ছাতক প্রতিনিধি :
সুনামগঞ্জের ছাতক থানাধীন বরাটুকা গ্রামের স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ফিরোজ মিয়া (৪২) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত আরও ১৭ জন। বুধবার দুপুরে সমাবেশ চলাকালীন সময়ে সদ্য গঠিত কমিটির পদ-পদবী নিয়ে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। পরে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফিরোজ মিয়ার মৃত্যু হয়।
নিহত ফিরোজ মিয়া বরাকুটা গ্রাম আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও একই গ্রামের মৃত মতিন মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ এবাদত হোসাইন জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বরাটুকা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ চলাকালীন সময়ে ফিরোজ গ্রুপ ও মিলন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ফিরোজ মিয়া (৪২) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি করা হয়েছে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
ওসি বলেন, সদস্য গঠিত কমিটি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে কোন্দলের সৃষ্টি হয়। সমাবেশ চলাকালে সেই কোন্দল সংঘর্ষে রূপ নেয়। পদ-পদবী ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে ফিরোজ গ্রুপ ও মিলন গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তাদের মধ্যে উচ্চ বাকবিতন্ডা শুরু হলে এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপ হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। প্রথমে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি হলেও শেষ অবধি তা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয় এবং এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এবাদত হোসাইন বলেন, এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিহতের স্ত্রী রেজিয়া বেগম জানান, ‘আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের পদ প্রাপ্তিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিলন ও তার অনুসারীদের গাত্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই কুচক্রিমহল সংঘর্ষের সৃষ্টি করে আমার স্বামীকে টার্গেট করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমি মর্মামহত ও শোকাহত।’
রেজিয়া বলেন, ‘যেহেতু আমার স্বামী একজন আওয়ামী লীগ নেতা, সেহেতু দলের জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দদের সাথে পরামর্শ করে দ্রুত মামলা দায়ের করবো।’
ঘটনা সম্পর্কে জানতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা জানান, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে, এব্যাপারে কেউ মুখ খুলে বিতর্কিত হতে চান না। এমনকি গণমাধ্যমের সামনে কেউই কথা বলতে রাজি হননি।