• ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

যুবলীগ নেতা শিপলুকে ফাঁসাতে দুই তরুণী ধর্ষণের মামলা : সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী

Daily Jugabheri
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২
যুবলীগ নেতা শিপলুকে ফাঁসাতে দুই তরুণী ধর্ষণের মামলা : সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী

সিলেট নগরীর জালালাবাদ থানা এলাকায় যুবলীগ নেতা শিপলুকে ফাঁসাতে দুই তরুণী ধর্ষণের মামলাটি সাজানো হয়েছে। এমনটি দাবি করেছেন পশ্চিম পাঠানটুলা এলাকার রানা আহমদ শিপলুর স্ত্রী তাহমিনা খানম। তিনি এ সাজানো মামলা থেকে তার স্বামীর অব্যাহতি এবং হয়রাণি বন্ধের দাবি জানান। সোমবার (৫ সেপ্টম্বর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
তাহমিনা খানম লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার স্বামী একজন আমদানি ও রপ্তানী কারক ব্যবসায়ি। রাগীব রাবেয়া হাসপাতালের পাশে তাদের ভাড়া ফার্মেসী ব্যবসা রয়েছে। এর পাশাপাশি যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাই তার স্বামী ও পরিবারের মান-সম্মান ক্ষুন্ন,ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতি না করতে এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষে স্থানীয় ছাত্রদলের চিহিৃত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ি তানভীর একেরপর এক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা সাজাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তানভির, তানিয়া, জুবেল মিলে দুই তরুণীকে দিয়ে বানোয়াট ও মিথ্যা কল্পকাহিনীতে হোটেল গ্রীণ হিলে ২৩ আগস্ট ধর্ষণের ঘটনা সাজিয়ে গত ২৮ আগস্ট এসএমপির জালালাবাদ থানায় (মামলা নং ২৯(০৮)২২ ইং ও ৩০(০৮)২২ ইং) পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
তাহমিনা খানম আরও বলেন, যার ফলে ওই দুই মামলার বাদী এবং মামলার প্রধান আসামী তানিয়া হোটেলে কক্ষ ভাড়া নেনে নাম ও পরিচয় গোপন করে এবং ৫ দিন পরে ধর্ষণ ঘটনার নাটক সাজিয়ে তাদের পরিচিত ও মামলায় উল্লেখিত নগরীর খুলিয়া পাড়ার আব্দুল ওয়াদুদ ও জাহানারা বেগমের ছেলে মেহদী হাসান সুমনকে সাথে নিয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা দাখিল করেন।
পরবর্তীতে সুমন জানান, দুই তরুণীকে তিনি চিনেন না। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ফলে তার রাজনৈতিক ছোট ভাই অভি ওই দুই তরুণীকে তার কাছে নিয়ে এসেছিলো, তাই থানায় নিয়ে যান। তাছাড়া অভি তাকে বলেছে তরুণী দুজনেই ড্যান্স করে মুরাদ নামের ড্যান্সারের সাথে। তাই মুরাদ অভির মাধ্যমে সুমনের কাছে ওই দুইজনকে পাঠিয়েছেন। আর ড্যান্সার মুরাদের সাথে কথা বললে, তিনি জানান দুই তরুণীকে চিনেন এক সপ্তাহ থেকে। ড্যান্স শিখতে তার কাছে গিয়েছিল তারা, কিন্তু তাদের চলাফেরা ও চারিত্রিক দিকটি তার কাছে সন্দেহজনক হয়েছিল। তাই তাদেরকে তিনি ড্যান্স ক্লাসে ভর্তি না করে আসতে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু দুইদিন আসার পর ৫ দিন না এসে ৬ দিনের সময় ওই দুইজন গিয়ে বলে তাদের মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে। তাই তা উদ্ধারের জন্য তার বড় ভাই তেলিহাওর গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা সুমনের কাছে পাঠান। পরে কি হয়েছে তিনি তা আর জানেন না। মুরাদ ও সুমনের বক্তব্য শুনে দুই তরুণীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, মামলার বিষয়ে কিছু জানতে হলে পুলিশের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে, তারা কিছু জানেন না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, দুই তরুণী ধর্ষণের মামলায় গ্রীণ হিল হোটেলের যে সকল কক্ষের কথা উল্লেখ হয়েছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ২৩ আগস্ট গ্রীণ হোটেলের রেজিস্ট্রার অনুযায়ি ৩০১ নং রুমে কোন বর্ডার উঠেনি। তবে রেজিস্ট্রার খাতার ক্রমিক অনুযায়ি ৯৯১৫০,৯৯১৫১ ও ৯৯১৫২ ক্রমিকে ৩০৩ নম্বর কক্ষে গৃহিনী পরিচয়ে উঠেন তিনজন মহিলা, এর মধ্যে দুই বোন ও একজন মহিলা ছিলেন এবং কোন পুরুষের নাম উল্লেখ নেই। তাছাড়া মামলা দুটির এজাহারের বক্তব্যের বেশ গড়মিল আছে। নাট্যশিল্পী পরিচয়দানকারি তার মামলায় লিখেন, তাকে ২৩ আগস্ট রাত ১১টা ৫০ থেকে পরদিন ৫ টা পর্যন্ত ৪ জন মিলে ৫ বার ধর্ষণ করে। আইএলটিএস পড়–য়া পরিচয়দানকারি তার মামলায় উল্লেখ করেন একই সময়ে তাকেও ঘুরে ফিরে ৫ জন ৭ বার ধর্ষণ করেছে। অথচ এই সময়ের তারা হোটেল কর্তৃপক্ষ অথবা হোটেলে থাকা অন্য বর্ডারকে চিৎকার করে ডাকেননি বা পরদিন দুপুর ১ টা পর্যন্ত ছিলেন। সেখান থেকে গিয়েও থানায় কোন অভিযোগ করেননি অথবা জরুরি নাম্বার ৯৯৯ এ ফোন করেও কিছু জানাননি। হোটেলে উঠা আইএলটিএস পড়–য়া তরুণী কোন আইএলটিএস সেন্টারে পড়ে না। ১ নং আসামি এবং মামলা দুটির বাদী দেহ ব্যবসায়ী। আর তার প্রমাণ পাওয়া যাবে মামলার বাদী দুই তরুণীর ডিএনএ টেস্ট করলে। যেমনটি পাওয়া গিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট জাতীয় দলের বলার রুবেলের কথিত প্রেমিকা হ্যাপির শরীরে। তাছাড়া শিপলুর প্রতিপক্ষ তানভীর একজন মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী এবং ছাত্রদল নামধারি সমাজের চিহিৃত সন্ত্রাসী, তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৭টি মামলা রয়েছে। তানিয়া ও জুবেলের সাথে তানভীরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। তাই শিপলুকে ধর্ষণ ঘটনার মামলায় ফাসানোর জন্য পূর্ব থেকে পরিকল্পনা করে তানভীর। ফলে তানভীর, জুবেল ও তানিয়ার মোবাইল নাম্বারের কল লিস্ট তুললে স্পষ্ট হয়ে যাবে ঘটনাটি।
তাহমিনা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার স্বামী রানা আহমদ শিপলুকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ মামলার আসামী করা হয়েছে। তাই এই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা থেকে তার নিরপরাদ স্বামীর মুক্তি চান এবং ধর্ষণ ঘটনা নাটকের পরিকল্পনাকারি ছাত্রদল নামধারি সন্ত্রাসী তানভীরসহ ধর্ষণ নাটক তৈরিকারিদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়ার দাবি করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এসএমপি পুলিশ কমিশনার ও জালালাবাদ থানার ওসিসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের এব্যাপারে সু-দৃষ্টি কামনা করেন। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন