• ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ভোরে এসে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলল না টিকা : সিলেটে গণটিকাদান ক্যাম্পেইন

Daily Jugabheri
প্রকাশিত আগস্ট ১০, ২০২১
ভোরে এসে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলল না টিকা : সিলেটে গণটিকাদান ক্যাম্পেইন

যুগভেরী রিপোর্ট
সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার ৮১টি করোনা প্রতিরোধী টিকাদান কেন্দ্রের মধ্যে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় একটি। ওই কেন্দ্রে টিকা নিতে ভোরে এসে লাইনে দাঁড়ান শিবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ৪৫ বছর বয়সী ওসমান আলী। তবে দুপুর পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েও তার টিকা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।
ওই কেন্দ্রে ৩০০ জনকে টিকা দেয়ার সক্ষমতা নিয়ে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় গণটিকা ক্যাম্পেইনের কার্যক্রম। তবে কেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর আগেই পুরুষ ও নারীদের দুই লাইনে দাঁড় করিয়ে সিরিয়াল ধরে পর্যায়ক্রমে টিকা দেয়া শুরু হয়। কিন্তু ২ ঘণ্টা যেতে না যেতেই কেন্দ্রটিতে শেষ হয়ে টিকাদান কার্যক্রম। সকাল ১১টার সময় কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবীরা মাইকিং করে জানান কেন্দ্রে আজ আর টিকা দেয়া হবে না, টিকার স্টক ফুরিয়ে গেছে। একই চিত্র নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের।
ফিরে যাবার সময় ওসমান আলী অনেকটা আক্ষেপের সুরেই বলেন, ‘আমি সকালে আলো ফোটার পর পরই টিকা নিতে কেন্দ্রে এসেছি। কিন্তু তিনঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও টিকা পেলাম না। আমার সিরিয়াল আসার আগেই ভেতর থেকে জানানো হচ্ছে- টিকা শেষ। টিকাই যদি না থেকে তাহলে আমাদের এতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হলো কেন?’
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, করোনার টিকা গ্রহণে জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এ কারণে এই কেন্দ্রে টিকা গ্রহীতাদের ভিড় লক্ষণীয় ছিল। তিনি বলেন, ওয়ার্ডের বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দিয়ে আগেই নিবন্ধন করা হয়েছিলো। এর বাইরে অনেকে কেন্দ্রে সরাসরি নিবন্ধন করে টিকা নিতে পেরেছেন। তবে টিকার পরিমাণ কম থাকায় অনেককেই টিকা না নিয়ে কেন্দ্র থেকে ফেরত যেতে হয়েছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গণটিকা কার্যক্রমকে গতিশীল করতে গণটিকা ক্যাম্পেইন শুরু করে সরকার। তবে সারাদেশে আপাতত ১ দিন পরিচালিত হলেও ব্যতিক্রম থাকে সিলেটে। সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ওই গণটিকা কার্যক্রম চলে তিনদিন। গত শনিবার থেকে শুরু হয়ে গণটিকা কার্যক্রম চলে সোমবার পর্যন্ত। তবে সিলেট নগরী গণটিকা ক্যাম্পেইনে ব্যতিক্রম হলেও প্রতিদিনই টিকা না পেয়ে বাড়ী ফিরেছেন লোকজন।
প্রথম দিন শনিবার, দ্বিতীয় দিন রোববার এবং আজ তৃতীয় ও শেষদিন সোমবার নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলোতে ভ্যাকসিন প্রদানের ক্যাম্পেইনে ওসমান আলীর মতো শত শত মানুষ টিকা নিতে খুব সকালে এসে সিরিয়ালে দাঁড়িয়েও টিকা না পেয়ে ক্ষোভ জানিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। টিকা না পাওয়া লোকজন অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট সংখ্যক টিকা প্রদান করায় সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও শেষ পর্যন্ত টিকা নিতে পারেননি। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে তাদেরকে লাইনে দাঁড় করানো কেন হলো-এমন প্রশ্নও করেন তারা।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় চলমান গণটিকা দান প্রসঙ্গে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাতে টিকা থাকায় একদিনের পরিবর্তে নগরীতে ৩ দিন গণটিকা কার্যক্রম চালানো হয়। প্রথমদিন প্রতিটি কেন্দ্রে তিনশ’ জন করে ২২ হাজার ৭৫৩ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ২৪ হাজার ২৯৪ লোককে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উপস্থিতির সংখ্যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হওয়ায় অনেকেই লাইনে দাড়িয়ে বা কেন্দ্রে গিয়েও টিকা দিতে পারেন নি।
তিনি আরও জানান, যাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে তাদের নিবন্ধন আগের দিন করা হয়েছে। উপস্থিত সময়ে কেউ বাদ পড়লে সেখান থেকে কেন্দ্রে আগতদের তাৎক্ষনিক নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি অনেকে না জেনে সরাসরি কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে যান।

সংবাদটি শেয়ার করুন