নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট নগরীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সোহেল এন্টারপ্রাইজ এন্ড কন্সট্রাকশন ফার্মের (ঠিকানা শুভেচ্ছা ১০ পশ্চিম আম্বরখানা, সিলেট সুনামগঞ্জ রোড) সত্তাধিকারী সোহেল আহমদ মব জাস্টিসের শিকার হয়েছেন। তার বাসায় মৌলবাদি সন্ত্রাসীরা হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
জানা যায়, নগরীর আম্বরখানা শুভেচ্ছা ১০ নিবাসী ইছহাক আহমদের ছেলে সিলেট নগরীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সদস্য সোহেল আহমদের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে সব কিছু জ্বালিয়ে দিয়েছে মৌলবাদী দুর্বৃত্তরা। গত ৫ আগষ্ট বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ৭০/৮০ জন মৌলবাদী দুর্বৃত্তরা দেশিয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে নারায়ে তাকবির আল্লাহ আকবর শ্লোগান দিয়ে ব্যবসায়ী সোহেল আহমদের বাসার গেইট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। তারা এসময় সোহেল আহমদকে প্রাণে হত্যার জন্য খুঁজতে থাকে। কিন্তু তাকে না পেয়ে বাসায় ভাঙচুর ও লুটপাট করতে থাকে। সন্ত্রাসীরা এসময় বাসার আলমারি ও ড্রয়ার ভেঙে ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার, ব্যবসার নগদ ১০ লাখ টাকা ও বিদেশি ডলার পাউন্ডসহ মূল্যবান সামগ্রী লুটপাট করে। এরপর বাসায় ব্যাপক ভাঙচুর করে বাসার মহিলাদের মারধর করে তারা। এক পর্যায়ে মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী সোহেল আহমদকে মারার জন্য খুঁজতে থাকে কিন্তু তাকে না পেয়ে বাসায় আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় তিন ঘন্টা ধরে চলা আগুনে বাসার গ্যারেজে থাকা ৩৫ লাখ টাকা দামের গাড়ী ও ৫ লাখ টাকা দামের মোটরসাইকেলসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
জানা যায় গত প্রায় ৩/৪ বছর থেকে মৌলবাদি সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী সোহেল আহমদের কাছে ২, ০০০০০ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। এক পর্যায়ে তিনি তাদের অব্যাহত হুমকী ধামকিতে অনেকটা বাধ্য হয়ে তাদের ৫০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু এর পরও তারা তার কাছে চাদা চাইতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি ঘটনাটি পুলিশ কে জানাতে চাইলে সন্ত্রাসীরা এই বলে হুমকী দেয় যে এ নিয়ে কোনো কিছু পুলিশ কে জানলে তারা তাকে প্রানে মেরে ফেলবে। পরে তিনি তাদের চাদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে এই হামলা লুটপাট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগর ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এর আগে সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী সোহেল আহমদের উপর বেশ কয়েকবার হামলার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে জীবনের শঙ্কায় এক পর্যায়ে সোহেল আহমদ ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর দেশ ছেড়ে কানাডায় পালিয়ে যান।
এদিকে, ব্যবসায়ী সোহেল আহমদের বাসায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সোহেল আহমদের পিতা মো. ইছহাক আহমদ বাদি হয়ে এসএমপি এয়ারপোর্ট থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। জিডি নং ২২১ তাং ০৫/০৯/২০২৪। অপরদিকে এ ঘটনার পর সোহেল আহমদের ছোট ভাই ইলিয়াছ আহমদ জুয়েলকে হত্যা করার জন্য সন্ত্রাসীরা খুঁজছে। গত কিছুদিন থেকে তারও কোনো খুঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিও জীবনের শঙ্কায় হয়তো আত্মগোপনে আছেন কিংবা সন্ত্রাসীরা তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করতে পারে। ব্যবসায়ী সোহেল আহমদ এর পিতা ইছহাক আহমদ অভিযোগ করেছেন- মব জাস্টিসে আমার বাড়ি ঘরসহ সবকিছু জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন দুর্বৃত্তরা আমার ছেলেদের হত্যার জন্য বাসায় অস্ত্র-শস্ত্রসহকারে এসে খুঁজে যাচ্ছে। তাদের না পেয়ে আমাকে হত্যার হুমকী দিচ্ছে।। তিনি তার এবং তার পরিবার ও তার ছেলে ব্যবসায়ী সোহেল আহমদ ও ইলিয়াছ আহমদ জুয়েলের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববাসীসহ হিউম্যান রাইটস এর সহযোগিতা চেয়েছেন। সন্ত্রাসীদের হামলার সময় সোহেল আহমদের বৃদ্ধ পিতা ইছহাক আহমদ অসুস্থ্য অবস্থায় বিচানায় শয্যাসাযি ছিলেন। পাড়া প্রতিবেশিরা ঘটনার পর এগিয়ে এসে তাকে উদ্বার করে নিয়ে যান। এই হামলায় তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। হামলার পর সন্ত্রাসীরা তার বাসায় এসে এসব ঘটনা নিয়ে কোনো মামলা কিংবা কোনো মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ না করার জন্য হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা বলে গেছে যদি মামলা করা হয়, তাহলে পরিনতি হবে আরও ভয়াবহ। এ নিয়ে সোহেল আহমদের বৃদ্ব পিতা ও তার ক্যান্সার আক্রান্ত বোন সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা চরম আতংকের মধ্যে জীবন যাপন করছেন। এমনকি তারা বর্তমানে তাদের বাড়ি ঘর জায়গা জমি দখলের চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর সাংবাদিক সহ সমাজের বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ ঘটনা স্থান পরিদর্শন করেছেন। তারা এমন লোমহর্ষক ও মর্মান্তিক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন তাদের জীবন দশায় এমন ঘটনা দেকেননি এমনকি নিকট অতীতে এরকম লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেনি। তারা এ ঘটনার পিছনে যে বা যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান।