• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

পীর হাবিবকে সিলেটবাসীর অশ্রুসিক্ত শেষ বিদায়

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২২
পীর হাবিবকে সিলেটবাসীর অশ্রুসিক্ত শেষ বিদায়

যুগভেরী ডেস্ক ::: শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমানকে শেষ বিদায় জানালো সিলেটবাসী। সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদমিনারে অশ্রুসিক্ত শত শত শুভাকাঙ্খির উপস্থিতি তৈরি করেছিল শোকাবহ পরিবেশ। শেষ বিদায়কালে সবার ছিল একটাই চাওয়া ‘আল্লাহ যেন পরপারে জান্নাতবাসী করেন তাঁকে’।

পীর হাবিবুর রহমানকে শেষ বিদায় জানাতে প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে রবিবার রাত ৮টা থেকে সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদমিনারে জড়ো হতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। রাত ১০টায় তাঁর মরদেহবাহী এ্যাম্বুলেন্সটি এসে পৌঁছায় সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদমিনারে। তখন শহিদ মিনারে অপেক্ষা করছিলেন শত শত শুভাকাঙ্খি। এ্যাম্বুলেন্সের ভেতর পীর হবিবুর রহমানের মরদেহ দেখে অনেক শুভাকাঙ্খি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

এসময় সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু ও শিক্ষাবীদ প্রনব কান্তি দেবের উপস্থাপনায় পীর হবিবুর রহমানের কর্মজীবন নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক লিয়াকত শাহ্ ফরিদী, দৈনিক যুগান্তরের সাবেক ব্যুরো প্রধান রেজওয়ান আহমদ, বাংলাদেশ প্রতিদিন সিলেট অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক শাহ্ দিদার আলম নবেল, প্রথম আলো সিলেট অফিসের সাবেক নিজস্ব প্রতিবেদক উজ্জ্বল মেহেদী। উপস্থিত সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন পীর হাবিবুর রহমানের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর ছেলে আহনাফ ফাহমিন অন্তর ও ছোট ভাই পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি।

এসময় আহনাফ ফাহমিন অন্তর বলেন, ‘তাঁর বাবা সারাজীবন দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্রের কথা লিখে গেছেন। মানুষকে ভালোবেসে তিনি জীবন কাটিয়েছেন। তিনি সবসময় সিলেট ও সুনামগঞ্জের মাটি ও মানুষের গল্প করতেন। শীতের রাতে শহিদমিনারে বিশাল মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে সিলেটের মানুষও তাকে মনপ্রাণ উজাড় করে ভালোবাসতেন।’

পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি বলেন, ‘পীর হাবিব ভাই যা বিশ্বাস করতেন তাই লিখতেন, তাই বলতেন। তিনি স্পষ্টবাদী ছিলেন। তিনি কখনো বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার ক্ষেত্রে কোন আপোষ করেননি। সাংবাদিকতা পেশাকে তিনি ইবাদত মনে করতেন। তিনি সিলেটের মানুষকে হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসতেন। তার জীবনের শেষ লেখাটিও ছিল সিলেট নিয়ে।’

স্মৃতিচারণ শেষে পীর হাবিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ অর্পন করা হয়। যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় তার মধ্যে ছিলেন- সিলেট জেলা প্রেসক্লাব, সিলেট প্রেসক্লাব, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন-ইমজা, সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়ন, সিলেট ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্রতিদিন সিলেট অফিস, দৈনিক যুগান্তর সিলেট অফিস, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র, সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, সিলেট জেলা ও মহানগর জাসদ, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতি, সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থা, সিলেট জেলা ও মহানগর যুবলীগ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট ক্লাব, সিলেট স্টেশন ক্লাব, টিলাগড় ক্লাব, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, যুক্তরাজ্য জাসদ, ইনোভেটর, দেশ ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য, হৃদয়ে একাত্তর, বঙ্গবন্ধু লেখক ফোরাম, গোবিন্দগঞ্জ আবদুল হক স্মৃতি কলেজ, আমরা মুক্তযোদ্ধা সন্তান, জগন্নাথপুর সমিতি, সুনামগঞ্জ সমিতি, সিলেটভিউটোয়েন্টিফোরডটকম, বাংলাভিউ, বাধন সাহিত্য সংস্থা, আহ্বান সাংস্কৃতিক সংগঠন, গণমাধ্যম কমিশন, ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদ, বাংলাদেশ শহিদ স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বন্ধু এক্সপ্রেস সুনামগঞ্জ।

একঘন্টা সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদমিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাত ১১টায় মরদেহবাহী এ্যাম্বুলেন্সটি সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন