যুগভেরী ডেস্ক ::: অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসছে সিলেট। দুই দিন পর মিললো বিদ্যুতের দেখা।
তাও দু’টি ফিডারে নগরের কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেরেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের ডিভিশন-২ এলাকার আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, মিরাবাজার, উপশহর, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া, সুবহানিঘাট, কাজিটুলা, বালুচর, টিলাগড় এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) সিলেটের কুমারগাঁও উপ কেন্দ্রের ইনচার্জ মোস্তাকিম বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে সিলেট নগরের উপকণ্ঠ কুমারগাঁও বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) ১৩২/৩৩ কেভি উপ-কেন্দ্রে ২৫ দশমিক ৪১ এমবিএ দু’টি ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে যায়। এতে সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে রাতের মধ্যেই মেরামতের চেষ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা করা হলেও পারা যায়নি। অবশেষে বুধবার সন্ধ্যার পর আম্বরখানা ও এমসি কলেজের দু’টি ফিডার চালু করতে সক্ষম হয়েছি। অন্যগুলো পর্যায়ক্রমে মেরামত করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আপাতত লোড শেডিংয়ের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সারা সিলেট অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। দুর্ভোগ কাটাতে ঢাকা থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের দু’জন, প্রোটেকশন বিভাগের এসি, নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী দল সিলেটে এসে মেরামত কাজ শুরু করেন। তাদের সঙ্গে পিজিসিবি, পিডিবি ও আরইবির কারিগরি দলের অন্তত ২শ’ লোকজন মেরামত কাজে অংশ নেন। কারিগরি দলের সদস্যরা কম ক্ষতিগ্রস্ত ট্রান্সফরমার নিয়ে কাজ করেন। এরপর সিলেট মহানগরীর কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে সক্ষম হন। এছাড়া অন্য এলাকাগুলোতেও পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
তবে একটি ট্রান্সফরমার থেকে সরবরাহ নিশ্চিত করা হলে ওই ট্রান্সফরমারের এলাকা ছাড়াও অন্য এলাকাগুলোতে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উপ-কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের দু’টি মেঘা ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্তের কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সিলেটের অধীনে চারটি ডিভিশন ছাড়াও জগন্নাথপুর এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ডিভিশন-১ এর অধীনে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এলাকা, আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজারসহ সুরমা নদীর উত্তরপার।
ডিভিশন-২ এর অধীনে কুমারপাড়া, নাইওরপুরল, উপশহর, মিরাবাজার, সুবানীঘাট, বালুচর, মেন্দিবাগ, তের রতন এলাকা।
ডিভিশন-৩ এর অধীনে সিটি করপোরেশন এলাকার ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড ও দক্ষিণ সুরমার কিছু এলাকা।
ডিভিশন-৪ এর অধীনে ডিভিশন কুমারগাঁও, টুকেরবাজার, বাধাঘাট, মদিনা মার্কেটসহ সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা। এছাড়া সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর আবাসিক এরিয়া বিদ্যুৎহীন রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।
অগ্নিকাণ্ডে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় প্রায় সাড়ে চার লক্ষাধিক গ্রাহককে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের কুমারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড (পিজিসিবি) ১৩২/৩৩ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ উপকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে দমকল বাহিনীর ৭টি ইউনিট একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও দু’টি উচ্চ ক্ষমতার ট্রান্সফরমার, সার্কিট ব্রেকার, কন্ট্রোল প্যানেল পুড়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
গ্রিড উপ-কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগুনে ৭০ কোটি টাকা মূল্যের ২৫/৪১ এমবিএ দু’টি ট্রান্সফর্মার পুড়ে গেছে। সেই সঙ্গে ৩৩ কেভি ফিডার ও বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।