দেশি-বিদেশি ফ্লাইট চালুর জন্য একটি উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়। যা ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট কাজ শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ২৭ মের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
তবে সাড়ে ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। বরং কাজ না করেই অগ্রিম বিল হিসেবে ২১২ কোটি টাকা ছাড় করিয়ে নেয়া হয়েছে। এই অভিযোগে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
মামলায় আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মুহিবুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, বেবিচকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিবুর রহমান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এরোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আনাম, পরিচালক লুত্ফুল্লাহ মাজেদ, প্রকল্প পরিচালক মইদুর রহমান মো. মওদুদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপ-সচিব শাহ জুলফিকার হায়দার (বর্তমানে উপ সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়) এবং সাবেক যুগ্মসচিব মো. আনিছুর রহমান (বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজে স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে বেআইনি সুবিধা নিয়ে ও দিয়ে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কো-কন্ট্রাকটর হয়ে কার্যাদেশ পেয়ে তা বাস্তবায়নে নিয়োজিত থাকে। অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড দেশের বিমানবন্দরগুলোর কোনও প্রকল্পে সরাসরি, আবার কোনও প্রকল্পে বিদেশি কোম্পানির লোকাল এজেন্ট হয়ে কাজ করেছে। আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করে পরস্পর যোগসাজশে প্রকল্পগুলোর সামগ্রিক কাজে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাজিফ আহমদ সিলেটভিউ-কে বলেন, ২০২০ সালে শুরু হলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের ২২ ভাগের চেয়ে একটু বেশি কাজ শেষ হয়েছে।
কাজ বন্ধ থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, যেহেতু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে, সেহেতু একটা নিয়মের মধ্য দিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।
সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি : নূরুর রশীদ চৌধুরী, সম্পাদক : ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী, সহকারী সম্পাদক : ফাহমীনা নাহাস
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : অপূর্ব শর্মা