• ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১২ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

তিন মাস পর ফের চালু হচ্ছে তাহিরপুরের তিন শুল্কস্টেশন

Daily Jugabheri
প্রকাশিত আগস্ট ২, ২০২১
তিন মাস পর ফের চালু হচ্ছে তাহিরপুরের তিন শুল্কস্টেশন

বিন্দু তালুকদার, সুনামগঞ্জ ::::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া-চারাগাঁও ও বাগলী শুল্কস্টেশন দিয়ে ফের চালু হচ্ছে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানী। এখন বাংলাদেশের পাথর ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি করতে পারবেন। আজ সোমবার থেকে ভারতের ব্যবসায়ীরা চুনাপাথর রপ্তানী শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
রবিবার ভারতের মেঘালয় মাইন ওনার্স এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জুলিও সিজার ও সাধারণ সম্পাদক মাইটার মারউইন ইমেইলের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি জানিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মেঘালয়ের রাজ্যের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন বড়ছড়া সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বাণিজ্য ও সকল ধরনের রপ্তানি কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। সে অনুযায়ী তারা আজ সোমবার থেকে রপ্তানি কাজ শুরু করতে চান। তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতিকে অবিলম্বে অথবা সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
ভারতের মেঘালয় মাইন ওনার্স এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সচিব রাজেশ তালুকদার ও আমদানীকারক গ্রুপের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের।
প্রসঙ্গত, ভারতে করোনা পরিস্থিতি জটিল ও লকডাউনোর কারণে গত ১ মে থেকে তাহিরপুরের বড়ছড়া-চারাগাঁও ও বাগলী শুল্কস্টেশন দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েন প্রায় ৫শত’ কয়লা আমনদানিকারক। এছাড়াও কর্মহীন হয়ে পড়েন আমদানিকারদের প্রায় ৫/৬ হাজার কর্মচারি ও অন্তত ৪০ হাজার শ্রমিক। এছাড়াও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩টি বন্দরের অর্ধলক্ষ মানুষ। পুনরায় চুনাপাথর আমদানি শুরু হওয়ার খবরে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় শ্রমিকদের মধ্যে খুশির হাওয়া বইছে।
তাহিরপুর চারাগাঁও-বড়ছড়া শ্রমিক সর্দার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক বলেন,‘ আমদানী-রপ্তানী বন্ধ থাকায় আমাদের শ্রমিক পরিবারের লোকজন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে। এখনও আমরা খুব কষ্টে আছি। শুনেছি আজ সোমবার থেকে চুনাপাথর আমদানী শুরু হবে। যদি পাথর আমদানী শুরু হয় তাহলে আমরা ৩০/৪০ হাজার শ্রমিক আবারও কাজ করার সুযোগ পাব।’
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সচিব রাজেশ তালুকদার জানান, তাহিরপুর সীমান্তের তিনটি শুল্কস্টেশন দিয়ে আসা চুনাপাথরের মান ভাল, চাহিদাও বেশী। করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে ভারত সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সেদেশের ব্যবসায়ীরা গত ১ মে তিন মাস পাথর রপ্তানী বন্ধ রেখেছিল। পুনরায় চুনাপাথর আমদানি শুরু হবে এমন সংবাদে সবার মুখে হাসি ফিরেছে।’
তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন,‘ তিন মাস পাথর রপ্তানী বন্ধ থাকায় তাহিরপুরের তিন বন্দর এবং ভারতের এই দিকের রপ্তানীকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমাদের অনেকের চুনাপাথর ক্রয় করা ছিল। কিন্তু হটাৎ করে ভারতের ব্যবসায়ী রপ্তানী বন্ধ রাখায় বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে লোকসানে পড়েছেন। এখন ভারতের ব্যবসায়ীরা পাথর রপ্তানী করলে আমাদের লোকসান কমবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরবে। ’
তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার বলেন,‘ তিনটি শুল্কস্টেশন টানা তিন মাস বন্ধ থাকায় আমাদের সব ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল ভারতের মেঘালয়ের ব্যবসায়ীরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন তারা রপ্তানী শুরু করবেন। আমদানী-রপ্তানী শুরু হলে আমাদের ব্যবসায়ীরা বাঁচবে। হাজার হাজার শ্রমিকও কাজ করার সুযোগ পাবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন