নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ :::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদী থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করা ৫৫ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করে সেগুলো নিলামে বিক্রি করেছিল টাস্ক ফোর্স। এখন নিলামগ্রহীতারা তাদের নির্ধারিত সীমানার বাইরে থেকেও বালু নিচ্ছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর তিনটি বালু মহাল এবার ইজারা হয়নি। এসব মহাল নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় প্রশাসন সেগুলো ইজারা দিতে পারছে না। যে কারণে এসব মহালে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। তবে বিভিন্ন সময় স্থানীয় লোকজন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে নদীর পাড়ে স্তুপ করে রাখে।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১ মে তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহের উপস্থিতি যাদুকাটা নদীর ঘাগটিয়া এলাকায় জব্দ করা ৫৫ হাজার ঘনফুট বালু প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি করা হয়। নিলামে এসব বালু কিনে নেন স্থানীয় বাসিন্দা রহিম উদ্দিনের ছেলে ডালিম মিয়া। নিলামে উল্লেখিত স্থানের বাইরেও আশেপাশে আরও প্রায় এক লাখ ঘনফুট বালু রাখা আছে। এ সব বালু স্থানীয় সাধারণ শ্রমিকেরা তুলে সরকারি জায়গায় রেখেছেন। এখন নিলাম গ্রহীতারা তাদের সীমানার বাইরে থেকেও গরবি মানুষের বালু নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে। সরকারি বালু নিলামের গ্রহিতারা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারেন না।
অভিযোগকারী স্থানীয় বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল হক বলেন,‘নিলামের অজুহাতে এখন সাধারণ গরিব মানুষের তোলা বালুও জোর করে নেওয়া হচ্ছে। এসব লোকজন অসহায়। অথচ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত ডালিম মিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ গণমাধ্যমকে বলেন,‘পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে কাজ করছে। যারা নিলামে জব্দ করা বালু ক্রয় করেছে এতে তাদের একটা অধিকার রয়েছে এবং তারা সেখান থেকেই বালু নেবে। এর বাইরে থেকে বালু নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাকে কেউ বিষয়টি জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। তবে যারা অভিযোগ করেছে, তাদেরও তো নদী থেকে বালু তোলার কোনো বৈধতা নেই।’