গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অন্য সকল বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেও জীববিজ্ঞানে ফল খারাপ হয় দিলশাত জাহান তুলির। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অনুর্ত্তীণ জীববিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তুলি প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে ফরমপূরণ ও টাকা জমা দেওয়ার পরও প্রবেশপত্র না পাওয়ায় তুলি আর পরীক্ষা দিতে পারেননি। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
তুলির পরিবারের অভিযোগ, মৌলভীবাজারের বড়লেখা সরকারি কলেজে কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা ও অবহেলায় এই ঘটনা ঘটেছে।
তুলি বড়লেখা সদর ইউনিয়নের গঙ্গারজল গ্রামের ফারুক উদ্দিনের মেয়ে।
জানা গেছে, দিলশাত জাহান তুলি ২০২১ সালে বড়লেখা সরকারি কলেজ হতে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ বছর অন্য সকল বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেও জীববিজ্ঞানে তার ফল খারাপ হয়। এর ফলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জীববিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কথা। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে ফরমপূরণ ও টাকা জমা দেওয়ার পরও তার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় তুলি পরীক্ষা দিতে পারেননি। গত ২৯ নভেম্বর তার জীববিজ্ঞান প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েও তাকে ফিরে আসতে হয়েছে। এমন ঘটনায় সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।
তুলির চাচা মুমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমার ভাতিজি এক বিষয়ের পরীক্ষার্থী। যথাসময়ে কলেজের এক শিক্ষকের কাছে ফি জমা দিয়ে সে ফরমফিলাপ করে। পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র বিতরণ শুরু হলে তুলি কলেজে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয় পরীক্ষার আগের দিন অথবা পরীক্ষার দিন সকালে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে।
‘কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতো পরীক্ষার দিন সকালে আমার এক ভাতিজাসহ তুলি প্রবেশপত্র আনতে কলেজে গেলে অধ্যক্ষ জাহেদ আহমদ বলেন, ‘তুলির কোনো ফরমফিলাপই হয়নি। প্রবেশপত্র আসবে কীভাবে।’
‘আমার ভাতিজা তখন কলেজ অধ্যক্ষকে বলে আপনারা জানিয়েছিলেন পরীক্ষার দিন সকালে প্রবেশপত্র নিতে। কিন্তু এখন ভিন্ন কথা বলছেন।’ নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ফরম ফিলাপ করার পরও প্রবেশপত্র না আসার কারণটা কি? জানতে চাইতেই অধ্যক্ষ জাহেদ আহমদ ভাতিজার সাথে খারাপ আচরণ করে কলেজ থেকে তাকে তাড়িয়ে দেন।
বড়লেখা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহেদ আহমদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রবেশপত্র বিতরণের সময় ওই ছাত্রী যোগাযোগ করেনি। তখন প্রবেশপত্র না আসার বিষয়টি অবগত করলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তার (তুলির) চাচা যোগাযোগ করেছিলেন, তাকে কলেজে আসতে বলেছি। কেন ফরম ফিলাপ হয়নি আলোচনা করলে বুঝা যাবে।’
কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, ‘বিষয়টি জানতাম না। কেউ অভিযোগও করেনি। এখন জেনেছি। তদন্ত করে বিষয়টি দেখবো।’
প্রসঙ্গত, বড়লেখা সরকারি কলেজের চরম খামখেয়ালিপনা ও অবহেলার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভুলে এইচএসসি’র ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ২৩০ জন শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সমন্বিত উপবৃত্তি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।