যুগভেরী ডেস্ক ::: রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত মকবুল হোসেন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি জুতার নকশার কাজ করতেন। তিনি কাজের জন্যে বের হয়েছিলেন। কীভাবে নয়াপল্টনে গেলেন সেটাও জানে না তার পরিবার।
বুধবার বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের সময় গুলিতে আহত হন ৪৩ বছর বয়সী মকবুল হোসেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর হাসপাতালে ছুটে যান মকবুলের স্বজনেরা।
মকবুল হোসেনের স্ত্রী জানিয়েছেন, ১০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল। তাদের নয় বছরের একটি মেয়েসন্তান রয়েছে। জুতার নকশার কাজ করতেন মকবুল হোসেন। ছোটখাটো এই ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। তার সঙ্গে কাজ করতেন স্ত্রীও। মার্কেট তাগাদায় সকালে বের হয়েছিলেন তিনি। এই ব্যবসার কাজেই সাভার যাওয়ার কথা ছিল তার।
মকবুলের বড় ভাই আবদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মিরপুর বাউনিয়াবাঁধ এলাকায় থাকি। আমি যত দূর জানি, মকবুল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে কীভাবে নয়াপল্টনে এল, তা বুঝতে পারছি না।
পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা যায়, কারখানার পণ্য কিনতে স্ত্রীর বড় বোনের কাছ থেকে এক হাজার টাকা ধার করেছিলেন মকবুল।
মকবুলের বাবার নাম আবদুস সামাদ। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের কাদিমচর। অভাবের সংসারে ভাগ্য ফেরানোর আশায় ঢাকায় আসেন তিনি। থাকতেন ভাষানটেক বস্তিতে। রিকশা চালাতেন তিনি। মকবুলের জন্মও ভাষানটেকে। তার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শিখে চাকরি করবেন। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার পর লেখাপড়ায় ইতি টানতে হয় মকবুলের। পরে কাজ নেন একটি পোশাক কারখানায়। ১৫ বছর আগে জুতার নকশার কাজ শেখেন তিনি। ১০ বছর আগে বিয়ে করেন হালিমাকে। দুজন মিরপুরের বাউনিয়াবাঁধের নিউ শেড কলোনিতে ঘর ভাড়া করে থাকেন। বাসার কাছে একটা ঘর ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী মিলে শুরু করেন জুতার চামড়ার ওপরে নকশার কাজ। এই কাজ করে যে আয়, তা দিয়ে কোনোরকম খেয়ে–পরে থাকতেন। নয় বছর আগে একমাত্র সন্তান মিথিলার জন্ম হয়।