• ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

উন্নয়ন বঞ্চিত বিয়ানীবাজারের অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রাম !

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৩০, ২০২০
উন্নয়ন বঞ্চিত বিয়ানীবাজারের অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রাম !

সামিয়ান হাসান, বিয়ানীবাজার :  বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইয়নিয়নের তাজপুর গ্রাম। জীবনের মায়া তুচ্ছ করে এই গ্রাম থেকে স্বাধীনতার সংগ্রামে ৫২জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরেও মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রামে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। উন্নয়ন বঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রামের জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামের বর্তমান অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। জীবনের শেষ সময়ে এ অবস্থার পরিবর্তন দেখে যেতে চান ঐ এলাকার মুক্তিযুদ্ধারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটির বেহাল দশা। রাস্তার কিছু অংশে ইট সলিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোটবড় গর্ত। প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তার বাকি অংশ এখনও কাঁচা থাকায় সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। গ্রামের পাশে দিয়ে বয়ে চলা সুনাই নদীর ভাঙ্গনে এই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকেই হয়েছেন ভীটেহারা। তাছাড়া গ্রামের রাস্তার পাশে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পয়নিস্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে নাজুক। একই সাথে বর্ষা মৌসুমে কাঁচা রাস্তা ভেঙ্গে সংকুচিত হচ্ছে প্রতি বছর। পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ায় গ্রামটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রাম হিসেবে পরিচিতি পেলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের উদাশীনতায় গ্রামটি এখনও রয়েছে অবহেলিত!

গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজির উদ্দিন বলেন, জীবন বাজি রেখে আমরা দেশ শত্রু মুক্ত করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারের উন্নয়নের গ্রাম হচ্ছে শহর অথচ আমরা এতো বেশি সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার গ্রামটি আজো উন্নয়ন বঞ্চিত। বাড়িতে দুরবর্তী আত্মীয় স্বজনরা আসলে লজ্জা পাই। গ্রামবাসীর একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি এই বয়সে চলাচল করা খুবই কষ্টকর।
কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী রুবেল আহমদ বলেন, আমাদের গ্রামের রাস্তাঘাটের অবস্থা এতো খারাপ শহরে থেকে মালামাল নিয়ে কোন গাড়ি যেতে চায় সেখানে। উল্টো রাস্তা নিয়ে বাজে মন্তব্য করে। আমরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্যও একজন মুক্তিযোদ্ধা। টানা তিন মেয়াদ থেকে তিনি এই ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করছেন। তার গ্রামটি অবহেলিত কেন এমন প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন বলেন, আমরা উন্নয়ন এবং বরাদ্ধ বঞ্চিত যুগ যুগ ধরে। যা অল্প বরাদ্ধ আসে তা দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে হয়। অল্প বরাদ্ধে যে পরিমান টেকসই কাজ করার তার চেয়ে বেশি করার চেস্টা করেছি। কিন্তু তা চাহিদার তুলনায় খুবই অল্প।
এ বিষয়ে স্থানীয় মুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, ‘ সরকার থেকে আমরা যে বরাদ্দ পাই তা দিয়ে এতো বড় একটি ্ইউনিয়নের সব এলাকার কাজ একসাথে করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া আমাদের বরাদ্দ সীমিত হওয়ায় ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অতি প্রয়োজনীয় সমষ্য গুলো চিন্নিত করে অগ্রাধিকার বিত্তিতে সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করি। একসাথে সব গ্রামের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন