শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা, লুটপাট
বিন্দু তালুকদার,সুনামগঞ্জ থেকে
সুনামগঞ্জের শাল্লার উপজেলার সংখ্যালঘু নোয়াগাঁও গ্রামে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক সমর্থকদের হামলা লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দিরাই ও শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি’র) বিরুেদ্ধ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বহুল আলোচিত শাল্লা ঘটনার ২০ দিন পর ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে দুই থানার ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দিরাই থানার ওসি আশরাফুল ইসলামকে মৌলভীবাজারে জেলায় বদলী করা হয়েছে। তবে শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করে বরিশাল রেঞ্জে বদলী করা হয়েছে । সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন,‘ দিরাই থানার ওসি আশরাফুল ইসলামকে মৌলভীবাজারে জেলায় বদলী করা হয়েছে। শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করে বরিশাল রেঞ্জে বদলী করা হয়েছে। ’ প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ শাল্লা নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন নামের এক তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে মাওলানা মামনুল হককে কটাক্ষ করে কথিত পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮ টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর করেছে। এসময় গ্রামের ৫ টি মন্দির ভাংচুর করা হয়। ১৭ মার্চ বুধবার সকাল ৯ টায় তা-ব চালানো হয়। এই ঘটনায় ১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার থানায় দুটি পৃথক মামলা করা হয়। শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম বাদী হয়ে ১৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা করেন। নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর পক্ষে অন্য মামলাটি করেন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল। নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলায় পুলিশ ৩৮ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে। অন্যদিকে গত ১ এপ্রিল সেই অভিযুক্ত ঝুমনের মা নিভা রানী দাস বাদী হয়ে ৭২ জনকে আসামী করে আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাল্লা জোনের বিচারক শ্যাম কান্ত সিনহা’র আদালতে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, শাল্লার উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের হামলার দুই দিন আগে ১৫ মার্চ সোমবার সুনামগঞ্জের দিরাই স্টেডিয়ামে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বক্তব্য দেন। এসময় ধর্মীয় উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন মাও মামুনুল হকসহ হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা।