• ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শ্রীমঙ্গলে স্ত্রীকে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে স্বামী

Daily Jugabheri
প্রকাশিত মে ২০, ২০২১
শ্রীমঙ্গলে স্ত্রীকে হত্যার পর বস্তাবন্দি করে স্বামী

নিজস্ব সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার ::::
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সিন্দুরখান ইউনিয়নের উদনাছড়ার ব্রিজের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মঙ্গলবার নাম-পরিচয়হীন নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানাপুলিশ মসুদ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। তিনি উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত এখলাস মিয়ার ছেলে এবং ওই নারীর স্বামী বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ জানায়, নাম-পরিচয়হীন অবস্থায় উদ্ধার করা গৃহবধূর নাম ডলি আক্তার (২০)। সে ঝিনাইদহ সদর থানার বধনপুর এলাকার মৃত ফেনু মন্ডলের মেয়ে এবং আটককৃত মসুদ মিয়ার চতুর্থ স্ত্রী। ৭/৮ মাস আগে শ্রীমঙ্গল শহরে ডলির সাথে পরিচয় হয় মসুদের। এরপর তারা বিয়ে করে দাম্পত্যজীবন শুরু করেন।
পুলিশ আরও জানায়, মসুদ মিয়া একজন খারাপ চরিত্রের লোক। সে এলাকায় সুদের ব্যবসা করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। তার আরও একাধিক স্ত্রী রয়েছে। এছাড়াও সে বিভিন্ন মহিলাদের সাথে পরকিয়ার সম্পর্কে জড়িত।
গত ১৭ মে দিবাগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় মসুদ মিয়া ডলিকে কাপড় দিয়ে গলায় চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরের দিন মসুদ শহরের কাপড় ব্যবসায়ী অনিক মিয়ার কাছ থেকে একটি সাদা বস্তা কিনে নেয়। রাত আটটার পর শহরতলির সিন্দুরখান সড়কের সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের ম্যানেজার মনফর মিয়াকে ফোন করে একটি গাড়ি পাঠাতে বলে। মনফর মিয়া সিএনজি চালক বেলাল মিয়াকে মসুদের বাড়ি পাঠালে মসুদ বস্তাবন্দি ডলির লাশ তার সিএনজিতে তুলে।
স্থানীয় সিএনজি চালক বেলাল মিয়া জানায়, সিএনজিতে যখন বস্তাটি তুলা হয় তখন তিনি মসুদকে বস্তার ভেতরে কী আছেন জানতে চান। কিন্তু মসুদ এর কোনো জবাব না দিয়ে চালককে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হুগলীয়া বাজারের দিকে যেতে বলেন। তিনি উদনাছড়ার ব্রিজের উপর উঠার সাথে সাথে সিএনজি থামিয়ে বস্তাটি ব্রিজের নিচে ফেলে দেন মসুদ।
কাপড় ব্যবসায়ী অনিক জানান, মসুদ মিয়া চা পাতা প্যাকেট করবে বলে তাদের কাছ থেকে বস্তাটি কিনে নেন গত (১৭ মে) সোমবার। এই বস্তায় করে তারা কাপড় এনেছিলেন ঈদের আগে। তাই বস্তার মধ্যে তার ভাই জুয়েল মিয়ার নাম লেখা ছিল।
তিনি জানান, বস্তায় তার ভাইয়ের নাম লেখা থাকায় পুলিশ তাদেরকে খুঁজে বের করে।
শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পরিদর্শক আসাদুর রহমান জানান, মসুদ মিয়ার একাধিক স্ত্রী থাকলেও কোনো স্ত্রীর সাথেই তার দাম্পত্য জীবন ভালো ছিল না। সে একজন খারাপ চরিত্রের লোক। তাকে বুধবার ভোররাতে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে উপজেলার উদনাছড়ার ব্রিজের নিচে এলাকাবাসী সাদা বস্তায় বন্দী অবস্থায় অজ্ঞাত এক নারীর লাশ দেখতে পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানাপুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত ডলির গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন