• ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

পল্লীবিদ্যুতের অস্থায়ীকর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত

Daily Jugabheri
প্রকাশিত নভেম্বর ২৭, ২০২০
পল্লীবিদ্যুতের অস্থায়ীকর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত

পল্লীবিদ্যুতের অস্থায়ীকর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ পল্লীবিদ্যুতের একজন অস্থায়ী কর্মী একটি সংযোগ দিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় ওই কর্মীর বাবা বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) অখিল কুমার সাহাসহ ওই কার্যালয়ের সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সর্দারপুর গ্রামের এনামুল হকের বাড়িতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর পাভেল মিয়া একটি সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন সদর উপজেলার গোধারগাঁও গ্রামের আবুল কালামের ছেলে পাভেল মিয়া (২১)। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত পাভেল মিয়া ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গত প্রায় আড়াইমাস ধরে চিকিৎসাধীন আছেন।
গত ১৯ নভেম্বর সুনামগঞ্জ সদর আমলগ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন পাভেল মিয়ার বাবা আবুল কালাম। আদালতের বিচারক মামলাটি এজহার হিসেবে গ্রহণের জন্য সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসিাকে আদেশ দিয়েছেন। মামলা দায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির মোহাম্মদ এনামুল হক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিভাগীয় জিএম প্রকৌশলী মো. হেমায়েত হোসেন বিশ্বাস, সহকারী জিএম মো. আবদুল বাসেদ, প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম, সহকারী জিএম মো. মনোয়ার হোসেন, কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম, কর্মচারী (লাইনম্যান) মুরাদ হোসেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তাঁর ছেলে পাভেল মিয়া গত এক বছর ধরে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে গ্রাহকদের নতুন বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ লাগানোর কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠানের জিএম অখিল কুমার সাহার নিদের্শেই তিনি এক কাজ করছেন। ঘটনার আগের দিন অখিল কুমার সাহা ও মুরাদ হোসেন সর্দারপুর গ্রামে এনামুলের বাড়িতে একটি মিটার সংযোগ প্রদানের জন্য দায়িত্ব দেন পাভেল মিয়া ও ফারুক মিয়াকে। ফারুক মিয়াও একইভাবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাজে আছেন। পরদিন তারা দুজন ওই গ্রামে মিটার লাগাতে যান। পাভেল মিয়া মিটারটি বোর্ডে স্থাপন করার পর সংযোগ দিতে খুঁটিতে ওঠার আগে লাইনম্যান মুরাদ হোসেনের কাছে মেবাইল ফোনে লাইনে বিদ্যুৎ আছে কি-না জানতে চান। বর্তমানে লাইন বন্ধ আছে জানিয়ে পাভেলকে কাজ করতে বলেন মুরাদ। তার আশ্বাসে পাভেল খুঁটিতে ওঠে মেইন লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এ সময় ফারুক মিয়াসহ অন্যরা তাকে মূমুর্ষু অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতলে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে রাতেই ভর্তি করা ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। বর্তমানে তিনি সেখানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
মামলার এজহারে বাদী আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার পরদিন সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তারা তাঁর বাড়িতে গিয়ে জানান, পাভেল মিয়া অবৈধভাবে একটি সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের একটি লিখিত দেওয়ার জন্য হুমকি দেন কর্মকর্তারা। আবুল কালাম বলেন, আমার ছেলে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ দিতে গিয়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে। কিন্তু শুরু থেকে সমিতির কারো কোনো সহযোগিতা পাইনি। চিকিৎসকেরা বলেছেন পাভেলের শরীরের ৮০ভাগ পুড়ে গেছে। তার চিকিৎসায় এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ঋণ করতে হয়েছে। আমি এখন অসহায় অবস্থায় আছি।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) অখিল কুমার সাহা বলেন,‘পাভেল মিয়া নামে তাদের কোনো অস্থায়ী বা স্থায়ীকর্মী নেই। তাকে তিনি চেনেনও না। তবে বিষয়টি কিভাবে ঘটল তাঁরা সেটি তদন্ত করছেন। মামলা দায়েরের বিষয়টি তিনি শুনেছেন বলে জানান।’

সংবাদটি শেয়ার করুন