নিজস্ব সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার :: ভাত রান্না না করায় নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে বাড়িতেই মাটি পুঁতে রেখে ছিলেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের সুবাস বাউরী (৪৮)। এ ঘটনার ৩৫ দিন পর বুধবার দুপুরে তার বাড়ির আঙ্গিনার মাটি কুঁড়ে স্ত্রী সুচিত্রা শব্দ করের (৪০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী সুবাস বাউরীকে আটক করেছে।
কমলগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক মহাদেব বাচাড় জানান, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখলা চা বাগানের পশ্চিম লাইনের সুবাস বাউরি গত ২৬ জুন ভাত রান্না না করার অযুহাতে লাকরী কাটার কুড়ালের হাতল দিয়ে তার স্ত্রী সুচিত্রা শব্দ করের পেটে আঘাত করে। এ সময় তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তার ঘরের সাথেই উঠানের এক পাশে গর্ত করে সুচিত্রার লাশ মাটিতে পুঁতে রাখে।
এদিকে দীর্ঘ এক মাস ধরে মায়ের কোন খোঁজ না পেয়ে উপজেলার তিলকপুর এলাকা থেকে মোবাইল ফোনে সুচিত্রার আগের স্বামীর মেয়ে সীমা শব্দকর সুবাস বাউরীর কাছে তার মায়ের খবর জানতে চায়। সুবাস প্রথমে হারিয়ে গেছে বলে কথা উড়িয়ে দেয়। পরে সীমা পাত্রখলা চা বাগানে গিয়ে তাকে বার বার চাপ দিলে বুধবার দুপুরে সে জানায়- তোর মাকে আমি কুড়াল দিয়ে মেরে ঘরের পাশে পুঁতে রেখেছি। এ কথা শুনেই সীমা চিৎকার দিয়ে উঠলে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে আসে এবং ঘটনার জানাজানি হয়ে যায়। এ সময় সুবাস বাউরী পালিয়ে যেতে চাইলে বাগানবাসী তাকে ধরে একটি গাছের সাথে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) শহীদুল হক মুন্সী, কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান, ওসি (তদন্ত) সোহেল রানার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌছে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক সুবাস বাউরী পারিবারিক কলেহের জেরে এই হত্যাকা- ঘটান বলে জানান।
কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত গৃহবধুর লাশ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে। এ ঘটনায় নিহতের আগের স্বামীর মেয়ে সীমা শব্দকর বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।