• ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

এবার বিয়ানীবাজারে লিচুর ফলন ভালো, দামও নাগালে

Daily Jugabheri
প্রকাশিত মে ২০, ২০২১
এবার বিয়ানীবাজারে লিচুর ফলন ভালো, দামও নাগালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বিয়ানীবাজার
ফলের দোকান, ভ্যানগাড়ি ও ফুটপাতে বেতের ঝুড়িতে এখন স্থানীয় লিচু দাপটের সঙ্গে নিজেদের জাহির করছে। এবার স্থানীয়ভাবে লিচুর ফলনও ভালো হয়েছে। দামও অনেকটা ক্রেতাদের নাগালে। তাই স্থানীয় এলাকায় উৎপাদিত রাসায়নিক ও ক্ষতিকর কীটনাশক মুক্ত লিচুই এখন ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ।
স্থানীয়ভাবে লিচু উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ বছর বাদুড়, কাঠবিড়ালি ও বানরের উৎপাত ছাড়া বড় কোনো বিপর্যয় হয়নি। ঝড়ঝাপটার কবলেও খুব একটা পড়েনি। এতে লিচুচাষীরা খুশি। আরও কিছুদিন পরে অন্য জাতের ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে লিচু আসা শুরু হবে। পথচলতি ক্রেতাসাধারণ মৌসুমের শুরুতেই হাত বাড়িয়ে নিচ্ছেন নজরকাড়া মৌসুমি এই ফলকে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রে জানা গেছে, বৈশাখ মাসের শেষ দিক থেকে বিয়ানীবাজার উপজেলার পাহাড়ি টিলা এলাকা থেকে ছোট বড় হাট-বাজারে স্থানীয় লিচু আসা শুরু হয়। পাইকারি ও খুচরা লিচু বিক্রেতারা পৌরশহরের বিভিন্ন ফুটপাত, পথের মোড় এবং মৌসুমি ফল বিক্রির নির্দিষ্ট স্থানে ভ্যানগাড়ি, বেতের ঝুড়ি ও ডালাভর্তি নজরকাড়া লিচু নিয়ে বসেন।
সরেজমিনে বিয়ানীবাজার পৌরশহর ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকদিন ধরে পৌরশহরের দক্ষিণ বাজার, উত্তর বাজার, কলেজ রোড, পোস্ট অফিস রোড, নিউ মার্কেট, মোকাম মসজিদ রোড়, আজির মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় লিচু বিক্রি হচ্ছে। এখন স্থানীয় জাতের লিচু বাজারে এসেছে। আকার ও ধরণভেদে ১০০ লিচু ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও কিছুদিন পর বাজারে আসবে বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন জাতের লিচু। এগুলো বাজারে এলে লিচুর দামও কমবে। কিন্তু অন্য জেলা লিচু খেতে অনেকটা অনাগ্রহী বিয়ানীবাজারবাসী। কারণ এসব লিচুতে বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক প্রয়োগ হয়ে থাকে বলে ধারণা স্থানীয়দের। বিয়ানীবাজার পাহাড়ি এলাকা জলঢুপ, মুল্লাপুর, লাউতা, কালাইউরায় বিক্ষিপ্তভাবে কমবেশি লিচুর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল থেকেই এসব থেকে লিচু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা।
জলঢুপ এলাকার লিচুচাষী সাদিক হোসেন এপলু জানান, আমার বাড়িতে ১০টি লিচু গাছ রয়েছে। গাছগুলো অনেক পুরনো । প্রতি বছর অনেক লিচু হয় আমাদের গাছে। এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। প্রতি বছর পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বাজারে লিচু বিক্রি করি। পাইকাররা নিজেদের দায়িত্বে গাছ থেকে ফল পেড়ে নিচ্ছেন। এ বছর প্রায় ৮০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেছি।
আরেক লিচু গাছের মালিক মাসুদ রানা শিমুল বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু আমাদের লিচুর শত্রু বাদুড়, বানর, কাঠবিড়ালি অর্ধেক তাদের পেটে চলে যায়। গাছ পাহারা দেওয়ার জন্য লোক আছে। পাশাপাশি বিদ্যুতের লাইট ব্যবস্থা করেছি। রাতেও দিনের মতো আলো থাকে গাছে। আমরা লিচুতে কোন ধরণের রাসায়নিক ব্যবহার করি না।’
পৌরশহরের ফল বিক্রেতা লিচু মিয়া বলেন, ‘এ বছর জলঢুপ এলাকায় ২০টি গাছ কিনেছি। সব গাছে লিচু এখনো পাকে নি। বর্তমানে ১০০ লিচু ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি করছি। আমাদের কাছে স্থানীয় এলাকার লিচু’র চাহিদা বেশি। কারণ এই লিচুতে কোন ধরণের রাসায়নিক ব্যবহার করেন না গাছের মালিকরা।’
লিচু ক্রেতা আবুল হাসান বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় জলঢুপ এলাকার লিচু স্বাদ ভালো, মিষ্টি আছে। দামও সহনীয়। আমি ১০০ লিচু কিনেছি ১৫০ টাকায়। দাম বেশি হলেও সমস্যা নেই কারণ লিচুগুলো রাসায়নিক মুক্ত’।
বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, ‘বিয়ানীবাজার উপজেলা পাহাড় টিলা বেষ্টিত এলাকার বাড়ি গুলোতে অনেক পুরনো লিচুর গাছ রয়েছে। এখানে কোন বাণিজ্যিক বাগান নেই। এই গাছ গুলোর লিচু’র চাহিদা অনেক রয়েছে স্থানীয় বাজারে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন