গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি ::
গোলাপগঞ্জের শরিফগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রে প্রতিপক্ষের হামলায় একজন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল শনিবার (৭ মে) বেলা আড়াইটার দিকে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ১১নং শরিফগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পরের দিন রবিবার (৮ মে) গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন মেম্বার প্রার্থী লায়লী বেগমের ভাই তাজুল উদ্দিন। মামলা নং- ৫২, ০৮/০৫/১৬, ধারা ৩০২/৩৪ দঃবিঃ।
মামলার আসামীরা হলেন- গোলাপগঞ্জের কাদিপুরের আব্দুর রশিদের ছেলে চুনু মিয়া (২৬), গিয়াস উদ্দিনের ছেলে রাসেল মিয়া (২৮), মতিলাল দাসের ছেলে তপন দাস (৩৪) ও রুপম লাল দাস (২০) সহ আরও ১০/১২ জনকে আসামী করা হয়।
জানা যায়, শনিবার দুপুরে ভোট চলাকালীন সময়ে কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হামলা, সংঘর্ষ, ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে মারধর করার খবর পাওয়া গেছে। উক্ত হামলা-সংঘর্ষে একজন নিহত ও ১০জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গোলাপগঞ্জ উপজেলার ১১নং শরিফগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডের প্রার্থী ছিলেন লায়লী বেগম। একই ওয়ার্ডে তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন খুকী রানি দাস কলি। অভিযোগ পাওয়া যায়, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী খুকী রানি দাস কলির লোকজন তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বার বার জাল ভোট প্রদান করার চেষ্টা করলে লায়লী বেগমের সমর্থকরা তা প্রতিহত করেন।
এসময় অভিযোগকারি তাজুল উদ্দিন বলেন, “মেম্বার প্রার্থী খুকী রানী দাস কলি উক্ত নির্বাচনেও একজন প্রার্থী ছিলেন। তাঁর লোকজন তাদের প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট প্রদান করার চেষ্টা করলে আমিসহ আমার বোনের পক্ষে নির্বাচনে দায়িত্বে থাকাকালীন এজেন্ট ফরিদ আহমদ উক্ত নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও তার কোনরূপ প্রতিকার করে নি। ফলে আমার ও আমার আত্মীয় স্বজনরা জাল ভোট প্রদানের প্রতিবাদ করি। পরে খুকী রানীর লোকজন এক জোটবদ্ধ হয়ে আমিসহ আমার বোন মেম্বার প্রার্থী লায়লী বেগম ও তার এজেন্ট শরিফ আহমদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা আমার বোনের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করায় জাবেদ মিয়ার উপর আক্রমন চালায়। এসময় গুরুতর আঘাত পেয়ে মাটিতেই লুটিয়ে পড়েন জাবেদ মিয়া। হামলা চলাকালীন নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যগণ এগিয়ে আসলে হামলাকারিরা স্থান ত্যাগ করে। হামলায় গুরুতর আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে স্থানীয় এম.এ. জি ওসমানী মেডেকিল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।”
তিনি আরোও বলেন, ‘নির্বাচনী হামলায় গুরুতর আহত ব্যক্তিকে সিলেট এম.এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসতাপালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
পরে মৃত জাবেদ মিয়ার লাশ ময়না তদন্তের পর লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক প্রিসাইডিং অফিসার বলেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলাস্থ ১১নং শরিফগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী লায়লী বেগমের উপর হামলা করেছে তারই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী খুকী রানি দাস কলির সমর্থকরা।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, শনিবার গোলাপগঞ্জের ১১নং শরিফগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী লায়লী বেগম ও প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী খুকী রানি দাস কলির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একজন নিহত হয়েছেন ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছে। এঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে। আমরা আসামীদের গ্রেফতারে কাজ করছি।