দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধি : দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে আওয়ামীলী ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে জামাত শিবিরের সংঘর্ষে ১ ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম এমাদ (২৪)। তিনি দক্ষিণ সুরমা থানার বলদী গ্রামের মৃত বশির আহমদের পুত্র। এ ঘটনায় নিহতের ভাই কালাম হোসেন বাদী হয়ে জামাত শিবিরের ১১ জন নেতাকর্মীর নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে অভিযুক্ত করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, গতকাল ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিকে স্বাগত জানিয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন একটি আনন্দ র্যালি বের করে। সকাল ১১টার দিকে র্যালিটি দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে গেলে জামাত শিবিরের মিছিলের মুখোমুখি হয়। তখন উভয়পক্ষের কিছু উশৃঙ্খল নেতাকর্মী বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা দেখা দেয় দুপক্ষে। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। ককটেল বিস্ফোরন, ধারালো অস্ত্রের ঝনঝনানি ও গুলির শব্দে এলাকায় আতংক নেমে আসে। প্রায় আধা ঘন্টা দুপক্ষে তুমুল সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে সংঘর্ষকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সংঘর্ষে আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তার মধ্যে গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী এমাদের অবস্থা ছিল আশংকাজনক। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাত ১০টার দিকে জানাজা শেষে নিজ গ্রাম বলদীতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এদিকে ছাত্রলীগ কর্মী এমাদ হত্যার ঘটনায় পুরো দক্ষিণ সুরমায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিহতের ভাই কালাম হোসেন বাদী হয়ে রাত সাড়ে ১১টায় জামাত শিবিরের ১১ জন নেতাকর্মীর নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে অভিযুক্ত করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা সবাই সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বাসিন্দা। তারা হলেন- পশ্চিমভাগ গ্রামের চিকন আলীর পুত্র লালাবাজার ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সহ সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন, শাহ সিকন্দর গ্রামের মৃত আবরার আলীর পুত্র দক্ষিণ সুরমা উপজেলা জামাতের সদস্য মতিউর রহমান, খোজারখাইল গ্রামের মৃত বশির মিয়ার পুত্র দক্ষিণ সুরমা জামাতের সদস্য আব্দুল কুদ্দুছ, বলদী গ্রামের মনির উদ্দিনের পুত্র নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, লালারগাঁও গ্রামের মোক্তার হোসেনের পুত্র আখতার ফারুক, পশ্চিমভাগ গ্রামের মৃত মোঃ আব্দুস সালামের পুত্র দক্ষিণ সুরমা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ফখরুল ইসলাম, খোজারখাইল গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আব্দুল বারীর পুত্র দক্ষিণ সুরমা থানা ইসলামী ছাত্র শিবির সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুস শহীদ, লালারগাঁও গ্রামের তুরাব আলীর পুত্র ইমরান আহমদ, পশ্চিমভাগ গ্রামের সবিল মিয়ার পুত্র কাওসার আলী, শাহ সিকন্দর গ্রামের আমানুল মোমিনের পুত্র এহসানুল মোমিন ও বলদী গ্রামের শফিকুর রহমানের পুত্র সৈয়দ কাওছার আহমদ।
এ ব্যাপারে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ.কে.এম. ফজলুল হক। তিনি জানান, আটক ৪ আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাকী আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযানে রয়েছে। এলাকার নিরাপত্তায় বিপুল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।