নিজস্ব প্রতিবেদক :: দৈনিক যুগভেরীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন কবি ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অপূর্ব শর্মা। দীর্ঘ চৌদ্দ বছর যুগভেরীর নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পর তিনি ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন। দৈনিক যুগভেরীর সম্পাদক ও প্রকাশক ফাহমীদা রশীদ চৌধুরী ১ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে তাঁকে নিয়োগ প্রদান করেন।
মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানার হরিনাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহনকারী অপূর্ব শর্মা ২০০১ সালের ১ আগস্ট দৈনিক যুগভেরীতে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, চীফ রিপোর্টার, সহ.বার্তাসম্পাদক, বার্তা সম্পাদক-এর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৬ সাল থেকে তিনি নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
কলেজে অধ্যয়নকালীন সময়েই অপূর্ব শর্মা যুক্ত হন সাংবাদিকতার সাথে। মৌলভীবাজার থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক পাতাকুড়ির দেশ পত্রিকার আঞ্চলিক সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি হয় তার। একই সময়ে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যুক্ত হন শ্রীমঙ্গল থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘খোলাচিঠি’ পত্রিকার সাথে। ১৯৯৯ সালের শেষদিকে জাতীয় দৈনিক ‘প্রভাত বেলা’র শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে যোগ দেন শ্রীমঙ্গল থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘শ্রীভূমি’ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক হিসেবে। পাশাপাশি সিলেট থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘বার্তাবাহক’ পত্রিকার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন প্রায় এক বছর। দৈনিক ‘যুগান্তর’ বের হলে এর শুরু থেকে ২০০১ সালের জুলাই পর্যন্ত পালন করেন শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধির দায়িত্ব।
২০০৩ সালে দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন তিনি। এর পরের বছর যুক্ত হন দৈনিক আজকের কাগজের সঙ্গে। ২০০৫ সাল থেকে বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আজকের কাগজের সিলেট অফিসের ব্যুরো চীফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও সাপ্তাহিক মৃদুভাষণ, সাপ্তাহিক ২০০০-এর বিভাগীয় প্রতিনিধি, শীর্ষ নিউজ এবং নিউজ বাংলাদেশ ডটকমের ব্যুরো চীফের দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতার সাথে।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি কবি, লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক হিসেবে তিনি খ্যাতিমান। ১৯৯৫ সালে তার লেখা প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক মনুবার্তা পত্রিকায়। ২০০৬ সাল থেকে তিনি শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা। ২০০৯ সালের অমর একুশে বইমেলায় তার প্রথম গবেষণাগ্রন্থ ‘অনন্য মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি’ প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত তার লেখা ১৪ টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্য দুটি গ্রন্থ অনুবাদ হয়েছে ইংরেজি ভাষায়। সম্পাদনায়ও তিনি সিদ্ধহস্ত। তাঁর সম্পাদনায় এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে ২১টি গ্রন্থ। তার সম্পাদনায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে সাহিত্য পত্রিকা অভিমত।
কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম দুটি পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। ‘সিলেটের যুদ্ধাপরাধ ও প্রাসঙ্গিক দলিলপত্র’ গ্রন্থের জন্য ২০১০ সালের এইচএসবিসি কালি ও কলম পুরস্কার এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতায় শ্রেষ্ঠ সাংবাদিক হিসেবে ২০১৩ সালে লাভ করেন বজলুর রহমান স্মৃতিপদক। তাঁর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা নিয়ে ২০১৬ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে টাওয়ার অব হেমলেটস কাউন্সিলের মাসব্যাপি সিজন অব বাংলা ড্রামায় ছান্দসিকের আয়োজন চা বাগানে গণহত্যা ১৯৭১ অনুষ্ঠানে গেস্ট স্পীকার হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এছাড়াও প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি ভারতে চারটি অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন।
করোনাকালে সাহিত্যিক হিসেবে তিনি পালন করছেন অগ্রণী ভূমিকা। গান এবং কবিতার মাধ্যমে মানুষের মনে সাহস ও আশার সঞ্চার করে চলেছেন তিনি।