
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারে প্রবাসী দেওয়ান আহমদ মুসান্নার মৎস্যখামার দখলের উদ্দেশ্যে তার চাচাতো ভাই দেওয়ান আদনান ফারুক হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে রাজনগরের কামারচাক এলাকায় দেওয়ান মৎস্য খামারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল ৪টার দিকে মৌলভীবাজার রাজনগর উপজেলায় কামারচাক গ্রামে দেওয়ান মৎস্য খামারে হামলাকারীরা ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে। দেওয়ান আহমদ মুসান্নার চাচাতো ভাই দেওয়ান আদনান ফারুকের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে খামারের ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় সন্ত্রাসীরা প্রহরীকে হুমকি ধামকি দেয় এবং খামারে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
খামারের প্রহরী জানান, সন্ত্রাসীরা খামারে ঢুকে দেওয়ান আহমদ মুসান্নাকে খুঁজতে থাকে। এসময় প্রহরী তাদেরকে বাধা দিলে তারা সারা খামারজুড়ে তছনছ করে এবং অকথ্য ভাষায় দেওয়ান আহমদ মুসান্নাকে গালিগালাজ করে। এতে প্রহরী প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধামকি দেয় এবং খামারটি দেওয়ান আদনান ফারুকের বলে দাবী করে। যদি দেওয়ান আহমদ মুসান্না এ খামারে আসে তবে তাকে প্রাণে হত্যা করবে, খামারে আগুন লাগিয়ে দিবে বলে ধামকি দিয়ে যায় তারা।
দেওয়ান আহমদ মুসান্নার পিতা দেওয়ান পারওয়াজ আহমদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে তার ভাই দেওয়ান বাবুল আহমদ চৌধুরীর সাথে বিরোধ রয়েছে। দেওয়ান মৎস্য খামারটি তার পুত্র দেওয়ান আহমদ মুসান্না দেশে থাকতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তখন থেকে এ খামারটি দখলে নেয়ার জন্য তার ভাতিজা দেওয়ান আদনান ফারুক নানা পায়তারা করে আসছে। এতে তার পুত্র দেওয়ান আহমদ মুসান্নার সাথে তার ভাতিজার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জের ধরে দেওয়ান আদনান ফারুক তার পুত্র দেওয়ান আহমদ মুসান্নার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করে। প্রাণ বাচাতে দেওয়ান আহমদ মুসান্না দেশ ছেড়ে চলে যায়। তারপরও পূর্ব বিরোধের জের ধরে মৎস্য খামারটি দখলে নিতে তার ভাতিজা নানা ধরনের নির্যাতন করে আসছে। দেওয়ান আদনান ফারুক এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে চায় না। দেওয়ান আহমদ মুসান্নাকে পেলে প্রাণে হত্যা করতেও তারা দ্বিধাবোধ করবে না।
তিনি আরও অভিযোগ করেন. এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ উল্টো ধামকি দিয়ে বলে, তোর পুত্র মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী। আগে তোর পুত্রকে আমার হাতে তুলে দে। নইলে তোদের উচিত শিক্ষা দিব। তিনি বলেন, পুলিশ তার সন্ত্রাসী ভাতিজা দেওয়ান আদনান ফারুকের পক্ষ নিয়ে কাজ করছে। তার পুত্র দেওয়ান আহমদ মুসান্নাকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য পরিবারের সদস্যদের উপর নানা ধরনের নির্যাতন করে যাচ্ছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, দেওয়ান আহমদ মুসান্না আদালতের ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী। তাকে আটক করার জন্য সরকারের উচ্চ মহলের চাপ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সে পলাতক রয়েছে। গতকাল তার মালিকানাধীন খামারে সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি। কে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে দেওয়ান আহমদ মুসান্নাকে আটক করতে সম্ভাব্য সব জায়গায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’