• ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৭ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান, জকিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রে মজুত ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট

Daily Jugabheri
প্রকাশিত আগস্ট ১০, ২০২১
নতুন গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান, জকিগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রে মজুত ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট

 

যুগভেরী রিপোর্ট :::
সিলেটের জকিগঞ্জের আনন্দপুরে আবিষ্কৃত ক্ষেত্রে গ্যাসের বিশাল মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছে তেল, গ্যাস অনুসন্ধানে নিয়োজিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাপেক্স।
গ্যাসক্ষেত্রটির সন্ধান জুনের মাঝামাঝিতে পাওয়া গেলেও সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
এ গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়ায় বাপেক্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ক্ষেত্রটিতে মজুত আছে ৬৮ বিলিয়ন (ছয় হাজার ৮০০ কোটি) ঘনফুট গ্যাস। আর দিনে ১০ মিলিয়ন (এক কোটি) ঘনফুটের মতো গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। আগামী ১২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব এ গ্যাসক্ষেত্র থেকে।
সচিবালয়ে দুপুরে ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের দিনে সবচেয়ে বড় সুখবর হলো জকিগঞ্জে নতুন করে একটি গ্যাসফিল্ড বাপেক্সের মাধ্যমে আবিস্কৃত হয়েছে। এই গ্যাসফিল্ড থেকে প্রতিদিন আমরা প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাব।’
৯ আগস্ট জ্বালানি দিবসে এর থেকে বড় উপহার আর কী হতে পারে এমন প্রশ্ন ছোড়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটার মজুত আমরা এ পর্যন্ত যা পেয়েছি, প্রায় ৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত আছে। প্রায় ১২ থেকে ১৩ বছর আমরা গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। এটার আর্থিক মূল্য যদি এখনকার সময়ে যাচাই করি তাহলে প্রায় ১২০০ কোটি টাকার মতো হবে।’
এটা দেশের ২৮তম আবিস্কৃত গ্যাসক্ষেত্র জানিয়ে তিনি বলেন, জকিগঞ্জের তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধানে কাজ চলছে। সেখানেও সম্ভাবনা আছে।
গ্যাস উত্তোলনে কেমন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পাইপ লাইন নির্মাণ হবে। পাইপ নির্মাণ হলে সবকিছু মিলিয়ে আরও দেড় থেকে ২ বছর সময় লাগবে।’
এটাকে বাপেক্সের ‘সাকসেস স্টোরি’ আখ্যা দিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘বাপেক্স আগের চেয়ে অনেক সম্ভাবনার জায়গা তৈরি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘নতুনভাবে অরগানোগ্রাম করে, নতুনভাবে ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরি করছে, আধুনিকভাবে কীভাবে আরও গ্যাস উত্তোলনে যাওয়া যায়।’
বাপেক্স সিলেট গ্যাস ফিল্ডে আরও ১০টি ড্রিলিংয়ের প্রস্তুতি নিয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে সিসমিক সার্ভে ও নতুন করে ড্রিলিংয়ে কাজ শুরু করছি।’
নতুন গ্যাসের সন্ধান পাওয়ায় আবাসিক খাতে গ্যাস দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাড়ির চেয়ে শিল্পকে গ্যাস দিতে চাই। এটা হলো আমাদের মেইন পারপাস।’
বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এটি বাপেক্সের অষ্টম সাফল্য৷ এই কূপে চারটি স্তরে পরীক্ষা করে একটি স্তরে বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য গ্যাস পাওয়া গেছে৷
‘মাটির ২৮৭০ থেকে ২৮৯০ মিটার গভীরে এই গ্যাস স্তর অবস্থিত৷ এই কূপ খননে বাজেট ছিল ৮৬ কোটি টাকা, ব্যয় হয়েছে ৭১ কোটি টাকা।’
মোহাম্মদ আলী জানান, খনির মালিকানা, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় থাকবে বাপেক্স। ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্বে থাকবে জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।
গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর ১৫ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে অনুসন্ধান কূপে সফলতার সঙ্গে ড্রিল স্টিস টেস্ট (ডিএসটি) বা শিখা জ্বালাতে সক্ষম হয় বাপেক্স।
অনুসন্ধানে কূপটির ভেতর ৬ হাজার পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) চাপ পাওয়া গেছে। আর ফ্লোটিং চাপ রয়েছে ১৩ হাজারের বেশি পিএসআই। এখন প্রথম স্তরের পরীক্ষা চলছে।
ক্ষেত্রটির চারটি স্তরে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছিল বাপেক্স।
ভারত সীমান্তঘেঁষা নতুন এই গ্যাসক্ষেত্র সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে। গোলাপগঞ্জ উপজেলা থেকে এর দূরত্ব ৪৬ কিলোমিটার।

সংবাদটি শেয়ার করুন