যুগভেরী ডেস্ক ::: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় এনজিওকর্মী চম্পা চাকমাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি মো. এনামুল হক এনামকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। এনাম সিলেটের জৈন্তাপুরে আত্মগোপনে ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত মো. এনামুল হক (২৭), রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের উত্তর পারুয়া গ্রামের মো. নুরুজ্জামানের ছেলে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-০৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি- রাঙ্গুনিয়ায় প্রকাশ্যে এনজিও কর্মী চম্পা চাকমার হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. এনামুল হক গ্রেফতার এড়াতে সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানার আসামপুর এলাকায় আত্মগোপনে রয়েছে। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে এনামকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনাম হত্যার করার কথা স্বীকার করেছেন।
কারণ হিসেবে সে জানিয়েছে, তার মা ও বোন বেসরকারি মানবিক উন্নয়ন সংস্থা পদক্ষেপ থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নেয় যার ৩০ হাজার টাকার মত বাকি ছিল। যেটা তোলার জন্য এনজিও থেকে ৮ জন কর্মকর্তা তার বোনের বাসায় যেতে চেয়েছিল।
তার ভগ্নিপতি যেহেতু বিদেশে থাকে। তাই তার মান সম্মানের ভয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটার দিকে চাকু নিয়ে প্রথমে চম্পাকে হুমকি দেয় এবং একপর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে গলায় ছুরিকাঘাত করে। হত্যার পর পাহাড়ি বনে একদিন আত্মগোপন করে, সেখান থেকে রাঙামাটি, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা, চকবাজার এলাকা, ঢাকার পোস্তাগালা এবং সর্বশেষ সিলেটের জৈন্তাপুর চলে যায়। জৈন্তাপুরে সে দৈনিক ২০০ টাকা বেতনে হোটেলে কাজ শুরু করে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ৫ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে অফিসে কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে সহকর্মী সপ্তর্ষী চাকমাসহ বের হয়েছিলেন ওই এনজিও কর্মী। সেখানে আগে থেকে দাঁড়িয়েছিল ঘাতক এনাম। ঋণের কিস্তি দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে এনাম পেছন থেকে চম্পা চাকমার গলায় ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় একইদিন রাতে নিহত চম্পা চাকমার বোন জামাই সোহেল চাকমা বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মো. এনামুল হককে আসামি করা হয়। চম্পা চাকমা রাঙামাটির বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিময় চাকমার মেয়ে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পদক্ষেপ লালানগর শাখায় কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘাতক এনাম তার বোনের মাধ্যমে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলো। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই ঋণের একটি কিস্তি দেওয়ার কথা থাকলেও সে পরিশোধ করতে পারেনি। চম্পা ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য বার বার তাগাদা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এনাম ছুরিকাঘাত করেছিলেন।