• ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

৮০ আসন চায় জাতীয় পার্টি আ. লীগকে চাপে রাখার কৌশল

Daily Jugabheri
প্রকাশিত নভেম্বর ১২, ২০১৮

যুগভেরী ডেস্ক: আসন বণ্টন নিয়ে আওয়ামী লীগকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। বর্তমান সংসদে জাতীয় পার্টির আসন ২৯টি। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি ৮০ আসনের দাবি তুলেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আসন সমঝোতার আগে প্রার্থী তালিকা জমা দিতে। এটাও বলা হয়েছে, জিতে আসার মতো প্রার্থী হলে অবশ্যই তাঁদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে নিজের দল, ১৪ দল ও মহাজোটগতভাবে ছয়টি জরিপ করিয়েছেন। ওই জরিপের ভিত্তিতেই জিতে আসার মতো প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সে হিসেবে বর্তমান সংসদে থাকা জাতীয় পার্টির বেশ কিছু এমপির জয়লাভ করা প্রবলভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে। জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপিদের বাইরে দলে তরুণ বা নবাগত জনপ্রিয় অন্য প্রার্থী নেই। সে হিসেবে আসন সমঝোতা বৈঠকে জয়-পরাজয়ের কথা উঠলে জাতীয় পার্টির প্রার্থীসংখ্যা আরো কমে যেতে পারে। এমন সংবাদ দলের মধ্যে প্রচার হওয়ার পর দলের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
সূত্র মতে, জাতীয় পার্টিতে সব সময় দুটি ধারা চলে আসছে। একটি আওয়ামীপন্থী, অন্যটি বিএনপিপন্থী। জাতীয় পার্টিতে থাকা বিএনপিপন্থী অংশটি দলীয় এই অভ্যন্তরীণ বিরোধ আরো উসকে দিচ্ছে। সূত্র বলছে, তাদের অনেকে ইতিমধ্যে বিএনপির একজন বড় নেতা যিনি একসময় জাতীয় পার্টিরও বড় নেতা ছিলেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। অপরদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জাতীয় পার্টির বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত একজন নেতা জানিয়েছেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে আসায় এরশাদ আগের চেয়ে মূল্যবান হয়ে উঠেছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বিএনপি জোটে নির্বাচন করার গোপন সমঝোতা করেছিলেন বলে সে সময় জাতীয় পার্টির একজন এমপি জানিয়েছেন। পরবর্তীকালে জাতীয় পার্টি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট গড়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। সাবেক ওই এমপি জানিয়েছেন, সে সময় জোট বদলের পেছনে ছিল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে বেশি আসন বাগিয়ে নেওয়াসহ আরো কিছু লেনদেন। আগামী নির্বাচনেও আসন বাগাতে একই কৌশলে গোপনে দুই জোটের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন এরশাদ।
একটি সূত্র জানায়, আসন বণ্টন নিয়ে জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে দুই পন্থীদের বিরোধ ধীরে ধীরে জমে উঠলেও কাউকে না থামানোর কৌশল নিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। তিনি এ বিরোধকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগের ওপর চাপ রাখতে চান। শেষ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের মহাজোটে থাকলেও জোট ত্যাগের হুমকি দিতে পারেন।
এরশাদ ঢাকা-১৭ ও সাতক্ষীরা-৪ আসনে মনোনয়ন ক্রয় করেছেন। ঢাকা-১৭ আসনটি এবার বিএনপির সাবেক নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাকে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৪ শ্যামনগর আসনে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় প্রার্থী আছেন দশম সংসদের এমপি জগলুল হায়দার। ফলে এরশাদের এ দুটি আসন পাওয়া অনেকটাই অনিশ্চিত। এ নিয়ে মতবিরোধ হতে পারে আওয়ামী লীগের সঙ্গে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঢাকা-১৮ আসনের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন। এ আসনের বর্তমান এমপি সাহারা খাতুন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের দলের ভেতরে কোনো বিরোধ নেই। কোনো পন্থী নেই। আমাদের সিদ্ধান্ত ঠিক আছে, আমরা মহাজোটে নির্বাচন করব। তবে এখন পর্যন্ত আসন বণ্টন হয়নি। এ নিয়ে আমরা দ্রুত আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে বসব।

সংবাদটি শেয়ার করুন