মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা সদর, ভানুগাছ বাজার ও শমশেরনগর বাজারে যানজট চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের। এযেন দেখার কেউ নেই!

সরেজমিনে দেখা যায়, শমশেরনগর বাজার, ভানুগাছ বাজারের চৌমুহনী, উপজেলা চৌমুহনা, আদমপুরসহ প্রতিটি রুটের দু’পাশে সিএনজি অটোরিকশা, অবৈধ টমটম, ব্যাটারি চালিত রিকশা ও বিভিন্ন ধরনের দোকানপাঠ স্থাপিত হয়েছে। ফলে সড়ক দিয়ে দুটি গাড়ি ক্রস করার সময় প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হয়ে ঘটছে দুর্ঘটনাও। দোকানপাটকে আড়াল করে যানবাহনের কারণে অতিষ্ঠ হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। সড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে চলতেও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও পথচারীরা।

শমশেরনগরে রেলওয়ে স্টেশন, পুলিশ ফাঁড়ি, ব্যাংক-বীমা, পোস্ট অফিস, বিএএফ শাহীন কলেজ, সুজা মেমোরিয়াল কলেজ, এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ একাধিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে। এতে শিক্ষার্থী পথচারী এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। এই বাজারে সড়কের দু’পাশে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠছে কয়েক শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। বাজারে অটোরিক্সা ও টমটমের কারনে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টিতে হেঁটে চলাও সম্ভব হয় না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, যানজটের মূল কারণ হচ্ছে শহরের প্রধান সড়কগুলোর পাশে অপরিকল্পিতভাবে দোকানপাঠ গড়ে উঠা। আবার সেগুলোর নির্দিষ্ট কোনো পার্কিং নেই, রেস্তোরাঁ ও ব্যাংকে আসা গ্রাহকদের গাড়ি পার্কিং করা হয় সড়কেই। এতে পথচারী ও যান চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।

তারা বলেন, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ নিজে থেকে সচেতন না হলে পৌরসভা ও প্রশাসনের একার পক্ষে শহরের যানজট নিরসন সম্ভব নয়। পৌর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে চলে যাওয়ার পর আবারও কিছুসংখ্যক অসাধু ব্যবসায়ী ফুটপাত ও সড়কের পাশে বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে বসে।

যেসব ব্যবসায়ী নিষেধ অমান্য করেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

ভানুগাছ বাজারের ফার্মেসি মালিক আব্দুল মুমিন, শমশেরনগরের ব্যবসায়ী নূরুল মোহাইমীন, শাহাজান আহমদ বলেন, সিএনজি অটোরিকশা ও টমটম দোকান আড়াল করে আর রাস্তায় রাখায় ক্রেতাদের যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়তে হয়।

তারা বলেন, যানজট এখন নিত্যসঙ্গী। তাছাড়া অভারলোডের বালুবোঝাই ট্রাক ঘনঘন চলাচলের কারণে যানজট প্রকট আকার ধারণ করে। বিএএফ শাহীন কলেজ শমশেরনগরের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার নাসিফ, জান্নাতুল ফেরদৌস মাহিসা বলেন, রাস্তার পাশে যত্রতত্র গাড়ি আর যানজট প্রতিদিনই লেগে থাকে। এমনকি রাস্তার পাশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের হেঁটে চলাও দায়। এসব নিয়ন্ত্রণ না হলে দুর্ঘটনা ঘটবে। ভানুগাছ বাজার পৌর বণিক কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, ব্যবসায়ীদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। তারপরও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, সড়কে যানজট নিরসনে ব্যবসায়ী সমিতিকে বলা হয়েছে রাস্তার আশপাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও যানজট কমানোর জন্য। তাছাড়া রাস্তা ক্লিয়ার রাখার জন্য পুলিশ কাজ করছে। কোনোভাবে যানজট তৈরী করা যাবে না। চেকপোষ্ট বসিয়ে পুলিশ যানজট নিরসনের জন্য কাজ করছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, যানজট নিরসনের জন্য প্রশাসন কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান করে দখলমুক্ত করা হবে।