• ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

মৌলভীবাজারের অন্ধমনু খালের উপর নেই সেতু : স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ

Daily Jugabheri
প্রকাশিত জুলাই ৭, ২০২১
মৌলভীবাজারের অন্ধমনু খালের উপর নেই সেতু : স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ

যুগভেরী ডেস্ক ::: মৌলভীবাজর সদর উপজেলার রাতগাঁও গ্রামের অন্ধমনু খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় গ্রামবাসীরা নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পারাপারের জন্য সাঁকো নির্মাণ করেছেন।  রাতগাঁও গ্রামের প্রবীণ বিশিষ্ট মুরব্বি মোঃ খোরশেদ মিয়ার উদ্যোগে সমাজকর্মী সুহেল আহমেদ সুবেল, ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ, স্কুল ছাত্র মারুফ মিয়া, গ্রামের কৃষক রুবেল মিয়া, লুবন মিয়া, সাহেল মিয়া ও ছনর মিয়াসহ গ্রামবাসীদের সার্বিক সহযোগিতায় বাঁশের তৈরি এই সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়।   এই বাশের সাঁকো নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা সুহেল আহমেদ সুবেল জানান,  অন্ধমনু খালের উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবী এলাকাসীর দীর্ঘ দিনের। গত বছর আমরা গ্রামবাসীদের পারাপারের জন্য একটি সেতুর দাবিতে মানববন্ধন ও  ১০নং নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরাবরে স্মারক লিপি পেশ করা হয়। সেই সময় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক রাজা গ্রামবাসীকে প্রকৌশলীসহ
সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।  কিন্তু দীর্ঘদিনেও সেতু নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই চলতি
বর্ষা মৌসুমে চলাচলের জন্য বাধ্য হয়ে গ্রামের কিছু পরিবারের কাছ থেকে  তিনশ টাকা করে সংগ্রহ করে ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে বাঁশের তৈরি এই সাঁকো  নির্মাণ করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের দুঃখ কষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে রাতগাঁও  গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি খোরশেদ মিয়া বলেন, রাতগাঁও গ্রামের মাঝপাড়ার উপর  দিয়ে পূর্ব-পশ্চিম বরাবর অন্ধমনু প্রবাহিত হয়ে রাতগাঁও গ্রামকে উত্তর-দক্ষিণে  বিভক্ত করেছে। মাঝপাড়ায় প্রায় ৩০০ পরিবারে প্রায় ৪ হাজার অধিবাসীর বসবাস।  মাঝপাড়ার দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে শমসেরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধোবারহাট  উচ্চ বিদ্যালয়, এলাকার একমাত্র ডিগ্রী কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও বাজার; অন্যদিকে উত্তর পাড়ে রয়েছে মাঝপাড়ার জনগণের জীবিকার অন্যতম আধার বিস্তীর্ণ কৃষি জমি এবং প্রায় ৪০ টি পরিবারের বসবাস। বর্ষাকালে পানিতে টুইটুম্বুর  আর বছরে প্রায় ১০ মাস পানিতে ভরাট থাকে অন্ধমনু । ফলে বছরে ১০ মাসই
এলাকার জনসাধারণের উত্তর-দক্ষিণে যাতায়াতে দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না। কিন্তু বাকি ১০ মাস উত্তর পাড়ের জনসাধারণ ও ছাত্রছাত্রীদের গোবিন্দপুর-মৌলভীবাজার  রাস্তা ধরে অনেক পথ ঘোরে প্রায় ১ ঘন্টা পায়ে হেটে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ বা বাজার হাটে আসতে হয়। একইভাবে দক্ষিণ পাড়ের জনগণকেও একই রাস্তা ধরে ১ ঘন্টা হেটে উত্তর পাড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি, কৃষি কাজের জন্য
উত্তর পাড়ে পৌছাতে হয়। আবার ফসল নিয়ে বিশেষত ধানের বোঝা নিয়ে এতটা পথ ঘোরে আসতে শ্রম, সময় ও আর্থিক খরচও অনেক বেড়ে যায়। অথচ স্বল্প ব্যয়ে অন্ধমনুর উপর পায়ে হেটে পারাপারের জন্য একটি পদচারী সেতু থাকলে মাত্র ৫/৭ মিনিটে উত্তর-দক্ষিণে যাতায়াত করা সম্ভব হতো। পদচারী সেতু হলে উভয় পাড়ের জনসাধারণের জীবনে বিরাট প্রভাব পড়বে। ছাত্রছাত্রীরা যেমন পড়াশুনায় আর উৎসাহিত ও মনোযোগী হবে, তেমনি কৃষিকাজেও ব্যাপক উন্নতি হবে।   সামগ্রিকভাবে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন