• ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

দক্ষিণ সুরমা জুড়ে সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ডের ছড়াছড়ি : যাত্রী হয়রানী চরমে

Daily Jugabheri
প্রকাশিত জুলাই ৫, ২০২২
দক্ষিণ সুরমা জুড়ে  সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ডের ছড়াছড়ি : যাত্রী হয়রানী চরমে

যুগভেরী ডেস্ক :::

সিলেট নগরির প্রবেশমুখ দক্ষিণ সুরমা। এখানে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল আর রেলওয়ে স্টেশন। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনকে কেন্দ্র করে রাস্তার উপর স্থাপন করা হয়েছে ১৫/২০টি সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড।

 

প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নজির পূরনো হলেও বর্তমানে এসব সিএনজি স্ট্যান্ডকে ঘিরে গড়ে উঠেছে যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের আস্তানা।

 

দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন স্থানে রাস্তার উপরে এলোপাতারি বাস, ট্রাক, সিএনজি অটোরিক্সা দাড় করিয়ে সৃষ্টি করা হচ্ছে যানজট। যানজটের পাশাপাশি চালকদের মধ্যে একটি অংশ অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে। কদমতলী হুমায়ুন রশিদ চত্বর থেকে মোগলাবাজার সড়ক এবং কদমতলী শাহজালাল সেতুর ওভারব্রীজের নিচ থেকে বিয়ানীবাজার, ঢাকা-দক্ষিণ, গোলাপগঞ্জ সড়কে সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীদের অপ-তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

এ ছাড়া গত করোনাকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত তিনজনের অধিক যাত্রী বহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে সিএনজি চালকরা কদমতলী থেকে বন্দর বাজার জনপ্রতি ৫ টাকা বৃদ্ধি করে। আগে ৫জন যাত্রী নিয়ে জনপ্রতি ১০টাকা করে ৫০টাকায় যাত্রীদের বন্দরবাজার নিয়ে গেলেও বর্তমানে পূনরায় ৫জন যাত্রীর কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫টাকা করে ৭৫ টাকা ভাড়া আদায় করছে। অপরদিকে বন্দরবাজার বদর উদ্দিন আহমদ কামরান চত্বর থেকে কাজিরবাজার সেতু হয়ে কদমতলী আসতে চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২০/২৫ টাকা হারে ভাড়া আদায় করছে।

 

চালকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে উল্টো চালকরা একত্রিত হয়ে যাত্রীদের নাজেহাল করতেও দ্বিদ্বা করেনা। সরেজমিন দক্ষিণ সুরমা ঘুরে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কদমতলী হুমায়ুন রশিদ চত্বরে সিলেট জেলা অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন -৭০৭ এর ব্যানারে একটি সিএনজি স্ট্যান্ড যা আলী প্লাজার সামনে অবস্থিত।  সিলেট জেলা অটো টেম্পু -অটোরিক্সা -চালক শ্রমিক জোট-২০৯৭ এর ব্যানারে আরো দুটি স্ট্যান্ড ।

 

একটি নেওয়া কর্নারের সামনে অপরটি মোগলাবাজার সড়কের মুখে। কদমতলী পয়েন্টে সিলেট জেলা অটো টেম্পু -অটোরিক্সা -চালক শ্রমিক জোট-২০৯৭ এর ব্যানারে আরেকটি সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড। কদমতলী শাহজালাল সেতুর ওভারব্রীজের নীচে সিলেট -বিয়ানীবাজার-ঢাকা দক্ষিণ রোডের যাত্রীদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একই স্থানে ৪টি স্ট্যান্ড। এখানে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির মালিকানাধীন জায়গা ভাড়া নিয়ে  সিলেট জেলা অটো টেম্পু -অটোরিক্সা -চালক শ্রমিক জোট-২০৯৭ এর ব্যানারে দুটি স্ট্যান্ড স্থাপন করেছেন। কুইন্স টাওয়ারের সামনে আরেকটি স্ট্যান্ড রয়েছে।

 

একই স্থানে  জুহি রেষ্ট হাউজের সামনে  সিলেট জেলা অটো টেম্পু -অটোরিক্সা -চালক শ্রমিক জোট-২০৯৭ এর ব্যানারে ১টি ও কদমতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তার অপরপ্রান্তে সিলেট জেলা অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন -৭০৭ এর ব্যানারে  সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড। কদমতলী শাহজালাল সেতুর ওভারব্রীজের নীচে একই জায়গায় ৪টি স্ট্যান্ড থাকায় প্রায় প্রতিদিন এখানে যানজট লেগে থাকার পাশাপাশি যাত্রী হয়রানী চরম আকার ধারণ করেছে। এ স্থানে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা ও এলাপাতারি বাস দাড় করিয়ে যাত্রী উঠানামার কারণে প্রায় প্রতিদিন যানজট লেগে থাকে।

 

এখানে বেশ কয়েকজন চালক দীর্ঘদিনধরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ওভারব্রীজের কুলঘেষা হযরত শাহজালাল সেতু সড়কে উঠার সিড়িঁতে পকেটমারদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীদের একটি বড় সিন্ডিকেট ওভারব্রীজ এলাকায় আস্তানা গড়েছে। খোদ ওভারব্রীজ এলাকায় চারটি স্ট্যান্ডে ৪শত সিএনজি অটোরিক্সা অবস্থান করলেও চালকের সংখ্যা প্রায় হাজারের কাছাকাছি। বেশিরভাগ চালকদের বৈধ কোনো লাইসেন্স নেই। একটি সিএনজি অটোরিক্সা তিন বেলা তিন জন চালক চালাচ্ছে। বর্তমান বন্যার কারণে রাস্তাঘাটের ভগ্নদশাকে পূজিঁ করে চালকরা চলমান ভাড়ার তিনগুন আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে।

 

ওভারব্রীজ এলাকার চারটি স্ট্যান্ডের সভাপতি পরিচয়ধারী কয়েকজন ব্যক্তিকে কেউ কোনোদিন তাদেরকে সিএনজি অটোরিক্সা চালাতে না দেখলেও তারা টাকার বিনিময় সিলেট জেলা অটো টেম্পু -অটোরিক্সা -চালক শ্রমিক জোট-২০৯৭ ও সিলেট জেলা অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন -৭০৭ এর জেলা শাখা থেকে আঞ্চলিক শাখা স্থাপনের অনুমতি এনে অল্পদিনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাচ্ছে। ওভারব্রীজ এলাকায় রাস্তার উপর এলোপাতারি সিএনজি অটোরিক্সা ও বাস দাড় করিয়ে যারা যানজট সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে সিলেট ট্রাফিক বিভাগের ডিসি ফয়ছল মাহমুদের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন