• ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

গোয়াইনঘাটে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অ-কৃষি বন্দোবস্ত : বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

Daily Jugabheri
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪
গোয়াইনঘাটে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অ-কৃষি বন্দোবস্ত : বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক,গোয়াইনঘাটঃ
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অ-কৃষি ভূমিকে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে কৃষি ভূমি হিসাবে বন্দোবস্ত নিয়েছেন নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের আঙ্গারজুর মাঝপাড়া গ্রামের মোঃ মুহিবুর রহমানের স্ত্রী খোশতেরা বেগম। নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের আঙ্গারজুর মৌজার- জে এল নং- এস এ ২০০, বি এস ১৫৮, বি এস খতিয়ান নং- ০১, বর্তমান নামজারী খতিয়ান নং- ১০১১ এস্ এ দাগ নং- ৩৮৮, বি এস দাগ নং- ৫৮০, শ্রেণি- লায়েক পতিত, এরিয়া ৭৬.০০ একর। মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে নেয়া বন্দোবস্ত বাতিলের দাবিতে ১৩ ফেব্রুয়ারী দুপুরে সরেজমিনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন। এসময় মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বি আব্দুস সোবহান, নুরুজ্জামান, মুরাদ আলী, আজমুল, সুনা মিয়া, সিরাজ উদ্দিন, মোঃ আলম মিয়া, সুহেল আহমদ, মোঃ জালাল মিয়া, পারভেজ আহমদ, মোঃ বাবুল মিয়া, মোঃ জসিম উদ্দিন, মোঃ জলিল মিয়া, মোঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী, মোঃ জুয়েল আহমদ, আব্দুস ছোবহান, মোছাঃ রাবেয়া খাতুন বলেন, তপশীল বর্ণিত ভূমি বাংলাদেশ সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক, সিলেট নামে আঙ্গারজুর মৌজার ১ নং খতিয়ানে এস এ ৩৮৮ নং এবং বি এস ৫৮০নং দাগের লায়েক পতিত রকম ভূমি। উক্ত ভূমিতে দরখাস্তকারীগণ সহ আমাদের গ্রামরে অধিবাসীগণ গরু, মহিষ চরাইয়া এবং গ্রামের ছেলে মেয়েরা খেলাধুলা করিয়া এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বাদীগন এবং আব্দুল খালিক চৌধুরী গং পিতা- মৃত সৈয়দ আলী চৌধুরী তাদের বাড়ি সংলগ্ন জমিতে গাছ বৃক্ষ রোপন করিয়া বিবাদীসহ সকলের জাতস্বারে বাদীপক্ষ ও সর্বসাধারণ ভোগ ব্যবহার করিয়া আসিতেছেন। অকৃষি ভুমি হওয়ায় লায়েক পতিত রকম ভূমি হিসাবে রেকর্ড বিদ্যমান থাকা স্বত্বেও বিবাদীগন মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রায় নিয়া কৃষি কাজের জন্য কৃষি খাস জমি হিসাবে শ্রেণি পরিবর্তন না করিয়া বন্দোবস্তের অযোগ্য এবং সর্বসাধারণের যুগ-যুগ ধরে ব্যবহার্য্য। উক্ত ভূমি বন্দোবস্ত নিয়া জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। কৃষি খাস জমি হিসাবে বন্দোবস্তের যোগ্য নহে এবং বিবাদীদের দ্বারা চাষাবাদ করিয়া ভোগ ব্যবহারে কখনও উক্ত ভূমি ছিল না। কিংবা বর্তমানেও নহে। বরং বাদীগণের এবং আব্দুল খালিক চৌধুরী গংদের বাড়ি সংলগ্ন উক্ত ভুমি হওয়ায় তাদের চলাচল ও গরু, বাছুর চরানুর আবশ্যকীয়তার কারণে বাদীগণ ও ভূমি সংলগ্ন পরিবারগন বংশ পরমপরায় উক্ত ভুমির ভোগ ব্যবহার সংরক্ষণ করিয়া আসিতেছেন। সম্প্রতি আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারি যে নিম্ন তপশীল বর্ণিত এসএ ৩৮৮ বিএস ৫৮০ নং দাগে ০.৭৬ একর ভূমি অত্র গ্রামের স্বচ্ছল ব্যক্তি মোঃ মুহিবুর রহমান পিতা মৃত: মদরিছ আলী এবং তার স্ত্রী মোছাঃ খোশতেরা বেগম মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে L.S.L Case নং ২১০/২০০৮-০৯ ১৭/২০০৮-০৯ মূলে স্থায়ী লিজ প্রাপ্ত হইয়াছেন। পরবর্তীতে আমরা জেলা সদর মহাফেজ খানায় তালাশ করিয়া স্থায়ী লিজ কবুলিয়তনামার জাবেদা নকলের আবেদন করিয়া জাবেদা নকল উত্তোলণ করিয়া অবগত হই যে মোঃ মুহিবুর রহমান, মোছাঃ খোশতেরা বেগম গোয়াইনঘাট সাব-রেজি: অফিসে বিগত ৩০/০৬/২০০৯ইং তারিখের সম্পাদিত রেজি:কৃত স্থায়ী লিজ কবুলিয়তনামা মূলে এসএ ৩৮৮ নং বিএস ৫৮০ দাগে ০.৭৬ একর ভূমি, ভূমিহীন গণ্যে স্থায়ী লিজ বন্দোবস্ত প্রাপ্ত হইয়াছেন। বিবাদীদের কৃষি খাস জমি বলিয়া মিথ্যা তথ্য দিয়া সরকারি ১ নং খতিয়ানে লায়েক পতিত রকম অকৃষি ভূমিকে কৃষি কাজের জন্য বন্দোবস্ত নেওয়া সরকারি নীতিমালা এবং কবুলিয়তের ৪নং ৮নং, ৯নং ও ১২নং এবং বিশেষ ভাবে ২০ ও ২১ নং শর্তাবলী লংঘন করিয়া বিবাদী প্রতারণা এবং মিথ্যার আশ্রায় নিয়া অকৃষি লায়েক পতিত রকম ভূমি বন্দোবস্ত গ্রহণ করিয়া বাদী পক্ষসহ সর্বসাধারণের মারাত্মক ক্ষতি সাধনে লিপ্ত হয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে মোঃ মুহিবুর রহমান এবং মোছাঃ খোশতেরা বেগম স্বচ্ছল ব্যক্তি। তাদের নিজ নামে বিভিন্ন খতিয়ানে ভূমি এবং বর্তমানে তাদের পাকা ঘরবাড়ি রহিয়াছে। প্রকৃত তথ্য গোপন করে ছল ছাতুরির আশ্রয় নিয়ে ভূমিহীন সেজে স্থায়ী লিজ বন্দোবস্ত প্রাপ্ত হইয়াছেন। মোঃ মুহিবুর রহমান ভূমিহীন নহে। মোঃ মুহিবুর রহমানের পিতা মৃত: মদরিছ আলীর নামে আঙ্গারজুর মৌজার বিএস ৫৫০ নং খতিয়ানে ২৫৬ খতিয়ানে আমন রকম ৬৯.১০ একর এবং ২৯৫ নং দাগে আমন রকম ২৪.০০ একর ভূমি। খতিয়ান নং ৫৫১ বি এস দাগ নং- ২৪০ আমন রকম ২০.০০ শতক ৫৭২ ও ৫৭৫ দাগে বাড়ি রকম ভূমি রয়েছে। বর্তমানে তাদের দলিল মূলে ক্রয়কৃত বসতবাড়ি দাগ নং- ৫৭০ সহ অপরাপর ভূমির মালিক রয়েছে। বন্দোবস্ত প্রাপ্ত কবুলিয়তের ২০ নং দফায় সুপষ্ট ভাবে উল্লেখ রহিয়াছে যে, ভূমি হীনদের লিজ বন্দোবস্ত নামা দরখাস্তে যদি পরবর্তীতে প্রকাশ পায় যে দরখাস্তে বর্ণিত আবেদনে কোন বিবরণ অসত্য ছিল। তবে বন্দোবস্তকৃত ভূমি সরকার বাজেয়াপ্ত করিতে পারিবেন। ২১ নং দফায় বর্ণিত রহিয়াছে যে, যদি আমরা বিবাদীগণ উল্লেখিত শর্তাবলীর কোনটি ভঙ্গ করি। তবে মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় এই বন্দোবস্ত রদ করিয়া জমি খাস করিতে পারিবেন। বিবাদীগণ কখনও উক্ত ভূমির দখলে না থাকার কারণে বন্দোবস্তের বিষয়টি গোপন রাখার স্বার্থে কবুলিয়তের ৪নং শর্তানুযায়ী বন্দোবস্তের পরে সরকারি আমিন দ্বারা বাধ্যতামূলক ভাবে জমির সীমানা পরিষ্কার করতঃ সীমানার চিহ্ন স্থাপন করিয়া সরজমিনে বন্দোবস্ত কার্যকরি করাতে না পারায় তাহা বাতিল যোগ্য। বিবাদী মিথ্যা তথ্য ও গোমড় পাস হওয়ার ভয়ে কখনও কোন অফিসার দ্বারা সরেজমিন পরিদর্শন করায় নাই। কবুলিয়তের ১২নং শর্তানুয়ী বন্দোবস্ত গ্রহণকারীগণ প্রতি শ্রুতি দিয়েছেন যে, যদি ন্যায্য ও উপযুক্ত কারণ ব্যতীত আমরা সমগ্রহ জমি বা উহার কোন অংশ একাধারে গোটা এক বছর আবাদ করিতে না পারি তাহাহইলে জেলা প্রশাসক মহোদয় উক্ত জমি খাস করিতে পারিবেন। বিবাদীগন কোন কালেও উক্ত ভূমিতে কৃষি কাজ কিংবা অন্য কোন ভাবে আবাদ করিতে বা দখল করিতে না পারায় ১২নং শর্তানুযায়ী মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় উক্ত জমির বন্দোবস্ত বাতিল করিয়া জমি খাস করিতে পারিবেন। মোঃ মুহিবুর রহমান ও মোছাঃ খোশতেরা বেগম মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করিয়াছেন বিধায় অত্র কবুলিয়তনামা দলিল বাতিল যোগ্য। অত্র কবুলিয়তনামা দলিল বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাইতেছি। বক্তারা বলেন উক্ত বন্দোবস্তো দলিলটি বাতিলের জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসক,গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার ভুমি মহোদয়ের কাছে আবেদন করিয়াছেন। এদিকে আবেদনের প্রেক্ষীতে সালুটিকর ইউনিয়ন (ভুমি)সহকারী কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন