সিলেট শহরতলীর কাকুয়ারপাড়ের আফরোজ আলী অভিযোগ করেছেন সংবাদ সম্মেলনে তিনিসহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন কাকুয়ারপাড়ের সিএনজি অটোরিকশাচালক আব্দুল মন্নানের স্ত্রী অজিফা বেগম। যে সব ঘটনায় তিনি ও এলাকাবাসীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই, সেসব বিষয়ে তিনি মিথ্যা বক্তব্য রেখেছেন। বুধবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অজিফা বেগমের মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি একজন অত্যাচারী মহিলা হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এয়ারপোর্ট থানার সাবেক এএসআই ও সিলেটের আলোচিত রায়হান হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আশেক এলাহীর সঙ্গে তার সখ্যতা দীর্ঘ দিনের। তিনি নানাভাবে আমাকেসহ এলাকার লোকজনকে হয়রানী করেছেন। আশেক এলাহীকে সঙ্গে নিয়ে অতীতে ওই মহিলা এলাকার লোকজনকে শাসিয়ে রাখতেন। সন্তানদের নিয়ে নিজের সম্পত্তিতে বসবাস করেন অজিফা। ৪ বছর আগে এখানে জায়গা কিনে বাড়ি করেছেন। গ্রামে সরকারী ভূমি রয়েছে। আজ থেকে ১৫ বছর আগে এই ভুমিতে আমিসহ স্থানীয়রা অস্থায়ী দোকান ঘর নির্মান করি। অজিফা জমি কিনলেও তার সাথে আমার কোনো বিরোধ নেই। সম্প্রতি কাকুয়ারপাড় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতিকে ব্যবহারের জন্য আমি ভুমিটি ছেড়ে দেই। কারণ- এটি সরকারী ভূমি। জনস্বার্থে ব্যবহারের জন্যই আমি সেটি তাদের দিয়েছি। এতে অজিফা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে নানাভাবে হেনস্থার চেষ্টা করেন। এমনকি ২৩ আগষ্ট আদালতে মামলাসহ থানায় জিডিও করেন।
তিনি বলেন, আমি সম্মানিত লোক। পঞ্চায়েত কমিটির উপদেষ্টাও। অজিফার অন্যায় আক্রমনের পর আমি বিব্রত। এলাকায় একটা অবস্থান আছে। মান-সম্মানের ভয়ে আমি সরাসরি তার মুখোমুখি না হয়ে এলাকার মানুষকে দিয়ে নিবৃত্তের চেষ্টা করি। তখন এয়ারপোর্ট থানার এএসআই আশেক এলাহীই প্রায়ই অজিফার পক্ষে এলাকবাসীকে শাসাতো। আমরা ভয়ে থাকতাম। গত ১১ নভেম্বর এয়ারপোর্ট থানার ওপেন হাউজ ডে ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন ইমরান বক্তব্যকালে অজিফার বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারকে অবগত করেন। আশেক এলাহীর সাথে সম্পর্কের বিষয়টিও জানান। পরে কাকুয়ারপাড়ের ৬৩ নাগরিকের স্বাক্ষরে একটি স্মারকলিপিও কমিশনারকে দেয়া হয়। স্মারকলিপিতে এলাকার মানুষ অজিফা ও তার মেয়ে রোমানা বেগমের বিতর্কিত কর্মকান্ড সর্ম্পকে অভিযোগ করেছেন। আমার ধারনা- অজিফা এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমি ও কাকুয়ারপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজমুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আলীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, এলাকার মানুষ অজিফা ও তার মেয়ে রোমানার বিরুদ্ধে আশেক এলাহীর সখ্যতার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। একই সঙ্গে মধ্যরাতেও তাদের আশপাশের সন্ত্রাসীরা বাসায় যাওয়া-আসা করে বলে অভিযোগ করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান রুবেলের সাথে ৮ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয় অজিফার মেয়ে রোমানার। পরে মিথ্যা অজুহাত স্বামীর ঘর থেকে সে চলে আসে। এখন কাবিনের টাকার জন্য রুবেল ও তার পরিবারকে হেনস্থা করছে। রুবেলকে জেলের ভাত খাওয়াবে বলে হুমকি করলে ২ নভেম্বর রোমানার বিরুদ্ধে জিডি করেছে রুবেল। স্থানীয়রা প্রতিবাদ গালিগালাজসহ মামলার ভয় দেখায়। অজিফার বড় ছেলে অপু মাদকাসক্ত। সে এলাকায় বহিরাগতদের নিয়ে মাদকের হাট বসায়। প্রকাশ্য মাদক সেবন করে। তার এসব অপকর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অপু ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কর্মকান্ডে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। অজিফার ছোটে ছেলে রফু সম্প্রতি পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে। সে এখন আমিসহ গ্রামের মানুষের বিরুদ্ধে পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে। আমি এখন আতঙ্কগ্রস্ত। মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে অজিফা ও রোমানা আমিসহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। তাদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। তারা শান্ত পরিবেশকে বিষাক্ত করছে। তিনি অজিফা ও তার ছেলেমেয়েদের অপকর্মগুলো তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। পাশাপাশি তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।