জকিগঞ্জ প্রতিনিধি : জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের মাইজগ্রাম মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত খেলোয়াড় রাহাতের পিতা মামলা দায়ের করেছেন। খেলার আম্পায়রকে ১ নং আসামী এবং বুরহানপুর লাল সবুজ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাইম উদ্দিনকে ২ নং আসামী করে মোট ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে জকিগঞ্জ থানায় গতকাল মামলাটি দায়ের করেন তিনি। জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখনও কাউকে আটক করা হয়নি তবে আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১০ জানুয়ারি জকিগঞ্জের বারহাল ইউনিয়নের মাইজগ্রাম মাঠে অলস্টার ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে বুরহানপুর লাল সবুজ ক্রিকেট দলের মোকাবেলা করছিল চক বুরহানপুর ক্রিকেট টিম। ব্যাটিংয়ে থাকা চক বুরহানপুর ক্রিকেট টিমের একজন ব্যাটসম্যান আউট হলে তিনি সিদ্ধান্ত না মেনে আম্পায়ারের সাথে বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে নতুন কোন ব্যাটসম্যান মাঠে প্রবেশ না করায় নিয়মানুযায়ী আম্পায়র বুরহানপুর লাল সবুজ ক্রিকেট টিমকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন চক বুরহানপুর ক্রিকেট টিম ও তার সমর্থকেরা। সাথে সাথে তারা মাঠে ঢুকে পড়েন এবং আম্পায়ারের উপর চড়াও হন। তখন টুর্ণামেন্ট পরিচালনা কমিটি তাদেরকে বাধা দিলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চক বুরহানপুর ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড় রাহাতের মাথায় স্ট্যাম্পের সজোরে আঘাত লাগে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এতে উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করছে। তবে গতকাল রাহাতের পিতা বাদী হয়ে আম্পায়ার ও লাল সবুজ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাইম উদ্দিনসহ ১৭ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে, খেলা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, চক বুরহানপুর ক্রিকেট টিমের প্রতিষ্ঠাতা মনন আহমদ বারহাল শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করে জোরপূর্বক তার দলের জন্য জয় ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। দলে খেলেন তার পুত্র হিমন আহমদ। হিমন বারহাল কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক। খেলার আগে মনন আহমদ ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য বুরহানপুর লাল সবুজ ক্রিকেট টিমের অধিনায়কসহ অন্যান্য খেলোয়াড়দের লোভনীয় অফার দিয়েছেন বলে তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তিনি প্রতিপক্ষ বুরহানপুর লাল সবুজ ক্রিকেট টিমের অধিনায়ককে প্রাণে হত্যার হুমকিও প্রদান করেন। শেষ পর্যন্ত সব নিময়নীতি ভঙ্গ করে খেলার মাঠে হামলা চালায় তার বাহিনী। এতে নিহত হয় রাহাত। মামলার সঠিক তদন্ত করে নিরপরাধদের অব্যাহতি দিয়ে প্রকৃত আসামীদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান তারা।