
বিন্দু তালুকদার, সুনামগঞ্জ
যে কোন নির্বাচন মানেই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ভোট আদায়ের যুদ্ধ। তেমনি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোটের যুদ্ধে মাঠে নেমেছেন আপন চাচা-ভাতিজা। দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন, সাচনাবাজার ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের আফিন্দী বাড়ির বাসিন্দা মো. বাহাউদ্দিন তালুকদার ও তাঁর আপন ভাতিজা মো. ইকবাল হাসান।
মো. বাহাউদ্দিন তালুকদার আওয়ামী আর্দশের রাজনীতি করেন। তবে তার ভাতিজা মো. ইকবাল হাসান উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। আপন চাচা-ভাতিজার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জামালগঞ্জের দুর্লভপুর গ্রামের আফিন্দী বাড়ি রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে পরিচিত। জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই পরিবারের সদস্যরা। আফিন্দী পরিবারের প্রবীণ রাজনীতিবিদ মরহুম আব্দুল মন্নান তালুকদার ১৯৭০ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁর ছেলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল হক আফিন্দী সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের তিন বারের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনিও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
মরহুম আব্দুল মন্নান তালুকদারের ভাতিজা মরহুম আব্দুস সোবহান আফিন্দী ছিলেন উপজেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান ও সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের দুই বারের চেয়ারম্যান। তাঁর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার গোলাম জিলানী আফিন্দী রাজু উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান। প্রতিটি নির্বাচনেই আফিন্দী বাড়ির সদস্যরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন আপন চাচা-ভাতিজা।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ইকবাল হাসান বলেন,‘ আমি আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলে প্রার্থী হয়েছি। সাধারণ ভোটারগণ আমার সঙ্গে আছেন। চাচার সাথে কথা হয়েছে তিনি নির্বাচন করবেন না। আমার আশা তিনি আমার সাথেই থাকবেন এবং মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিবেন।’
তবে মো. ইকবাল হাসানের চাচা মো. বাহাউদ্দিন তালুকদার বলেন,‘ আমি অনেক দিন ধরে মাঠে আছি। এর আগেও নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিবারিক কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করব না, আমি নির্বাচন করব। ভোটের মাঠে আমার অবস্থান অনেক ভালো।’
মো. বাহাউদ্দিন তালুকদারের চাচা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক আফিন্দী বললেন,‘ আমরা চেষ্টা করছি মো. বাহাউদ্দিন তালুকদার যাতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায় এবং তার ভাতিজাকে যেন সে সহযোগিতা করে।’
সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন,‘সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই জন দলীয় প্রার্থীসহ মোট ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ১৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। তবে এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। ’
উল্লেখ্য, পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. সায়েম পাঠান, জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী আলী নূর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক মো. সেলিম আহমদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুক মিয়া, মিছবাহ উদ্দিন, বিদ্যা রতন বিশ^াস, মো. বাহাউদ্দিন তালুকদার ও তাঁর ভাতিজা মো. ইকবাল হাসান। আগামী ১৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।