মুক্তিযোদ্ধা সনদ লাভ করায় গণতন্ত্রী পার্টির সংবর্ধনা
মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের
২৬ হাজার গেরিলার নাম অন্তর্ভূক্ত করুন
—–বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দুলন
স্টাফ রিপোর্টারঃ আজীবন সংগ্রামী, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল রাজনীতিবিদ, সিলেটের কৃতীসন্তান, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আরশ আলী বলেছেন, বাঙালির জাতীয় জীবনে মহান মুক্তিযুদ্ধ এক অনন্য অধ্যায়। মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তি ছাড়া এই গণসংগ্রামে সমগ্র জাতি অংশ নিয়েছে। আমিও তাঁদের একজন। প্রবাসে থেকেও চেষ্টা করেছি জাতির জন্য, দেশের স্বাধীনতার জন্য কিছু ভূমিকা রাখতে। কিন্তু আমি কোন প্রশংসা, পদ-পদবী বা কোন কিছুর প্রত্যাশায় মুক্তিসংগ্রামে অংশ নেইনি। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে প্রবাসে আমার ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার আমাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে। সরকারকে অভিনন্দন। আর আপনারা যারা আজকের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন, অনুষ্ঠানে এসে সমৃদ্ধ করেছেন, সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
গতকাল (১০ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরির জিন্দাবাজারস্থ নজরুল একাডেমি মিলনায়তনে সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্প্রতি ‘৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখায় ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আরশ আলীকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’র স্বীকৃতি প্রদান উপলক্ষে গণতন্ত্রী পার্টি সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার পক্ষ থেকে তাঁকে দেয়া সংবর্ধনার জবাবে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে তিনি একথাগুলো বলেন।
গণতন্ত্রী পার্টির জেলা সভাপতি মোঃ আরিফ মিয়ার সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলজার আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা, এ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দুলন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, এ্যাডভোকেট গাজী এনায়েতুর রহমান। শুরুত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্টির সিলেট মহানগর শাখার আহবায়ক মাছুম আহমদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড ধীরেন সিংহ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় নেত্রী এ্যাডভোকেট মায়া ভৌমিক, সিলেট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট ইইউ শহীদুল ইসলাম শাহীন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি কমরেড সিকন্দর আলী, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সমন্বয়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আব্দুল আজিজ ময়না, সিপিবি সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড খায়রুল ইসলাম, জেলা বাসদ নেতা কমরেড জাফর আহমদ, সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা শাখার সংগঠক কমরেড সুশান্ত সিংহ, বিশিষ্ট কলামিস্ট, ব্যাংকার বীর মুক্তিযোদ্ধা নশিন্দ্র দাস আকাশ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি আল-আজাদ, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী সিলেটের সভাপতি এনায়েত হাসান নাজ, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি সিলেটের সভাপতি অমরেন্দু শংকর ও উদীচী’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনির হেলাল। পার্টির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা শাখার অন্যতম সহ-সভাপতি আসাদ খান এবং মহানগর শাখার যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক প্রাণকান্ত দাশ। সভার শুরুতে সংবর্র্ধিত অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা হয়।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দুলন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর স্বাধীনতার প্রত্যাশা এখনও পরিপূর্ণতা পায়নি। ধর্ম ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে দেশবাসিকে মুক্ত রাখতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, বতর্মান সরকারের কাছে মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় অধ্যায় জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিপূর্ণ তালিকা এখনও স্বচ্ছ হয়নি। সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করে স্বচ্ছ তালিকা করতে হবে। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের ২৬ হাজার গেরিলার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্তির জোর দাবি জানান।
এ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দুলন সংবর্ধিত অতিথির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, প্রবাসে থেকেও আপনি নিজ কর্মগুণে বীর মুুক্তিযোদ্ধার খেতাব অর্জন করেছেন, এজন্য আপনি সত্যিই শ্রদ্ধার পাত্র। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের মতো মেধা ও একাগ্রতা নিয়ে এখন বাম, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনার ধারক, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির দলগুলোকে একই পতাকাতলে অথবা একটি প্ল্যাটফরমে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিন। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বাম-প্রগতিশীল শক্তি একীভূত হলে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ভিন্নতর হতে পারতো। কিন্তু দূর্ভাগ্য আমরা আজও ভিন্ন অবস্থানে। দেশবাসীর অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে আমাদের এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি