নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ
২২ বছর পর সুনামগঞ্জের ছাতকে তেরা মিয়া হত্যা মামলায় ফারুক মিয়া ওরফে মধু মিয়া নামের একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ হত্যা মামলায় ৩১ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মহি উদ্দিন মুরাদ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে বসেই রায় শুনেন ২৭ জন আসামি।
দন্ডপ্রাপ্ত ৯ জনের মধ্যে আসামী ফারুক আহমদ ওরফে মধু মিয়াকে পেনাল ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৬মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। তাছাড়া এই একই আসামিকে ৩০৭ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয় ও বাকি ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন আদালত।
আদালত সুত্র জানাযায়, ১৯৯৯ সালের ২২ নভেম্বর তারিখ সকালে ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নে বলারপীরপুর গ্রামের তেতইখালী খালে সেতু নির্মাণের বিরোধকে কেন্দ্র করে আব্দুল হাই আজাদ মছকু মিয়া ও আরজু মিয়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় বন্দুকের গুলিতে আরজু মিয়ার বড়ভাই তেরা মিয়া (৬২) মারা যান ও উভয় পক্ষের ৩০ জন আহত হয়। বন্দুকের গুলিতে গুরুতর আহত তেরা মিয়া সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার তাকে মৃতঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর ছাতক থানায় ৪৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালীন সময়ে ৮ জন আসামি মারা যায় এবং এখনো ১৩ জন আসামি পলাতক রয়েছে। ছাতক থানার তৎকালীন ওসি ২০০৪ সালের ২১ এপ্রিল আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এই মামলায় ২২ জনের স্বাক্ষী গ্রহন করা হয়।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এপিপি গোলাম মোস্তফা বলেন, খালে সেতু নির্মাণের বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বন্দুকের গুলিতে তেরা মিয়া মারা যান। আদালত রায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৮জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৩১ জনকে খালাস দিয়েছেন। রায়ে সন্তুষ্ট বাদীপক্ষ।
তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী সালেহ আহমদ বলেন, রায়ে আমরা খুশি নই। আসামি পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।