• ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

জৈন্তিয়া জামিয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা : জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ

Daily Jugabheri
প্রকাশিত নভেম্বর ২২, ২০২০
জৈন্তিয়া জামিয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা : জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগ

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি :  জৈন্তাপুরে মহিলা মাদ্রাসার বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্ছার এলাকাবাসী। সাবেক পরিচালক জামায়াত নেতার সেচ্ছাচারিতায় মাদ্রাসা এখন প্রায় ধংসের পথে। মাদ্রাসায় সার্বিক শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে দুইটি ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের একাত্বতা প্রকাশ।
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা সদরে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জৈন্তিয়া জামিয়া ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠাকালিন সময়ে এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিবর্গের সম্পৃক্ততা থাকলেও হঠাৎ করে নিজের স্বার্থসিদ্ধি হাসিলের লক্ষ্যে তথাকতি পরিচালক জামায়াত নেতা এডভোকেট আব্দুল আহাদ মাদ্রাসার নামে ব্যবসার ফন্দি শুরু করেন। শিক্ষানুরাগী প্রতিষ্ঠাকালিক ব্যাক্তিদের সরিয়ে নিজের আত্মীয় স্বজনদের কমিটির সদস্য করে শুরু হয় মাদ্রাসার নামে বাণিজ্য। স্থানীয় বিশিষ্ট্য ব্যাক্তিদের দেওয়া জমি আর একজন প্রবাসীর টাকায় গড়ে উঠা ভবনে মাদ্রাসার পাঠদান চলে আব্দুল আহাদের একক কর্তৃত্বে। কমিটিতে স্থান নেই দাতা কিংবা প্রতিষ্ঠাকালিন কোন সদস্যের। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সময় অনিয়ম-দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় এরই মধ্যে বেশ কয়েক জন সুপারকেও রদবদল করেছে তিনি।
মানবিক কারনে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধংসের হাত থেকে রক্ষা করতে ফুসে উঠেন এলাকার শিক্ষানুরাগী সাধারণ মানুষ। মহিলা মাদ্রাসা নিয়ে এডভোকেট আব্দু আহাদের বাণিজ্য ও বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিলে গত ১৬ সেপ্টম্বর তিনি সরেজমিন তদন্ত করেন এবং ৫ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদেনে উল্লেখ করেন, মূলত মাদ্রাসার হিসাবটি সুপার ও সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটা কখনো মানা হয়নি। উক্ত হিসাবে আগত সংগৃহিত তহবিলের আয় ব্যয় ও আগত নগদ টাকার হিসাব বিধি মোতাবেক পরিচালিত হয় নাই বা কোন রেকর্ড মেইনটেইন করা হয় নাই। সংগঠনের একক কর্তা ব্যাক্তি হিসাবে তার নিকট আত্মীয়করণের মাধ্যমে সংগঠনটি দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যেহেতু মাদ্রাসাটি তার নিজ নামীয় ভূমির উপর প্রতিষ্টিত কাজেই সংগঠনের মাধ্যমে পরিচালিত বা সংগঠনের মাদ্রাসা বলে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে দান-অনুদান ও নগদ টাকা গ্রহন করে এলাকাবাসীর সম্পৃক্ততা ছাড়াই নিবন্ধনহীন এই সংগঠনের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় এলকাবাসী সহ সর্বসাধারণের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।
সর্ব শেষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার’র সাথে এলাকাবাসী বৈঠক করলে তিনি মাদ্রাসার পাঠদানের কথা বিবেচনা করে বর্তমান সুপারকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করেন এবং সহকারী সুপার হিসেবে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। একই সাথে সম্প্রতি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গঠিত কমিটি মাদ্রাসা পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করার প্রতি আহবান জানান।
এরই অংশ হিসেবে ২১ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আখলাকুল আম্বিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য হানিফ আহমদের পরিচালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিরাজুল ইসলাম, আব্দুস শুকুর, হায়দার আলী, দেলোয়ার আহমদ মাসুক, কবির আহমদ, আলহাজ্ব জহির উদ্দিন, আব্দুর রহমান,ইউ/পি সদস্য ইসমাইল আলী, আব্দুস শুকুর হরুহুনা, আলাউদ্দিন আলাই, পারভেজ আহমদ, জহিরুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মুহিব আলী, আব্দুল মালিক পাখি, আলতাফুর রহমান, হোসনে আহমদ, আবুল হোসেন, সাব্বির আহমদ, আব্দুল করিম, ফিরুজ আলী, বতাই মিয়া, আব্দুল হান্নান, মাসুক আহমদ, মাসুদ আহমদ, আবুল হাসিম, তালহা আব্দুল্লাহ বাবু, তাফসিরুল ইসলাম পলাশ, মোস্তাক আহমদ, মনজুর আহমদ, আজিজুর রহমান, আব্দুল হান্নান প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন